উত্তর আমেরিকা
মেক্সিকোর পর এবার ক্যালিফোর্নিয়ায় হিলারির আঘাত
উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে তাণ্ডবের পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে আঘাত হেনেছে ক্রান্তীয় ঝড় হিলারি। মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে প্রচণ্ড বাতাস নিয়ে এই ঝড়টি আঘাত হানে এবং এর জেরে সেখানে বন্যা দেখা দেয়। এছাড়া ঝড়ের আঘাতে দেশটিতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।
সোমবার (২১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে তাণ্ডবের পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হেনেছে ঝড় হিলারি। এর আগে এটি মেক্সিকোর বাজা ক্যালিফোর্নিয়া উপদ্বীপে ঘণ্টায় ৭০ মাইল (১১৯ কিমি) বেগে আছড়ে পড়ে। সেখানে এক ব্যক্তি তার গাড়িতে করে পানির স্রোত পার হওয়ার চেষ্টার সময় মারা যান।
এছাড়া ঝড়ের জেরে সান্তা রোজালিয়া শহরে বেশ কিছু বাড়ি তলিয়ে গেছে। হিলারি অবশ্য উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তবে গত ৮৪ বছরের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রথম গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় হিসেবে আঘাত হেনেছে হিলারি।
শেষবার ১৯৩৯ সালে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচে আছড়ে পড়েছিল গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক অস্বাভাবিক আবহাওয়ার নানা ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এছাড়া মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলও প্রভাবিত হয়েছে।
বিবিসি বলছে, রোববার স্থানীয় সময় ১১টায় এ ঝড়টি মেক্সিকোর বাজা ক্যালিফোর্নিয়া উপদ্বীপের উত্তরাঞ্চলে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে বলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে। এতে সতর্ক করা হয়েছে, হিলারির কারণে মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রে ‘জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ’ বন্যার সৃষ্টি হতে পারে।
মেক্সিকোতে অবশ্য উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য ১৮ হাজার সৈন্যকে আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।
এদিকে হিলারির তাণ্ডবে মেক্সিকোতে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। ঘটনার সময় ওই ব্যক্তি তার গাড়িতে করে পানির স্রোত পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন এবং একপর্যায়ে মারা যান। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মারা যাওয়া ওই ব্যক্তি তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ওই গাড়িতে ছিলেন। অবশ্য তার পরিবার বেঁচে গেছে।
অন্যদিকে পানির স্রোত রুখতে লং বিচ এবং পাম স্প্রিংস-সহ ক্যালিফোর্নিয়াজুড়ে বাসিন্দারা বালির ব্যাগ ফেলে দিচ্ছেন। লং বিচের বাসিন্দা ইউজেনি অ্যাডলার রয়টার্সকে বলেছেন: ‘বন্যায় মানুষের কিছু সম্পত্তি হারানো এক জিনিস, কিন্তু বন্যায় মানুষ মারা যাওয়া অন্য জিনিস। এবং আমি ভয় পাচ্ছি মানুষ মারা যেতে পারে।’
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস এই ঝড়টিকে ‘আবহাওয়ার অভূতপূর্ব ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘দাবানল বা ভূমিকম্প, যেটাই হোক না কেন সংকটের প্রতিক্রিয়া জানাতে লস অ্যাঞ্জেলেসের গভীর অভিজ্ঞতা আছে। (ঝড় মোকাবিলায়) শহর প্রস্তুত।’
বিবিসি বলছে, দক্ষিণ-পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২৬ মিলিয়ন মানুষ বন্যার পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এর আগে গত শনিবার বাতাসের গতি কমে আসায় এটিকে ক্যাটাগরি-৪ থেকে ক্যাটাগরি-১ স্তরে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু এরপরও কর্মকর্তারা তাদের সতর্কতা বজায় রাখেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের কার্যালয়ের ইমার্জেন্সি সার্ভিসেসের ডিরেক্টর ন্যান্সি ওয়ার্ড বলেছেন, হিলারি গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে অঙ্গরাজ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড় হতে পারে।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কোনও ভুল করবেন না। এটি খুব, খুব বিপজ্জনক এবং শক্তিশালী ঝড়।’
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন