খুলনা
অশ্লীল ভিডিও ধারণ, দুই নারী ইউপি সদস্যসহ ৪ জন আটক
দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জের নারী-পুরুষের একটি চক্র প্রেম-ভালোবাসাসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে এনে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে টাকা হাতিয়ে নেয়া ছিল ২ নারী ইউপি সদস্যের কাজ। এ কাজে সহায়তা করত আরও দু’জন। গেলো শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে এ চক্রকে আটক করেছে ঝিনাইদহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
ডিবি পুলিশের ওসি শাহীন উদ্দীন গণমাধ্যমে জানান, শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জ উপজেলাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় আটককৃতদের কাছ থেকে ৫৯ হাজার টাকা উদ্ধার কর হয়।
আটককৃতরা হলেন কুলফডাঙা গ্রামের বাবলু মন্ডলের স্ত্রী মোসাঃ নুর নেহা (৪০), করাতিপাড়া গ্রামের হাসান মন্ডলের স্ত্রী ও ইউপি নারী সদস্য জাহানারা বেগম (৬০), কালীগঞ্জ উপজেলার রাকড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলীল মন্ডলের মেয়ে রুহানি আক্তার শিলা (২০), ও সদর উপজেলার কুলফাডাঙা গ্রামের মসলেম মন্ডলের ছেলে আজিম মন্ডল (৩৫)।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জের নারী-পুরুষের একটি চক্র বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে বাসাতে নিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে অশ্লীল ছবি ধারণ করে রাখে। পরে তাদেরকে ব্লাকমেইলিং করে অর্থ আদায় করে আসছিল। এরপর ভূক্তভোগীকে পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে সম্মানহানি করার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছিল।
তিনি আরও জানান, গেলো ৭ সেপ্টেম্বর দুপর আড়াইটার দিকে চক্রের সদস্য রুহানি আক্তার ওরফে শিলার মাধ্যমে প্রেম-ভালোবাসার প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী হারুনর রশীদকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডেকে নেয় সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোসাঃ নুর নেহা। এসময় তিনি তাদেরকে নিজ বাড়ি ইউনিয়নের কুলফাডাঙ্গা গ্রামে রাখে। এরপর বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে অশ্লীল ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে এবং ধারণকৃত অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আদায় করে। এরপর হারুন অর রশীদ বাদি হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে। তার প্রেক্ষিতে কালীগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, আটককৃত আসামিদের হেফাজত হতে অভিযোগকারীর কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থের ১ লাখ ১৯ হাজার টাকার মধ্যে ৫৯ হাজার-টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া অপরাধ চক্রের পলাতক অন্যান্য সদস্যদের আটক অভিযান অব্যাহত আছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এএম/
খুলনা
কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালাল অর্ধশতাধিক আসামি
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক আসামি পালিয়েছে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনার পর সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা গণমাধ্যমে বলছেন, ১২-১৩ জনের মতো আসামি পালিয়েছেন। পলাতকদের তালিকা করার পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জামিন পান। দুপুর আড়াইটার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে বের হতে হট্টগোল শুরু করেন কারাবন্দীরা। এ সময় কারারক্ষীরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালান। তবে এর আগেই অর্ধশত আসামি পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কারাগারের জেলার আবু মুসা গণমাধ্যমে জানান, কারাগার থেকে ঠিক কত জন কয়েদি পালিয়ে গেছে তা সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
এএম/
খুলনা
মাগুরায় ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ১০
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্যসহ ১০ জন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করলে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী নিহত হন।
জেলা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আমর প্রশাদ বিশ্বাস জানান, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেডএস/
খুলনা
কনস্টেবল সুমন হত্যায় মামলা, অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি ১২০০
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামী হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার নেই বলে জানান লবণচরা থানার ওসি মমতাজুল হক।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শুক্রবার বিকেলে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত সুমন ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় পিটুনিতে নিহত হন তিনি। সমুনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তাদের ৬ বছর বয়সি স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয় পুলিশ জানায়, বিকেলে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরে আবার সোনাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন গুরুতর আহত হন। পরে রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৩০ সদস্য।
এসি//