বাংলাদেশ
টিকটকের টাকা জোগাতে দুর্ধর্ষ চুরি
নেশা আর টিকটকের টাকা জোগাতে কিশোর বা উঠতি বয়সের এরা করছে চুরি। দিনের বেলা এরা রেকি করে বেড়ায়, রাতে নামে অপারেশনে। তাদের টার্গেট বাসাবাড়ি কিংবা অফিস। নগদ টাকা আর মূল্যবান জিনিসপত্র মুহূর্তেই চুরি করতে দক্ষ এরা। এমন একটি দলের চার সদস্যকে গ্রেফতারের পর গোয়েন্দারা বলছেন, রাজধানীতে এরা সবাই ভবঘুরে।
১৫ জানুয়ারি, গভীর রাত। রাজধানীর বনানীর সাত নম্বর সড়কের একটি আইটি ফার্মের অফিস। জানালার গ্রিল ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা। মিনিট পাঁচেকের চেষ্টায় সফল। একে একে প্রবেশের চেষ্টা আরও কয়েকজনের। তারাও সফল।
একেক জনের একেক রুমে ছোটাছুটি। মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে চলছে খোঁজাখুঁজি। চুরি করা হচ্ছে মূল্যবানসামগ্রী। চক্রের দুই সদস্য ব্যস্ত অন্য একটি কক্ষে। তন্ন তন্ন করে খোঁজা হচ্ছে একের পর এক ডেস্ক, ড্রয়ার। ল্যাপটপ, হেডফোন যে যা পাচ্ছে তাই চুরি করা হচ্ছে।
অবেশেষে প্রায় ৩ ঘণ্টা অভিযানের সফল সমাপ্তি। কেউ হাতে করে, কেউ ব্যাগে করে চুরি করা সামগ্রী নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। অফিস থেকে বের হয়ে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্যও ধরা পড়ে সড়কের কয়েকটি সিসি ক্যামেরায়। খুশিতে নাচতে থাকে কেউ কেউ।
এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটি নগদ টাকাসহ তাদের ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকার মূল্যবানসামগ্রী চুরি হয়ে গেছে এই মর্মে একটি মামলা করে। গোয়েন্দা পুলিশ রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে চক্রটির চার সদস্যকে। এই চারজনই সেই রাতে চুরিতে জড়িত ছিল।
চোর দলের এক সদস্য বলেন, আমরা চারজন যুক্ত হয়ে ওই বাসায় ঢুকি। ভেতরে ঢুকে ২৪টা ল্যাপটপ বের করি, কিন্তু ওখান থেকে আমরা ৪টা ল্যাপটপ আর ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসি। আর বাকি ২০টা ল্যাপটপ ওখানকার বারান্দায় রেখে আসি কারণ আমরা টাকা পেয়ে গেছিলাম তো এ কারণে আমাদের ল্যাপটপ দরকার ছিল না।
চোর দলের আরেক সদস্য বলেন, তারা ওপরে উঠেছে; আমি ওপরে উঠি নাই। আমাকে বলেছিল একটা কাজ আছে, কাজটা করলে কিছু টাকা পাবি, আমি সেই টাকার লোভে পড়ে কাজটা করছি। আমি টিকটক কিছুদিন ধরে করি।
অন্য আরেক সদস্য বলেন, জানালা খোলা দেখে আমি পরের দিন সেলাইরেন্স কিনে নিয়ে আসছি। পরে দেখি জানালার গ্লাস খোলা। পরে স্ক্রু দিয়ে জানালার গ্লাস খুলছি, এরপর ভেতরে ঢুকে আমি ১৫ হাজার টাকা নিয়েছি, লিটন ১৫ হাজার টাকা নিয়েছে, শরিফ নিয়েছে ১০ হাজার আর হৃদয় নিয়েছে ১০ হাজার টাকা।
এই চক্রের কয়েকজন আবার উঠতি টিকটকার। পুলিশ বলছে, নেশার টাকা আর টিকটকের খরচ জোগাড় করতেই এরা চুরি করে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, লাইকি ও টিকটকের মাধ্যমে তারা নাটক সিনেমা বানিয়ে থাকে। এখানে যে টাকা লাগে সেই শখের টাকা মেটানোর জন্য তারা বিভিন্ন অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রিল ভেঙে মূল্যবানসামগ্রী মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও নগদ অর্থ এগুলো ছিনতাই করে নিয়ে যায়। যারা এ চুরিগুলো করে থাকে তারা একদম ভাসমান লোক। তাদের স্থায়ী কোনো ঠিকানা নেই, জন্ম নিবন্ধন নেই, ন্যাশনাল আইডি কার্ড নেই। তাদের ধরা বেশ কষ্টসাধ্য এমনি বেশির ভাগ সময় তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে।
বাসা কিংবা অফিসের নিরাপত্তা জোরদার একই সঙ্গে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরামর্শ পুলিশের।
মুক্তা মাহমুদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ