রাজশাহী
প্রভাবশালীদের দখলে পাবনার খরস্রোতা আত্রাই নদী
পাবনার বেড়া, সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলার কাশিনাথপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এক সময়ের খরস্রোতা আত্রাই নদীর দু’পাশ প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে। নদীর ওপর দিয়ে রাস্তা করে জনচলাচলের কথা বলে সেখানে কেউ কেউ মার্কেট ও দোকানপাট গড়ে তুলে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে নদীটি এখন দখলে-দূষণে দুর্গন্ধময় পরিত্যক্ত একটি সরু নালায় পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক অবৈধ স্থাপনা দখলমুক্ত করে এর প্রাণ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাড় থেকে ভরাট শুরু করলেও ধীরে ধীরে দখলদাররা ভরাট অব্যাহত রাখায় তা নদীটির মাঝ বরাবর পৌঁছে গেছে। ফলে নদীটির প্রশস্ততা কমতে কমতে তা সরু নালায় পরিণত হয়েছে। এখন দেখলে কেউ বিশ্বাসই করবে না এখানে একটি নদী ছিল।
স্থানীয়রা জানান, কাশিনাথপুর পাবনার অন্যতম প্রধান বিপণী কেন্দ্র। এখানে জায়গার দাম অনেক বেশি হওয়ায় প্রভাবশালীরা লোভ সংবরণ করতে না পেরে নদীর জায়গা ইচ্ছেমত দখলে নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তারা আরও জানান, বিগত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে বিএনপি কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধি মিলে নদীর পাড় দখল শুরু করেন। এ ধারা এখনও চলছে। এখন ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই নদী দখলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যে যেভাবে পারছেন নদীর পাড় দখলে মেতেছেন। অনেকে নদী ভরাট করে বহুতল মার্কেট ও বাড়ি নির্মাণ করে ভাড়াও দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, খুব সুক্ষ্ম কৌশলে নদীটির দখল কাজ করা হয়েছে। ২০০৪ সালের দিকে জনচলাচল সহজ করার কথা বলে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি সরকারি সহায়তায় নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ করেন। তারপর তিনি সেতুর সংযোগ সড়কের কথা বলে নদীর উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করেন। এরপর তিনি রাস্তার দু’পাশ দিয়ে গড়ে তোলেন দোকানপাট ও মার্কেট।
নদীর পাড় ঘিরে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন মালিকের সাথে কথা বললে তারা জানান, তারা শুধু দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছেন, নদী দখলের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। যারা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন দখলের দায়দায়িত্ব তাদের।
এলাকার সচেতন জনগণ বলছেন, দখলদারদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে যদি এখনই কার্যকর আইনগত ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে আত্রাই নদী পাবনার ইতিহাস থেকে মুছে যাবে।
কাশিনাথপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, আত্রাই নদীর পাড়ে কাশিনাথপুর হাটের ৭৩ শতাংশ জায়গাও দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। তাদের হিসাবে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০টি দোকান স্থাপন করা হয়েছে। তবে স্থানীয়রা জানান, অবৈধ দোকানপাট আরও অনেক বেশি।
উল্লেখ্য, আত্রাই নদী পশ্চিম বাংলা ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪০ মাইল (৩৯০ কিলোমিটার)। এটির সর্বোচ্চ গভীরতা ৯৯ ফুট (৩০ মিটার)। অতীতে এই নদীকে আত্রেই নামে ডাকা হতো এবং বাংলাদেশের মহাদেবপুরে এটির উল্লেখ রয়েছে। করতোয়া নদীর সাথে এটির সংযোগ রয়েছে। এটির উৎপত্তি পশ্চিম বাংলায় এবং এটি বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আবার ভারতে প্রবেশ করেছে। আবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ এবং বালুরঘাট ব্লকের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এটা বরেন্দ্র ভূমি অতিক্রম করে এবং চলন বিলের মধ্য দিয়ে পাবনায় প্রবাহিত।
রাজশাহী
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাবনায় সচেতনতামূলক সমাবেশ
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সকল প্রকার সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাবনায় সচেতনতামূলক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন এবং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহ্বান ও জানান। যাতে কোন অপশক্তি আবারও দেশটাকে অস্থিতিশীল তৈরি করতে না পারে তারও আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, এডওয়ার্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল, বাংলা বিভাগের শিক্ষক মাহবুব, এডওয়ার্ড কলেজের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বরকাতুল্লাহ ফাহাদ,স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সিরাজুল মনিরা,রাব্বি রুহান ও এম এইচ অনিক।
এএম/
অপরাধ
এনায়েতপুর থানায় হামলা, ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত
সিরাগঞ্জের এনায়েতপুরে থানায় হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
রোববার (৪ আগস্ট) পুলিশ সদর দপ্তর এবং রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, সন্ত্রাসী হামলায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ১৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানায় হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
এদিকে, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষে বিভিন্ন জেলায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন সহস্রাধিক।
এর মধ্যে নরসিংদীতে ৬ জন, রংপুরে ৫ জন, ফেনীতে ৫ জন, ঢাকায় ৪ জন, সিরাজগঞ্জে ৪ জন, পাবনায় ৩ জন, বগুড়ায় ৩ জন, কিশোরগঞ্জে ৩ জন, ভোলায় ৩ জন, লক্ষ্মীপুরে ৩ জন, মুন্সীগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ২ জন, সিলেটে ২ জন, ঢাকার আশুলিয়ায় একজন, বরিশালে একজন, জয়পুরহাটে একজন ও কুমিল্লায় একজন মারা গেছেন।
দেশজুড়ে
রাজশাহীতে থানা ও ভূমি অফিসে হামলা-অগ্নিসংযোগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চলমান অসহযোগ কর্মসূচিতে রাজশাহী নগরীর মোহনপুর থানা, আওয়ামী লীগের অফিস, ভূমি অফিস ও একটি মার্কেটে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
তেমন কোনো অপ্রিতিকর ঘটনা না থাকলেও জেলার মোহনপুরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আজ রোববার রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোহনপুর উপজেলা সদরে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে মোহরপুর পুরো উপজেলা নিয়ন্ত্রণ নেন। এসময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে ওই এলাকায় চরম আতঙ্ক দেখা যায়। পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মোহনপুর থানায় হামলা করার পর পাশেই উপজেলা ভুমি অফিসে হামলা চালায়। এসময় সহকারী কমিশনারের (ভুমি) গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এছাড়াও ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় থানার সামনের মার্কেটেও। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন