চট্টগ্রাম
টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা বাড়ছে চট্টগ্রামে
পঞ্চম দিনের মতো ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে চট্টগ্রামে। এর ফলে জলাবদ্ধতার পরিমাণ বেড়েছে নগরের বিভিন্ন এলাকায়। হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানির নিচে রয়েছে নিম্নাঞ্চল। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফলে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে জনভোগান্তি। এদিকে বৃষ্টিতে ঘটেছে পাহাড় ধসের মতো ঘটনাও। এ বৃষ্টিপাত আরও দু’দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস।
সোমবার (৭ আগস্ট) সকালে নগরের বাকলিয়া, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, প্রবর্তক মোড়, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, ষোলশহর ও ২ নম্বর গেটসহ কোনো এলাকা হাঁটু এবং কোনো এলাকায় কোমর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার নিচু বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এর ফলে বিপুল পরিমাণ লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বের হতে পারছেন না দৈনন্দিন প্রয়োজনে। একান্ত প্রয়োজনে যারা বের হচ্ছেন তারা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, পতেঙ্গা আবহাওয়া কার্যালয়ে সোমবার সকাল ৯টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের আমবাগান এলাকায় ভোর ৬টা থেকে গেলো ২৪ ঘণ্টায় ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরকম ভারী বৃষ্টিপাত আরও দুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে, টানা বৃষ্টিপাতে সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, লোহাগাড়া, রাঙ্গুনিয়া ও সন্দ্বীপ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও রাস্তাঘাটও তলিয়ে গেছে। টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে পানির পরিমাণ। এতে করে বন্যারও আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের শঙ্কা তৈরি হওয়ায় নগরের মোট ৮০০ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করে জেলা প্রশাসন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক জানান, রোববার (৬ আগস্ট) নগরের আকবরশাহ এলাকার বিজয় নগর, ঝিল-১,২,৩ – শান্তিনগর, বেলতলীঘোনা এলাকা থেকে ৫০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া মতিঝর্ণা থেকে ৩০০ জন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার দেয়া হচ্ছে।
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করা নগরের জালালাবাদ, পশ্চিম ষোলশহর, উত্তর পাহাড়তলী, পূর্ব পাহাড়তলী, লালখান বাজার ও চকবাজার ওয়ার্ডের ৩০০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণভাবে থাকা মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ এলাকায় সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, ঝুঁকি থাকার পরও অনেকে পাহাড়ের ওপরে ও পাদদেশে বসবাস করছেন। আপনারা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান। আপনাদের জন্য খাবার ও স্বাস্থ্যসেবাসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা পানিবন্দি এলাকাগুলোতে বিতরণের জন্য ১০ হাজার মানুষের জন্য খাবার প্রস্তুত রেখেছি।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন