অন্যান্য
‘বিজিপি’ নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ
বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি (বিজিপি) নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের প্রণীত ২৮ দফার ভিত্তিতে দলটি গঠন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর চৌধুরী হলে আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
আলোচকরা জানান, এরশাদবিরোধী আন্দোলন পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনীতির চরম দৈন্যদশা দেখে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামপন্থী দলগুলোর অনেক নেতা ও নাগরিকদের সঙ্গে আলাপ করে নতুন রাজনৈতিক চেতনা জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। রাজনৈতিক উন্নতির কোনো আগ্রহ ও আকাঙ্ক্ষা খুঁজে না পেয়ে তিনি রাজনৈতিক সম্ভাবনাকে চরম দূররাবস্থায় পড়ে গেছে বলে মনে করেন। তখনই উপলব্ধি করেন যে, স্বল্প সময় ও চেষ্টায় প্রকৃত রাজনীতি সূচনা করা সম্ভব হবে না।
এ বাস্তবতায় ২০০৫ সালের শুরু থেকে নতুন রাজনীতি, নতুন রাজনৈতিক দল, জনজাগরণ ও জনআন্দোলন সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি ২৮ দফা কর্মসূচি প্রচার করতে থাকেন। এই কর্মসূচি আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামপন্থী দলগুলোর নেতা ও কর্মীদের মধ্যে প্রচার করা হয়।
সভায় দল গঠনের কারণ ও এর চিন্তা চেতনা তুলে ধরেন গণতন্ত্রী পার্টির তাত্ত্বিক নেতা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, ১৯৮০ দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনকালে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামপন্থী দলগুলোর কোনো সদর্থক রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়নি। ওই সময়ের আন্দোলনে প্রধান স্লোগান ছিল, একদফা এক দাবি, এরশাদ তুই কবে যাবি। তখন বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে মিলে সরকার গঠন করে এবং বেগম খালেদা জিয়া হন প্রধানমন্ত্রী। কোনো পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক সম্ভাব্য ছাড়া কেবল ক্ষমতা দখলের লক্ষ্য নিয়া জামায়াতের সঙ্গে মিলে সরকার গঠন করে খালেদা জিয়া ভালো কিছু করতে পারেনি। নির্বাচনের সুক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ নতুনভাবে সরকার উৎখাতের আন্দোলন চালাতে থাকে। তখন থেকে অনেকে মতপ্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ সাম্রাজ্যবাদের দ্বারা নিঃরাজনীতিকরণের, বিরাজনীতিকরণের, ডিপলিটিসাইজেশনের কার্যক্রম চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গেলো ২০ বছর ধরে বিশেষ করে ছাত্র-তরুণদের মধ্যে নতুন রাজনীতির ও নতুন রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রয়োজনবোধ প্রবল হয়ে উঠেছে। এই বাস্তবতার মধ্যেই এম এ আলী সরকারের উদ্যোগে আজকের এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। এটা নতুন সৃষ্টি, নতুন উদ্যোগ। প্রথম পর্যায়ে আমাদের চেষ্টা হবে জাতীয় জীবনে রাজনীতির গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন চেতনা সৃষ্টি এবং রাজনৈতিক চিন্তার সঙ্গে রাজনৈতিক কার্যক্রমের সংযোগ সাধন। নতুন কার্যক্রমের জন্যে নতুন রাজনৈতিক দল ও নতুন নেতৃত্ব দরকার। এসব চিন্তা-চেতনার সঙ্গে অর্থও দরকার। অনেকের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় সবই সম্ভব হবে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকার বলেন, দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে মহাক্রান্তিকাল বিরাজ করছে। বর্তমানে নিত্যপণ্যের বাজার যেভাবে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে কৃষক শ্রমিক মেহনতি সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। দেশ আজ বিশেষ কিছু ব্যক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। জাতি এ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।
এ সময় আলীম সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে সার্বজনীন উদার রাজনীতি গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
অন্যান্য
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে জামায়াত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শান্তিতে নোবেল বিজয়ী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মাদ ইউনূসকে প্রধান করে ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারের নিকট ছাত্র-জনতার অনেক প্রত্যাশা। আমরা আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবেন।’
জামায়াত আমীর বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। ছাত্র-জনতার বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরশাসক মুক্ত হয়েছে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব উপদেষ্টাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করার এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বঙ্গভবনে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মাদ ইউনূস এবং অন্যান্য উপদেষ্টাগণ শপথ নিয়েছেন। শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দ, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, প্রকৌশলী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কবি-সাহিত্যিক, লেখক, গবেষকসহ দেশের বিশিষ্ট নাগরিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
শপথ অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান (সাবেক এমপি) ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের (সাবেক এমপি), সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জনাব হামিদুর রহমান আযাদ (সাবেক এমপি), মাওলানা আবদুল হালিম ও এডভোকেট মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি জনাব মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।
জেএইচ
অন্যান্য
ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন শেষে যা বললেন জামায়াতের আমীর
কোনো বাহবা বা রাজনৈতিক ফায়দার জন্য আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির পাহারা দিচ্ছি না, মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকার জন্য এ কাজে নেমেছি। আপনাদের প্রয়োজনে জাতির প্রয়োজনে যদি কখনো জামায়াতকে অনুভব করেন সেটাই হবে আমাদের শ্রেষ্ঠ উপহার। তখন যেন প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া দিতে পারি। বলেছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের কোনো জায়গায় জামায়াতে ইসলামী বা ছাত্র সংগঠনে যারা কাজ করেন তারা যদি দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে কিছু করেন তাহলে তিনি হবেন দুর্বৃত্ত। আমাদের সুনির্দিষ্ট করে বলবেন। তখন দেখবেন আমরা কী করি, কী করব সেটাও জানবেন। আমরা সঠিক পথে থাকলে পরিবেশ ও মানুষ সাক্ষ্য দেবে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষভাবে এই পরিস্থিতিতে একটা বিষয়ে সহযোগিতা চাইতে এসেছি, ঢাকাসহ সারাদেশে আমাদের নামে, আমাদের ব্যানারে, আমাদের স্লোগান ব্যবহার করে কোনো দুর্বৃত্ত অপকর্ম করছে কি না তা জানাবেন। যদি কেউ কিছু করে এমন তথ্য জানাবেন। কোনো দুর্বৃত্তকে প্রশ্রয় দেব না, বরং সেই দুর্বৃত্তকে সমুচিত জবাব দিয়ে দেব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেন, মুহা. কামাল হোসাইন ও ড. আবদুল মান্নান প্রমুখ।
এএম/
অন্যান্য
১৩ বছর পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াত নেতারা
প্রায় ১৩ বছর ধরে বন্ধ ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়। মগবাজারের কার্যালয়ের পাশাপাশি পুরানা পল্টনে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী কার্যালয়ের দশাও ছিল একই। টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার পর পাল্টে যায় রাজনৈতিক দৃশ্যপট। স্বস্তি নেমে আসে জামায়াত-বিএনপিসহ দীর্ঘদিন কোণঠাসা হয়ে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর শিবিরে। এরইঅংশ হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজান ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। এ সময় গেটের সামনে দাঁড়িয়ে একজন উচ্চস্বরে আজান দেন। পরে মোনাজাত করা হয়।
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন