বরিশাল
বরিশালে ডেঙ্গুতে আরও তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮
গেলো ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৫ জনে। একই সময়ে ৪৫৮ জন ডেঙ্গু রোগী বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে বিভাগের ছয় জেলায় ১ হাজার ২২৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ডেঙ্গুতে মারা ব্যক্তিরা হলেন- বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার পিয়ারা বেগম (৭০), পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মমতাজ বেগম (৬০) ও ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার তারিকুল ইসলাম (৬৫)। এর মধ্যে পিয়ারা বেগম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তিনি মারা যান। মমতাজ বেগম আজ রোববার নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। আর তারিকুল ইসলাম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪৫৮ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬৮, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৬১, বরিশাল জেলার অন্যান্য হাসপাতালে ৮৪, পটুয়াখালীতে ৪৫, ভোলায় ৪৯, পিরোজপুরে ৬৪, বরগুনায় ৭৫ ও ঝালকাঠিতে ১২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ১৯ হাজার ৬৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮ হাজার ৩৩৪ জন। এদিকে চলতি বছর গোটা বিভাগে ৭৫ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪৮ জন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ জন, বরিশাল জেলার অন্যান্য হাসপাতালে ২ জন, বরগুনায় ৫ জন, পটুয়াখালীতে ২ জন, পিরোজপুরে ৭ জন এবং ভোলায় হাসপাতালে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ঝালকাঠি হাসপাতালে কোনো ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়নি।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ দাস গণমাধ্যমে জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বিভাগের সকল সরকারি হাসপাতালগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রধান কাজ সচেতনতা। সচেতনতা ছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব নয়।
এএম/
বরিশাল
ববিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মিটিংয়ে ছাত্রলীগের হামলা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের মিটিংয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এই ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে এ ঘটনা ঘটে। এরপর শিক্ষার্থীরা গেট থেকে বের হওয়ার সময় দ্বিতীয় দফায় আবার হামলা চালায় ছাত্রলীগ। আহতদের মধ্যে আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় শুভসহ ১০ আহত শিক্ষার্থীকে বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ববি সমন্বয়ক সুজয় শুভ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমাদের পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে ২০ শিক্ষার্থী ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে মিটিং করছিলাম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা একে আরাফাতের নেতৃত্বে ২০-৩০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী লাঠি, রড ও পাইপ নিয়ে হামলা চালায়। এসময় ছাত্রলীগের মাহমুদুল হাসান তমাল, আল সামাদ শান্ত, খালেদ হাসান, শাহরিয়ার সান, সাব্বির, জাইফ, সাইফ, শরিফুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলামকে আমরা সনাক্ত করতে পেরেছি। হামলার পর ক্যাম্পাস থেকে চলে যাওয়ার সময় দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। এতে কমপক্ষে ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমাদের মিটিংকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নেয়। তাদের সামনেই আমাদের বেধরক মারধর করে ছাত্রলীগ।
বরিশাল নগর পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান মুকুল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিটিং শেষ দিকে ছিলো। তখন কোটা সংস্কার নিয়ে সরকারের প্রজ্ঞাপনকে সমর্থন জানানো কিছু শিক্ষার্থী গেট দিয়ে প্রবেশ করে। তখন কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও অন্য এক গ্রুপের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তারা ছাত্রলীগ কিনা তা বলতে পারবো না, তবে তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা অভিযুক্ত একে আরাফাতের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে রোববার কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি অংকন করতে গেলে হামলার উদ্দেশে জড়ো হয়েছিলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
কেএস/
দেশজুড়ে
বিপৎসীমার ওপরে বরিশালের ১০ নদীর পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বরিশাল নগরীসহ অন্যান্য জেলা ও উপজেলার নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে দিনে দুইবার প্লাবিত হচ্ছে। তবে এ পরিস্থিতিকে বন্যা বলা যাবে না। এটি মৌসুমি পানি প্রবাহ বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাতে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জলানুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাউবো জানায়, বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার, ঝালকাঠিতে বিষখালী নদীতে ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলা পয়েন্টে মেঘনা নদী ৮৯ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিন উপজেলা পয়েন্টে মেঘনা ১ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলা পয়েন্টে পায়রা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার, বরগুনা সদর উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার, পিরোজপুর জেলার বলেশ্বর নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার ও উমেদপুর পয়েন্টে কচা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার আন্ধারমানিক নদী তীরবর্তী বাসিন্দা আরশাদ আলী বলেন, মঙ্গলবার থেকেই নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যারা বেড়িবাঁধের বাইরে থাকেন তাদের ঘরে পানি ঢুকে গেছে। এজন্য বাধের কূলে এক ঘরে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। পানি কমলে ঘরে ফিরবেন।
এদিকে নদীর পানির উচ্চতা বাড়ায় কেবল উপকূলীয় এলাকা নয়। জেলা শহরের ভিতরেও জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মানুষের দূর্ভোগ বাড়িয়েছে।
আই/এ
বরিশাল
বরিশাল থেকে লঞ্চ ও বাস চলাচল শুরু
বরিশালে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলা এবং মেট্রেপলিটন এলাকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। এ দিন বরিশাল নদী বন্দর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে; সড়ক পথেও চলছে যাত্রীবাহী বাস।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী সীমিত পরিসরে বুধবার (২৪ জুলাই) বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে ছোট লঞ্চ চলাচল করেছে। তবে সন্ধ্যা ৬ টার কারফিউ কঠোর থাকায় ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচল করেনি।
নগরবাসী জানান, নগরে গণপরিবহন চলছে এবং ব্যাংক-বিমা-অফিস-আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে। কারফিউ শিথিল হওয়াতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতে প্রয়োজনীয় কাজে আসা ব্যক্তিরা অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছেন তারা। পরিস্থিতি এমনই থাকুক, আর কোনো অস্থির বা অস্থিতিশীল পরিবেশ চান না নগরবাসী।
উল্লেখ্য, কারফিউ শুরুর পর গেলো ২০ জুলাই থেকে বরিশাল নদী বন্দর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল।
জেডএস//