আফ্রিকা
নাইজারে জিম্মি আছে ফরাসি রাষ্ট্রদূত: ম্যাক্রোঁ
আফ্রিকার দেশ নাইজারে সম্প্রতি ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। তারপর থেকে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে দেশটিতে বিক্ষোভ হয়েছে। এমন অবস্থায় এবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন যে, দেশটিতে থাকা তাদের রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের জিম্মি করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, নাইজারে ফরাসি রাষ্ট্রদূত এবং অন্যান্য ফরাসি কূটনীতিকদের ‘ফরাসি দূতাবাসে আক্ষরিক অর্থে জিম্মি করা হয়েছে’।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সিএনএন’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্সের কোট ডি’অর অঞ্চলে একটি সফরের সময় সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন যে, নিয়ামে দূতাবাসে খাদ্য সরবরাহ করতে বাধা দেয়া হয়েছিল এবং রাষ্ট্রদূত সামরিক রেশন খাচ্ছেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, নাইজারে থাকা রাষ্ট্রদূত সিলভাইন ইত্তেকে বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। তাকে খাবার দেয়ার ক্ষেত্রেও বাধা দেয়া হচ্ছে।
জুলাই মাসে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেই সেনাবাহিনী। এরপর তারা ফরাসি রাষ্ট্রদূত ইত্তেকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয়। জান্তা প্রশাসন তার ভিসা প্রত্যাহার করে এবং পুলিশকে তাকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেয়।
তবে রাষ্ট্রদূতকে নাইজার থেকে ফিরিয়ে নেয়া হবে না বলে জানিয়ে ফ্রান্স। ফরাসি কর্তৃপক্ষ পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, তারা জান্তার কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দেয় না।
তিনি রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কাজ করবেন কি না জানতে চাইলে ম্যাক্রোঁ বলেন, নাইজারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাজুমের সঙ্গে আমরা যা কিছু করতে রাজি। তিনি বৈধ কর্তৃপক্ষ এবং আমি প্রতিদিন তার সঙ্গে কথা বলি।’
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনার মতে, ইত্তে এখনও কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত কাজ করছেন, আমি নিশ্চিত করতে পারি। তার সাথে এখনও একটি ছোট দল রয়েছে।’
কোলোনা যোগ করেছেন যে, যতদিন নাইজারে ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতকে রাখতে চান ততদিন সেখানে থাকবেন ইত্তে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
নাইজারে ক্ষমতা দখলের তীব্র সমালোচনা করেছিলো ফ্রান্স। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে পুনর্বহাল করার আহ্বান জানিয়েছিল তারা।
এর আগে ক্ষমতা দখলের পর ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল নাইজারের সামরিক জান্তা সরকার। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্স জানায়, নাইজারে তাদের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার কোনো অধিকার নেই সামরিক অভ্যুত্থানকারীদের।
আফ্রিকা
বরখাস্ত হলেন তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী
তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী আহমেদ হাচানিকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ। বুধবার (৭ আগস্ট)বরখাস্ত হন হাচানি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে চীনা বার্তা সংস্থা শিনহুয়া। তবে বরখাস্তের কোনো কারণ বা ব্যাখ্যা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি।
গেলো বছরের আগস্টে হাচানিকে তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করা হয়। এর এক বছরের মাথায় তিনি পদ হারালেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট সাইদ সামাজিক বিষয়কমন্ত্রী কামেল মাদ্দৌরিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন এবং তাকে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, আগামী নির্বাচন ঘিরে তিউনিসিয়া জটিল সময় পার করছে। জনগণের মধ্যে সরকার নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন খাতে জনরোষে রূপ নিতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, উত্তর আফ্রিকার উপকূলে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত দেশ তিউনিসিয়া। দেশটি উত্তর আফ্রিকা, আটলান্টিক মহাসাগরের নীল নদের বদ্বীপ এবং ভূমধ্য উপকূলের মধ্যে অবস্থিত।
জিএমএম/
আফ্রিকা
মালিতে গ্রামবাসীদের ওপর হামলা, নিহত ৪০
পশ্চিম আফ্রিকার মধ্যাঞ্চল মালিতে গ্রামবাসীদের ওপর হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসি বাহিনী। এতে প্রায় ৪০ গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ জুলাই) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
দেশটির স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্রোহে জর্জরিত মধ্য মালির একটি গ্রামে অজ্ঞাত সশস্ত্র ব্যক্তিদের হামলায় প্রায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার মোপ্তি অঞ্চলের ডিজিগুইবোম্বো গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ব্যাঙ্কাসের মেয়র মৌলেয়ে গুইন্দো বলেছেন, সশস্ত্র লোকেরা গ্রামটি ঘিরে ফেলে লোকজনকে গুলি করতে শুরু করে।
তিনি মৃতের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। তবে দুই স্থানীয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, হামলায় প্রায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন।
‘এটি গণহত্যা ছিল’ উল্লেখ করে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘হামলার আগে সন্ত্রাসীরা গ্রামটি ঘিরে ফেলে। সেখানে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছিল… হামলার ঘটনায় সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, কিছু লোক পালিয়ে যেতেও সক্ষম হয়। কিন্তু অনেককে হত্যা করা হয়েছে।’
নিহতদের বেশিরভাগই পুরুষ বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
মালির কর্মকর্তারা হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পারেননি। এছাড়া কোনো গোষ্ঠী এখনও হামলার দায় স্বীকার করেনি।
টিআর/
আফ্রিকা
নাইরোবিতে ট্যাক্সবিরোধী আন্দোলন, নিহত কয়েকজন
কেনিয়ায় ট্যাক্সবিরোধী আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করেছে। এই বিক্ষোভ থেকে দেশটির সংসদ ভবনে আগুন দেয়া হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের দমাতে পুলিশ গুলি ছুড়লে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশি বাধা টপকে দেশের সংসদ ভবনে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান দিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হলে পুলিশ গুলি চালায়।
বুধবার (২৬ জুন) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সংসদ ভবনের বাইরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এমন পাঁচজন বিক্ষোভকারীর মরদেহ গুণে দেখেছেন রয়টার্সের একজন সাংবাদিক। তবে প্যারামেডিক ভিভিয়ান আচিস্তা বলেছেন, কমপক্ষে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
আরেকজন প্যারামেডিক রিচার্ড এনগুমো বলেছেন, গুলিতে ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তিনি সংসদের বাইরে দুজন আহত বিক্ষোভকারীকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
ডেভিস তাফারি নামে একজন বিক্ষোভকারী রয়টার্সকে বলেন, আমরা সংসদ বন্ধ করে দিতে চাই। প্রত্যেক এমপির পদত্যাগ করা উচিত। আমাদের একটি নতুন সরকার দরকার।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কাঁদনে গ্যাস ও গুলি চালিয়ে পুলিশ শেষ পর্যন্ত সংসদ ভবন থেকে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ করতে পেরেছে। এছাড়া ভূগর্ভস্থ টানেল দিয়ে এমপিদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
শুধু নাইরোবি নয়, এদিন ট্যাক্স বাড়ানোর প্রতিবাদে দেশের অন্যান্য শহর ও নগরেও বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়েছে। এসব বিক্ষোভ থেকে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগের দাবি করা হচ্ছে। যদিও আন্দোলন শুরু হয়েছিল ট্যাক্স বৃদ্ধির বিরোধিতা করে।
আফ্রিকার এই দেশের মানুষজন করোনো মহামারির দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব, ইউক্রেনের যুদ্ধ, টানা দুই বছরের খরা এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে সৃষ্ট বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক ধাক্কা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। তাদের এমন অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেই রাজস্ব আয় বাড়াতে আরও প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের করের বোঝা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার।
ইতিমধ্যে নতুন এই অর্থ বিলের অনুমোদন দিয়েছে সংসদ। এখন তৃতীয় বারের মতো এটি আবারও সংসদে উঠবে। এই ধাপে পাস হলে তা স্বাক্ষরের জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হবে। কোনো আপত্তি থাকলে তিনি তা সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন। আর আপত্তি না থাকলে তিনি সই করলেই তা আইনে পরিণত হয়ে যাবে।