জনদুর্ভোগ
নরসিংদী পৌর সড়কে ময়লার ভাগার, যানজটে ভোগান্তি
অনিয়ন্ত্রিত আবর্জনা নরসিংদী পৌরসভার মধ্যে একাধিক স্থানে যানজট এবং দুর্গন্ধময় পরিবেশ সৃষ্টি করছে, যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা যথেষ্ট পরিমাণে বর্জ্য তৈরি করছে, পরিবেশকে বিপন্ন করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পৌরসভাকে সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নরসিংদী শহরের পুরাতন টাউন হলের পিছনে, আজিজ বোর্ডিং এলাকা, আইডিয়াল স্কুলের পেছনে, আল্লাহু চত্বর, নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজ গেটের সম্মুখভাগের পুকুর পাড়, আল্লাহু চত্বর থেকে শাপলা চত্বর যেতে রাস্তার উপর , শিক্ষা চত্বর আন্ডারপাস এলাকা, বীরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে।
শহরের স্টেশন রোড হয়ে শাপলা চত্বর যেতে ওই রাস্তা অযৌক্তিক আবর্জনার স্তূপের জন্য একটি নিয়মিত স্থান হয়ে উঠেছে, যা পথচারী, যানচারী এবং তাদের জন্য অস্বস্তি এবং স্বাস্থ্যের ঝুঁকির দিকে পরিচালিত করে।
এই সড়কের অটোরিকশা চালক মোমেন মিয়া বলেন, কি যে ভোগান্তি ভাই,প্রতিদিন নিয়ম করে আধাঘণ্টা, এক ঘণ্টা জ্যাম লেগে থাকে তার উপর দুর্গন্ধ নাক চেপেও সহ্য করা যায় না। পৌরসভার ট্রাক যখন ময়লা নিতে আসে তখন শাপলা চত্বর থেকে আল্লাহু চত্বরে পুরো সড়কে জ্যাম লেগে গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় বাসা বাড়ি থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এখানে সারাদিন আশেপাশের এলাকা থেকে সংগৃহীত বর্জ্য স্তূপ করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের প্রতি পৌর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীলতার অভাব রয়েছে। চলাচল বিলম্বিত করে, নাগরিকদের সমস্যা বাড়িয়ে দেয় এমন পদক্ষেপ নেয়া উচিত নয় বলে জানান স্থানীয়রা। চত্বরে এই আবর্জনা জমে সড়কে চলাচলরত যাত্রী, শিক্ষার্থী এবং এলাকার বাসিন্দাদের জন্য উল্লেখযোগ্য অসুবিধার কারণ হচ্ছে।
শহরের একটি বিশিষ্ট চত্বর আজিজ বোর্ডিং এলাকাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিক্ষার্থী, যাত্রী এবং পথচারীদের দ্বারা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত রাস্তাটি আবর্জনার স্তূপের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত।
এই এলাকার এক বাসিন্দা শিলিপ দাস জানান, বেশ কয়েকবার পৌরসভার কাছে আবেদন জানানো হয়েছে এই সড়ক থেকে ময়লার স্তূপ সরিয়ে নেয়ার জন্য কিন্তু আবেদনে কোন সুরাহা নেই। আমরা নাগরিকরা নিরুপায়। এই সড়ক ব্যবহারকারীদের দমবন্ধ দুর্গন্ধ নিয়ে পারাপার হতে হয়”।
একই এলাকার সানজিদা খানম অভিযোগ করে বলেন, পৌরসভা থেকে লোক এসে আমাদের প্রতি ঘর থেকে এ ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য ১০০ টাকা করে নেন। অথচ তারাই বাসাবাড়ির ময়লাগুলো সংগ্রহ করে আবার আমাদের বাসার সামনেই রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যান। এটা অমানবিক, পরিবেশের জন্যও মারাত্মক হুমকি। ছেলেমেয়েদের নিয়ে প্রতিদিন এই রাস্তায় স্কুলে যাওয়া আসা করতে হয়। ছেলেমেয়েরা দুর্গন্ধে খুবই কষ্ট করে।তিনি এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জোর দাবি জানান।
শিক্ষা চত্বর এলাকার বর্জ্যের স্তূপ নিয়েও সেখানকার মানুষদের কাছে জানা যায় হতাশার কথা।
বীরপুর এলাকার বাসিন্দা ও আলোকিত নরসিংদীর প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আল মামুন রাসেল শহরের শিক্ষা চত্বর এলাকা হয়ে প্রতিদিন অফিসে যাতায়াত করেন। তিনি জানান, প্রতিদিনই দুর্গন্ধ পেরিয়ে অফিসে যাতায়াত করতে হয়। এই সড়ক জনগুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল। এই সড়ক ধারে প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রেণি পেশার মানুষ, শিক্ষার্থী পারাপার হয়। এখানে আবাসিক বাসিন্দাদেরও বাস আছে। এখানকার ময়লার স্তূপ অন্যত্র সরিয়ে নিলে জনসাধারণের খুবই উপকার হতো।
ফুটপাতও রেহাই পাচ্ছে না জগাখিচুড়ি বর্জ্য ফেলা থেকে, যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে এবং ভোগান্তির কারণ হচ্ছে। ভেলানগর এলাকার হাইওয়ে রোডের বাজার ঘিরে ফুটপাতেও এলোপাতাড়ি ময়লার স্তূপ পরে থাকতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে নরসিংদী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান জানান, যত্রতত্র ময়লা- বর্জ্য ফেলা নিয়ে দফায় দফায় মিটিং হচ্ছে। পৌরবাসীর কষ্ট যেমন হচ্ছে, আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে,পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা এ-সব নিরসনের উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি। শহরের যেখানে – সেখানে ময়লা ফেলা যাবে না। আসা করছি দ্রুততম সময়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবো।
এএম/
জনদুর্ভোগ
শনির আখড়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অবস্থানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ
কোটা আন্দোলনে ঘিরে শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ীর কাজলা ও শনির আখড়া অংশে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ফলে স্বাভাবিক যান চলাচল বন্ধ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের।
শনিবার (০৩ আগস্ট) দুপুর থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করছে। ফলে ঢাকা অভিমুখি সব প্রবেশ ও বাইর হওয়ার সব পথ বন্ধ।
সারাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় প্রতিবাদ ও নয় দফা দাবির বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ‘সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে শুক্রবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা আজ (শনিবার) সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
জেডএস/
জনদুর্ভোগ
ইন্টারনেট বন্ধে দৈনিক ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকা
কোটা আন্দোলন ও উদ্ভুত পরিস্থিতিতে টানা ৫ দিন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার পর স্বল্প পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা হয়েছে। এ সময় প্রতিদিন গ্রাহকরা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
বুধবার (২৪ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে। এ অবস্থায় সারাদেশে দ্রুত ইন্টারনেট সেবা চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৭ তারিখ থেকে সারা দেশে বন্ধ হয়ে গেছে মুঠোফোন ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা এবং ১৮ তারিখ থেকে সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রয়েছে। এতে করে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সঙ্গে আরও ৫ কোটি গ্রাহক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প কারখানা, চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যাংক-বীমা, সফটওয়্যার শিল্পে ধস নেমেছে। একইভাবে টেলিযোগাযোগ শিল্পে ৩০ শতাংশ ব্যাবসা কমেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারি সকল ইউটিলিটি গ্রাহকদের বিশেষ করে গ্যাস, বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, এটিএম বুথে টাকা উত্তোলন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় ব্যাপক বিপর্যয় নেমে এসেছে। সব মিলিয়ে দৈনিক গ্রাহকদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। তাই সারাদেশে দ্রুত মুঠোফোন ভিত্তিক ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে ইন্টারনেটের সকল এক্সেস যেনো ব্যবহার করা যায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় ইন্টারনেট এখন জাতিসংঘ ঘোষিত মৌলিক মানবাধিকার বলেও জানান মহিউদ্দিন আহমেদ।
বিল গ্রহণ না করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার ও বিটিআরসির কাছে আমাদের দাবি থাকবে যে, অব্যাহত ইন্টারনেট সেবা চালুর সাথে সাথে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার। কোনোভাবেই তা পরের রিচার্জের সঙ্গে যুক্ত করা যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ গ্রাহক ইতোমধ্যে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। একইভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় এক দেশ এক রেট গাইডলাইন অনুসারে একটানা ৩ দিন বন্ধ থাকলে ১৫ দিনের বিল পরিশোধ না করতে বলা হয়েছে এবং ৭ দিন একটানা বন্ধ থাকলে সারা মাসের বিল না দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬ দিন একটানা বন্ধ হয়ে আছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। তাই নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসির কাছে আবেদন গ্রাহকদের থেকে আগস্ট ২০২৪ মাসের বিল না নেয়া হয়, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার।
গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন জানায়, গ্রাহকদের কাছে অনুরোধ করছি কোনোভাবেই যেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দেয়া না হয়। ভয়ভীতি তৈরি হয় এমন কিছু পোষ্ট না করা হয়। একইসঙ্গে দেশের সুনাম ক্ষুন্ন হয় বহির্বিশ্বে এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন।
এএম/
জনদুর্ভোগ
যেসব অংশে মেট্রোরেল বন্ধ
নিরাপত্তার শঙ্কায় মেট্রোরেলের শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০, মিরপুর-১১ স্টেশন বন্ধ রয়েছে। তবে মতিঝিল থেকে আগারগাঁও এবং দিয়বাড়ি থেকে পল্লবী অংশে মেট্রোরেল চলছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুর দুপুর ২টা ২৫ মিনিট থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তার শঙ্কায় সাময়িকভাবে মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টেশনে মেট্রো চলাচল বন্ধ করা হয়।
মেট্রোরেলের বন্ধ স্টেশনগুলো চালু হলে তাৎক্ষণিক জানানো হবে। এদিন দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মিরপুর ১০ এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
উল্লেখ্য, এ সময় কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা পুলিশ বক্সে এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। এরপরই নিরাপত্তার শঙ্কায় কিছু অংশে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এএম/