আন্তর্জাতিক
ব্রিটেনে রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি, তিন সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার
ব্রিটেনে রাশিয়ার পক্ষ হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একটি বড় মাপের নিরাপত্তা তদন্তের পর এদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
বুধবার (১৬ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত সবাই বুলগেরিয়ার নাগরিক এবং গেলো ফেব্রুয়ারি মাসে আটক করার পর থেকে তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক অভিপ্রায়ে ব্যবহারের জন্য পরিচয়পত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে এবং অভিযোগ করা হয়েছে যে সেগুলো জাল ছিল জেনেও তারা এসব দলিল তাদের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। এই তিনজন রুশ গুপ্তচর সংস্থার পক্ষ হয়ে কাজ করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাদের কাছ থেকে যেসব কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, বুলগেরিয়া, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, ক্রোয়েশিয়া, স্লোভেনিয়া, গ্রিস এবং চেক প্রজাতন্ত্রের পাসপোর্ট, পরিচয়পত্র এবং অন্যান্য নথি।
ব্রিটেনের সরকারি গোপনীয়তা আইনের আওতায় অপরাধের সন্দেহে গেলো ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে ছিলেন এই তিনজন। লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ব্রিটেনে বিদেশি গুপ্তচরদের খুঁজে বের করার কাজ করে তাদের। এই সংস্থার গোয়েন্দারাই ওই ব্যক্তিদের আটক করেছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে এরা হলেন- নরফোকের গ্রেট ইয়ারমাথ থেকে আটক অরলিন রুসেভ (৪৫), উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের হ্যারো এলাকা থেকে আটক বিজার জাম্বাজভ (৪১) এবং হ্যারোর একই এলাকার ক্যাট্রিন ইভানোভা (৩১)।
এদের এখন পুলিশের হেফাজতে রাখা হবে এবং পরে কোনো এক তারিখে ওল্ড বেইলির আদালতে হাজির করা হবে। এই তিনজন বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন এবং শহরের বেশ কয়েকটি এলাকার বাড়িতে বসবাস করেছেন।
রুসেভ এক সময় রাশিয়ার সাথে ব্যবসায়িক লেনদেন করেছেন। তিনি ২০০৯ সালে ব্রিটেনে আসেন এবং তিন বছর ধরে আর্থিক খাতে প্রযুক্তিগত ভূমিকায় কাজ করেন। তার অনলাইন লিঙ্কডিন প্রোফাইলে বলা হয়েছে, পরবর্তীকালে তিনি সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্সের সঙ্গে জড়িত একটি ব্যবসার মালিক ছিলেন। ওই প্রতিষ্ঠানের কাজ ছিল যোগাযোগ কিংবা ইলেকট্রনিক সিগন্যালে আড়ি পাতা।
রুসেভের বর্তমান ঠিকানা গ্রেট ইয়ারমাউথের একটি সমুদ্রতীরবর্তী গেস্টহাউস। তিনি জানিয়েছেন, একসময় বুলগেরিয়ার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। জাম্বাজভ এবং ইভানোভাকে তাদের হ্যারোর বাড়ির প্রাক্তন প্রতিবেশীরা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে জানতেন।
জাম্বাজভকে হাসপাতালের ড্রাইভার হিসেবে হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং ইভানোভা তার অনলাইন লিঙ্কডিন প্রোফাইলে নিজেকে একটি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ব্যবসায় ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এই দুজন প্রায় এক দশক আগে ব্রিটেনে আসেন এবং প্রবাসী বুলগেরিয়ানদের ব্রিটিশ সমাজের সংস্কৃতি এবং রীতিনীতির সাথে পরিচয় ঘটানোর জন্য তারা একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ওল্ড বেইলি আদালতে এই তিন আসামির বিচার হওয়ার কথা রয়েছে। তবে তারা এখনও অভিযোগ স্বীকার করে কোনো বক্তব্য দেয়নি।
ব্রিটেনের সন্ত্রাস-বিরোধী পুলিশ সম্প্রতি বিশেষভাবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে সন্দেহজনক হুমকি এবং গুপ্তচরবৃত্তির তদন্তে তাদের অনেক বেশি সময় ব্যয় করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রিটেনে রুশ গুপ্তচর তৎপরতার সাথে জড়িত বেশ কিছু ঘটনার পর এ নিয়ে তাদের উদ্বেগ বেড়েছে।
২০১৮ সালে দু’জন রুশ আততায়ী রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থার প্রাক্তন ডাবল-এজেন্ট সের্গেই স্ক্রিপাল এবং তার মেয়ে ইউলিয়াকে ব্রিটেনের সালসবারি এলাকায় বিষাক্ত নার্ভ গ্যাস নোভিচক ব্যবহার করে হত্যার প্রচেষ্টা চালায়। এর আগে ২০০৬ সালে সাবেক রুশ-গোয়েন্দা কর্মকর্তা অ্যালেকজান্ডার লিটভিনেনকো রুশ সরকারের অধীন ঘাতকদের বিষ প্রয়োগের পর লন্ডনে নিহত হন।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন