আন্তর্জাতিক
অক্টোবরের প্রথম প্রহরেই অচল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র!
শিগগিরিই অচল হয়ে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।আসছে অক্টোবরের প্রথম প্রহরেই বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তিধর এই দেশটির সব কিছু থেমে যাবে।স্তব্ধ হয়ে যাবে সরকারী সব কাজকর্ম।ভয়াবহ এই বিপর্যয় মোকাবিলায় জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে জো বাইডেন প্রশাসন।এমন বিন্ফোরক তথ্যই এখন মার্কিন মুল্লুকের বাতাসে ঘুরে ফিরছে।
মূলত মার্কিন কংগ্রেসে সরকারি খরচ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিল এখনও পাস না হওয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে।এর জন্য অবশ্য রিপাবলিকান-ডেমোক্রাট আইন প্রণেতাদের মতানৈক্য দায়ি।দীর্ঘ আলোচনার পরও ‘বিলজট’ এখনও খোলেনি।আইনপ্রণেতাদের সবাই মিলে এই জট না কাটালে ৩০ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতের পর কার্যত স্তব্ধ হয়ে যাবে আমেরিকা। থেমে যাবে সরকারের সমস্ত কাজকর্ম। নিউইয়র্ক টাইমসসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমনই বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ হয়েছে।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে,কংগ্রেসে বিল পাস নিয়ে রিপাবলিকান-ডেমোক্রাটদের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের।তাদের এই মতানৈক্যের কারণে এবারও কংগ্রেসে আটকে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি খরচ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিল। কারণ মার্কিন কংগ্রেমের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে’র দখল রয়েছে রিপাবলিকানদের হাতে। অন্যদিকে, উচ্চকক্ষ বা সেনেটে সংখ্যাগুরু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। ফলে বাইডেন শিবির বিল পাস করাতে চাইলেও রিপাবলিকানরা তা ঠেকাতে চাইছেন। দুই শিবিরের এই ভিন্ন মতের কারণে স্বাভাবিকভাবেই বিল পাশ করানো জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিনের মধ্যে সরকারি খরচ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলো পাস না হলে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। আর এতে থেমে যাবে সরকারের সমস্ত কাজকর্ম। দেশটির লাখো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবে না বাইডেন প্রশাসন। ফলে জোরালো ধাক্কা লাগবে দেশটির অর্থনীতিতে।সবমিলিয়ে,মার্কিন সরকার ‘শাটডাউন’। শাটডাউন চলাকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এসময় কোনোভাবেই তাইওয়ান,ইউক্রেন,ইসরাইলসহ বেশ কয়েকটি মিত্র দেশকে অস্ত্র সরবরাহ করতে পারবে না মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সাথে সরকার বা প্রশাসনের সংঘাত দীর্ঘদিনের। আর যুক্তরাষ্ট্রের ‘শাটডাউন’ হয়ে যাওয়াও নতুন কিছু নয়।সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়েও ফেডারেল সরকার বন্ধ ছিল কিছুদিন।‘শাটডাউন’ নামে পরিচিত কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ হওয়ার ফলে ওয়াশিংটনে অচলাবস্থা চলেছে।ওই সময় ফেডারেল সরকারের ওপর নির্ভরশীল কর্মসূচিগুলো মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।যাঁরা খাদ্য ভর্তুকি পেয়ে থাকেন, তাঁরা ওই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।শুধু তাই নয়, ইমিগ্রেশন থেকে কর বিভাগ পর্যন্ত অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় আট লাখ কর্মচারী-কর্মকর্তা বেতন পাননি বারাক ওবামার সময়।
বারাক ওবামার আগে একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল বিল ক্লিনটন প্রশাসনও। ১৯৯৫-৯৬ সালে ২১ দিনের জন্য অচল হয়ে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় ২৭ বছর পর করোনা মহামারির সময় ক্লিনটন সরকারের ওই রেকর্ড ভেঙে দেয় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের অভিমত,এবারও বাজেট বরাদ্দে কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান শিবির সহমত না হলে বাইডেন সরকারের প্রায় আট লাখ সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা বেতন পাবেন না। এমতাবস্থায় কংগ্রেসকে এড়িয়ে তহবিল জোগাড়ে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//