আন্তর্জাতিক
সরকার অচল করতে আমাকে সরাতে চায় রিপাবলিকানরা: বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত শুরু করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। বিরোধী রিপাবলিকানদের অভিযোগ, বাইডেনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
যদিও বাইডেন বলেছেন, সরকার অচল করতে অভিশংসনের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায় রিপাবলিকানরা। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার অচল করতে রিপাকলিকানরা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর কয়েক ঘণ্টা আগে মার্কিন এই ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন তদন্ত শুরুর নিন্দা জানায় হোয়াইট হাউস।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে এই তদন্তকে একটি ‘রাজনৈতিক স্টান্ট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, রিপাবলিকানরা হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক লেনদেনের তদন্ত করেছে, তারপরও তারা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে সাড়ে ১৩ লাখ মার্কিন ডলার আয়ের ওপর কর দেননি তিনি। এছাড়া অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগও রয়েছে হান্টারের বিরুদ্ধে।
এমনকি রিপাবলিকানরা বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের ব্যবসায়িক লেনদেনের বিষয়ে নজর দিয়েছেন। আর প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার ছেলে হান্টার বাইডেনের ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে উপকৃত হয়েছিলেন কিনা, সেটিকে ঘিরেই এই তদন্ত শুরু করেছে রিপাবলিকানরা।
বুধবার বাইডেন ভার্জিনিয়ার একটি তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না কেন, তবে কেবল তারাই জানে কেন তারা আমাকে অভিশংসন করতে চায়। আমি সবচেয়ে ভালো যা বলতে পারি, তা হলো- তারা আমাকে অভিশংসন করতে চায় কারণ তারা সরকারকে অচল করতে চায়।’
বাইডেন বলেছেন, তিনি অভিশংসন তদন্তের বিষয়ে মনোনিবেশ করতে চান না। তার ভাষায়, ‘আমি প্রতিদিন উঠি এবং অভিশংসনের দিকে মনোনিবেশ করি না। আমার কাজ আছে, দায়িত্ব আছে।’
বাইডেন আরও বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মার্জোরি টেলর গ্রিন যখন প্রথমবার মার্কিন কংগ্রেসে নির্বাচিত হন, তখন তিনি বলেছিলেন- তিনি প্রথমে যা করতে চান তা হলো- তাকে (বাইডেনকে) অভিশংসন করা।
মার্জোরি টেলর গ্রিন মূলত অতি-কট্টর-ডানপন্থি রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর মিত্র হিসেবে পরিচিত।
অন্যদিকে ওয়াশিংটনের শীর্ষ রিপাবলিকান প্রতিনিধি এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থিকে অভিশংসন তদন্তের আদেশ দিতে চাপ দেয়ার জন্য টেলর গ্রিনকে দায়ী করেছে হোয়াইট হাউস।
এছাড়া হোয়াইট হাউস হান্টারের বিরুদ্ধে মামলায় কোনও ধরনের হস্তক্ষেপের কথা অস্বীকার করেছে। এমনকি হান্টারের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে বাইডেনের কোনও ধরনের যোগসূত্র নেই বলেও উল্লেখ করেছে হোয়াইট হাউস।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//