বাংলাদেশ
ঘটনাবহুল ম্যাচে ব্রাজিলের পয়েন্ট ভাগাভাগি
ম্যাচের শুরুতেই ব্রাজিলের গোল, পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুই লাল কার্ড, ৩২ ফাউল ও শেষদিকে ভিএআরে গোল হজমের মধ্যদিয়ে ল্যাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পয়েন্ট হারালো ব্রাজিল। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ৮৫০ মিটার উঁচুতে ইকুয়েডরের রাজধানী কিটোয় অনুষ্ঠিত ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ম্যাচের ৬ মিনিটেই ব্রাজিলকে এগিয়ে নেন রিয়াল মাদ্রিদের কাসেমিরো। ইকুয়েডরের হয়ে ৭৫ মিনিটে গোল শোধ দেন ফেলিক্স টরেস।
এ ম্যাচে ফলাফল নির্ধারণে ভিএআরের ভূমিকা হয়ে উঠে অনেক বড়। এই প্রযুক্তির ব্যবহারেই এসেছে দুই লাল কার্ড। ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন দু’বার বহিষ্কার হলেও ভিএআরে পাল্টে যায় সিদ্ধান্ত। একইভাবে ইকুয়েডরের পক্ষে দুটি পেনাল্টির সিদ্ধান্তও উল্টে যায়। সব মিলিয়ে ম্যাচটি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হওয়ার উপলক্ষ আছে ঢের।
কিটোয় ম্যাচের ৫ মিনিটেই অধিনায়ক ক্যাসেমিরোর কল্যাণে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ফিলিপ কৌতিনহোর কর্নার ইকুয়েডরের রক্ষণভাগ ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে পুনরায় বল পান কৌতিনহো। সেখান থেকে দূরের পোস্ট উঁচু করে বল বাড়ান তিনি। মাথেউস কুইয়ার হেড গোলমুখে ডিফেন্ডার পিয়েরো ইনকাপিয়ের গায়ে লেগে বল গোললাইনের সামনে পড়লে এক টোকায় বল জালে প্রবেশ করার অধিনায়ক ক্যাসেমিরো।
এর দশ মিনিট পর বাজে ট্যাকেলের দায়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন স্বাগতিক গোলরক্ষক আলেক্সেন্ডার ডমিঙ্গুয়েজ। পোস্ট ছেড়ে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তার নেয়া শট বলে না লেগে ব্রাজিলের খেলোয়াড়ের গলায় লাগলে ভিএআরের সাহায্যে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়া করেন রেফারি। ৫ মিনিটের মধ্যে ডিফেন্ডার এমারসনের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড লাল কার্ডে পরিণত হলে দশ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাজিলও। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই ইকুয়েডরের মোইজেজ কাইসেদোকে বাজে ফাউল করে প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন তিনি।
২৬ মিনিটে ৯ জনের দলে পরিণত হতে যাচ্ছিল ব্রাজিল। প্রতিপক্ষের পাল্টা আক্রমণ রুখতে ডি-বক্স থেকে বের হয়ে শট নেন অ্যালিসন। কিন্তু পর মুহূর্তে তার পা লাগে এনের ভ্যালেন্সিয়ার মাথায়। প্রথমে রেফারি লাল কার্ড দেখালেও দীর্ঘক্ষণ ভিএআরে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টে লিভারপুল গোলরক্ষককে হলুদ কার্ড দেন রেফারি।
দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে আবারও ভিএআরের নাটকীয়তা। ব্রাজিলের ডি-বক্সে রাফিনিয়ার চ্যালেঞ্জে ইকুয়েডরের ডিফেন্ডার পেরভিস এস্তুপিনান পড়ে গেলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে ভিএআরে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি। কিন্তু ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে সাফল্য পায় ইকুয়েডর। গনসালা প্লাতার কর্নারে হেডে গোলটি করেন ফেলিক্স তরেস। পুরো ম্যাচে গোলের উদ্দেশ্যে নেয়া ইকুয়েডরের ১০টি চেষ্টার এই একটিই লক্ষ্যে ছিল। আর ব্রাজিলের ১২ শটের ৬টি ছিল লক্ষ্যে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের বাকি সময়ে আর কোনও গোল না হলেও নাটকীয়তা কম হয়নি। অতিরিক্ত সময় পাঁচ মিনিট দিলেও তা গিয়ে ঠেকে ১২ মিনিটে। কারণ ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন পাঞ্চ করে বল ক্লিয়ার করতে গেলে স্বাগতিক মিডফিল্ডার প্রেসিয়াদোর মুখে আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে রেফারি তাকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। তবে সফরকারীদের প্রতিবাদের মুখে দীর্ঘক্ষণ ভিএআরের সাহায্য নিয়ে দুটি সিদ্ধান্তই পরিবর্তন করেন।
এ ম্যাচে জয়ের ফলে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৩১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড স্পর্শ করল ব্রাজিল। ১৯৫৪ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সময়ে নিজেরাই রেকর্ডটি গড়েছিল পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ীরা।
ল্যাতিন আমেরিকা থেকে সবার আগে কাতারের টিকেট নিশ্চিত করা ব্রাজিল ১৪ ম্যাচে ১১ জয় ও তিন ড্রয়ে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। অন্যদিকে ইকুয়েডর ১৫ ম্যাচে সাত জয় ও তিন ড্রয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে একুয়েডর। এই অঞ্চল থেকে শীর্ষ চারটি দল কাতার বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার টিকেট পাবে। পঞ্চম স্থানে থাকা দলকে খেলতে হবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে অফ।
হাসিব মোহাম্মদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ