অন্যান্য
ড. ইউনূসকে নিয়ে বিদেশিদের খোলা চিঠি আইনের শাসনের হুমকি : ১৪ দল
বাংলাদেশের আদালতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বেআইনি ও অযৌক্তিক দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট দেশি-বিদেশি কিছু ব্যক্তির খোলা চিঠির ঘটনাকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় হুমকি বলে মনে করেছেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা।
আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস সই করা এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
১৪ দল নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এ দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন দ্বারা সকল ধরনের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যে কোনো বিচারিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করার এ ধরনের অপতৎপরতা পবিত্র সংবিধান ও আইনের পরিপন্থি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আইনের আশ্রয় গ্রহণের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সেই সাংবিধানিক অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করে চলমান বৈচারিক কার্যক্রম বন্ধের প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতাপূর্ণ দাবি আদালত অবমাননার শামিল।
বিৃবতিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ১৪ দল বিশ্বাস করে, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত বা নির্যাতিত কোনো ব্যক্তির ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ রুদ্ধ করার দাবি উত্থাপন করতে পারে না। আর কোনো বিদেশি ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে বিচারাধীন কোনো মামলার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি কেবল বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপই নয়, একই সাথে একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্বের উপরও আঘাত বটে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ড. ইউনূস-এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা আইনি প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন এবং আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচার চলমান রয়েছে। আইনের শাসনের নীতি অনুযায়ী আইনের চোখে সকলেই সমান; সেক্ষেত্রে কারও রাজনৈতিক বা সামাজিক পরিচয় বিবেচ্য বিষয় নয়। কেউ কোনো অপরাধ করলে তাকে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। ফৌজদারি আইন দেশের সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নোবেল পুরস্কার পেলেই কেউ আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে নয়।
তারা আরও বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নোবেল পুরস্কার অর্জনকারী অনেকের বিরুদ্ধে সেসব দেশের আইন অনুযায়ী মামলা হয়েছে এবং বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী ড. ইউনূস আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার ভোগ করছেন, আইনজীবী নিয়োগ করে জামিন নিয়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছেন। এই মামলার সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগসূত্র নেই।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আইন, বিচারব্যবস্থা ও আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করে সুবোধসম্পন্ন কোনো ব্যক্তির নিকট থেকে এমন ধরনের বিবৃতি প্রদান কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং বেআইনি উদ্যোগ স্বেচ্ছাচারী মানসিকতার বর্হিপ্রকাশ ছাড়া কিছু নয়। ইতোপূর্বে আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখেছি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মনবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারী ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্যও দেশি-বিদেশি অপশক্তি বাংলাদেশের উপর চাপ প্রয়োগ করেছিল। ড. ইউনূস-এর বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া গোষ্ঠীতন্ত্র ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বন্ধ করতে বিবৃতি প্রদান বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী, প্রগতিশীল, সচেতন নাগরিক সামজকে গভীরভাবে হতাশ করেছে। প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিক বিশ্বাস করে, শুধুমাত্র ড. ইউনূস নয় যে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ন্যায় বিচার লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
১৪ দলের নেতৃবৃন্দ বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির পরিবর্তে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করেছেন। স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমান সরকার জনগণের ন্যায়বিচার লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ।
একই সাথে নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, সংবিধান, আইন ও বিচারব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত বা প্রভাব বিস্তার করে এমন ধরনের বিবৃতি কিংবা তৎপরতা থেকে বিরত থাকার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
অন্যান্য
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে জামায়াত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শান্তিতে নোবেল বিজয়ী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মাদ ইউনূসকে প্রধান করে ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারের নিকট ছাত্র-জনতার অনেক প্রত্যাশা। আমরা আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবেন।’
জামায়াত আমীর বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। ছাত্র-জনতার বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরশাসক মুক্ত হয়েছে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব উপদেষ্টাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করার এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বঙ্গভবনে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মাদ ইউনূস এবং অন্যান্য উপদেষ্টাগণ শপথ নিয়েছেন। শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দ, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, প্রকৌশলী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কবি-সাহিত্যিক, লেখক, গবেষকসহ দেশের বিশিষ্ট নাগরিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
শপথ অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান (সাবেক এমপি) ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের (সাবেক এমপি), সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জনাব হামিদুর রহমান আযাদ (সাবেক এমপি), মাওলানা আবদুল হালিম ও এডভোকেট মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি জনাব মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।
জেএইচ
অন্যান্য
ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন শেষে যা বললেন জামায়াতের আমীর
কোনো বাহবা বা রাজনৈতিক ফায়দার জন্য আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির পাহারা দিচ্ছি না, মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকার জন্য এ কাজে নেমেছি। আপনাদের প্রয়োজনে জাতির প্রয়োজনে যদি কখনো জামায়াতকে অনুভব করেন সেটাই হবে আমাদের শ্রেষ্ঠ উপহার। তখন যেন প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া দিতে পারি। বলেছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের কোনো জায়গায় জামায়াতে ইসলামী বা ছাত্র সংগঠনে যারা কাজ করেন তারা যদি দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে কিছু করেন তাহলে তিনি হবেন দুর্বৃত্ত। আমাদের সুনির্দিষ্ট করে বলবেন। তখন দেখবেন আমরা কী করি, কী করব সেটাও জানবেন। আমরা সঠিক পথে থাকলে পরিবেশ ও মানুষ সাক্ষ্য দেবে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষভাবে এই পরিস্থিতিতে একটা বিষয়ে সহযোগিতা চাইতে এসেছি, ঢাকাসহ সারাদেশে আমাদের নামে, আমাদের ব্যানারে, আমাদের স্লোগান ব্যবহার করে কোনো দুর্বৃত্ত অপকর্ম করছে কি না তা জানাবেন। যদি কেউ কিছু করে এমন তথ্য জানাবেন। কোনো দুর্বৃত্তকে প্রশ্রয় দেব না, বরং সেই দুর্বৃত্তকে সমুচিত জবাব দিয়ে দেব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেন, মুহা. কামাল হোসাইন ও ড. আবদুল মান্নান প্রমুখ।
এএম/
অন্যান্য
১৩ বছর পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াত নেতারা
প্রায় ১৩ বছর ধরে বন্ধ ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়। মগবাজারের কার্যালয়ের পাশাপাশি পুরানা পল্টনে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী কার্যালয়ের দশাও ছিল একই। টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার পর পাল্টে যায় রাজনৈতিক দৃশ্যপট। স্বস্তি নেমে আসে জামায়াত-বিএনপিসহ দীর্ঘদিন কোণঠাসা হয়ে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর শিবিরে। এরইঅংশ হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজান ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। এ সময় গেটের সামনে দাঁড়িয়ে একজন উচ্চস্বরে আজান দেন। পরে মোনাজাত করা হয়।
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন