ইউরোপ
ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন বাড়ছে হু হু করে, ছয় নম্বরে বাংলাদেশিরা
গেলো বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয় আবেদন বেড়েছে ২৮ শতাংশ। এক্ষেত্রে শীর্ষ আবেদনকারীদের মধ্যে ছয় নম্বরে রয়েছেন বাংলাদেশিরা।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষ প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এজেন্সি ফর অ্যাসাইলাম (ইইউএএ) জানিয়েছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের শেষ পর্যন্ত জোটের ২৭ সদস্য দেশ এবং সহযোগী সুইজারল্যান্ড ও নরওয়েতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন জমা পড়েছে মোট ৫ লাখ ১৯ হাজার।
সেই হিসাবে, চলতি বছর শেষে ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদনের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ১০ লাখের বেশি। ২০১৫-১৬ সালের পর এত সংখ্যক আশ্রয় আবেদন আর কখনো দেখেনি ইইউ। সেই সময় যুদ্ধকবলিত সিরিয়ার বাসিন্দারা দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করায় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল নেমেছিল ইউরোপে।
২০১৫ সালে ইউরোপীয় দেশগুলো সাড়ে ১৩ লাখ আশ্রয় আবেদন পেয়েছিল। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা ছিল সাড়ে ১২ লাখ।
কিন্তু ২০১৭ সালে ইইউ তুরস্কের সঙ্গে অবৈধ সীমান্ত পারাপার রোধে চুক্তি করার পর আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা কমে আসে। ২০২০-২১ সালে করোনাভাইরাস মহামারির সময় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণেও আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা ছিল অনেকটাই কম।
তবে সেই সংখ্যা আবারও বাড়ছে। ইইউএএ বলেছে, ২০২২ সালে আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা একলাফে ৫৩ শতাংশ বেড়ে যায়, যার কারণে ইউরোপীয় দেশগুলো ‘চাপে পড়েছে’ বলে মনে করছে সংস্থাটি।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনীয়দের বিশেষ সুরক্ষা সুবিধা দিচ্ছে ইইউ। এর মাধ্যমে অন্তত ৪০ লাখ ইউক্রেনীয় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় পেয়েছেন। তাদের বসবাসের বন্দোবস্ত করতে গিয়েই চাপে পড়তে হচ্ছে দেশগুলোকে।
ইইউএএ জানিয়েছে, এ বছর ইউরোপে আশ্রয়ের জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশই সিরীয় এবং আফগান নাগরিক। এরপর রয়েছেন ভেনেজুয়েলা, তুরস্ক, কলম্বিয়া, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নাগরিকরা।
২০১৫-১৬ সালে বেশিরভাগ সিরীয় শরণার্থী গ্রহণ করেছিল জার্মানি। এ বছরও আশ্রয়প্রার্থীদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য সেটি, বিশেষ করে সিরীয় ও আফগানদের কাছে।
২০২৩ সালের প্রথমার্ধে ইউরোপে সিরীয়দের প্রায় ৬২ শতাংশ আশ্রয় আবেদনই পেয়েছে জার্মানি। আর ভেনেজুয়েলার আশ্রয়প্রার্থীদের প্রধান গন্তব্য স্পেন।
সামগ্রিকভাবে, ৪১ শতাংশ আবেদনকারী হয় শরণার্থী মর্যাদা অথবা থাকার জন্য অন্য ধরনের সুরক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু জাতীয়তার ভিত্তিতে আশ্রয় আবেদনের ফলাফলে ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে।
স্বদেশে সংঘাত ও নিপীড়নের শিকার সিরীয় এবং আফগানদের এ ধরনের মর্যাদা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিপরীতে, তুর্কিদের আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ার সংখ্যাই বেশি ছিল।
ইইউএএ বলেছে, ইউরোপে রুশ এবং ইরানি নাগরিকদের সুরক্ষা পাওয়ার হারও আগের বছরের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের পক্ষে হাজারো মানুষের মিছিল
যুক্তরাজ্যে বার্মিংহাম, লিভারপুল, শেফিল্ড, ব্রিস্টলে ও লন্ডনসহ আরো বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে অভিবাসীদের পক্ষে ও অতি ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন । খবর ডয়চে ভেলে।
বুধবার ( ৭ আগস্ট ) সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ হাতে পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নামেন। সেখানে বর্ণবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছাড়াও অভিবাসী, শরণার্থী ও যারা আশ্রয় নিতে চান, তাদের স্বাগত জানাবার কথাও বলা হয়েছিল।
মেট্রোপলিটান পুলিশ জানিয়েছে, লন্ডনে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তাছাড়া সম্ভাব্য হামলা সামলাবার জন্য এক হাজার তিনশ বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনীকে ‘স্ট্যান্ড বাই’ হিসাবে রাখা হয়েছে।
লন্ডনের ফিঞ্চলিতে মিছিলে নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অতি দক্ষিণপন্থিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন মিছিলে যোগদানকারীরা। মিছিলকে ঘিরেপূর্ব লন্ডনের একটি অভিবাসন কেন্দ্রর সামনে প্রচুর মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। সেখানে ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। এছাড়াও মানুষ সোচ্চারে বলেন, ‘অভিবাসন কোনো অপরাধ নয়’, ‘অতি ডানপন্থিদের থামানো হোক’।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, যে দাঙ্গা হয়েছে তা সরকারের অভিবাসন নীতির জন্য নয়, এটা অতি ডানপন্থিদের গুণ্ডামির জন্য হয়েছে।
জেডএস/
ইউরোপ
টিউলিপের পর ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশনারা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের পর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী।
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় বাসস্থান, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশি অধ্যুষিত বেথানাল গ্রীন বো আসন থেকে টানা পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হওয়া রুশনারাকে।
মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম ঘোষণার ঘণ্টাদুয়েক পরেই রোশনারা আলীর মন্ত্রীদের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম ঘোষণার ঘণ্টাদুয়েক পরেই রোশনারা আলীর মন্ত্রীদের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলীর জন্ম সিলেটে। তার বয়স যখন সাত বছর তখন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় তার পরিবার। তিনি অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
রোশনারা আলী যুক্তরাজ্যে প্রথম বাংলাদেশি এমপি হিসাবে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিলেন। যুক্তরাজ্যে বাঙালির জয়যাত্রা নিয়ে উঠে আসে রোশনারা আলীর নাম। এরপর টিউলিপ সিদ্দিক, রূপা হক, আপসানা বেগমসহ চার বাঙালি এমপি পেয়েছে বাঙালি কমিউনিটি।
গেলো সপ্তাহে (৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে টানা পঞ্চমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন রুশনারা আলী। তিনি ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর পার্লামেন্ট বাতিল করা পর্যন্ত বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো-এর সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি লেবার পার্টির একজন সদস্য।
২০১০ থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুশনারা আলী। এরপর তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
জেএইচ
ইউরোপ
গিনেস বুকে বিশ্বের দীর্ঘতম বাইসাইকেলের নাম লিখালো ৮ প্রকৌশলী
এতোদিন বিশ্বের দীর্ঘতম সাইকেল তৈরির রেকর্ড দখলে রেখেছিলো অস্ট্রেলিয়ার বার্নি রায়ান। তিনি ২০২০ সালে ১৫৫ ফুট দীর্ঘ ৮ ইঞ্চি চওড়া সাইকেল বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলো গোটা বিশ্বকে। এবার নেদারল্যান্ডসের ৭ জন প্রকৌশলীকে সঙ্গে করে সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন ইভান শাল্ক। নতুন বাইসাইকেলটি ১৮০ ফুট লম্বা, ১১ ইঞ্চি চওড়া।
চাকা আবিষ্কারের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি হল বাইসাইকেল। দূষণে জর্জর পৃথিবীতে এর চেয়ে উপকারী যান আর হয় না। তাই বলে ১৮০ ফুট লম্বা বাইসাইকেল কে দেখেছে? দুই বা খুব বেশি হলে তিন চাকার (সার্কাসের কুশীলবরা চালান) সাইকেলই সাধারণত নজরে পড়ে। কিন্তু ৩৯ বছরের ইভান শাল্ক হৃদয়ের অন্তঃপুরে লালন করছিলেন ব্যতিক্রমী ইচ্ছে।
শৈশব থেকেই গিনেস বুকে নাম তোলার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তার। এর ফলে জন্ম হলো বিশ্বের দীর্ঘতম সাইকেলের। আদৌ কি চলে এই দু-চাকার যান?
২০১৮ সালে দীর্ঘতম সাইকেল তৈরির কাজ শুরু করেন ইভানসহ আট ইঞ্জিনিয়ার। তবে চাইলেই এই সাইকেল নিয়ে পথেঘাটে নামা যাবে না। বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে সাইকেলটির বিরাট দৈর্ঘ্যই।
ইতোমধ্যে নেটিজেনদের মন জয় করেছে ইভানের সাইকেল। আজব ‘সৃষ্টি’ ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়। এই বিষয়ে ইভান বলেন, ‘অন্যরা যখন আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করে, আমরা তখন সৃষ্টিশীল কাজে মগ্ন থাকি।’
টিআর/