জাতীয়
‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধ আসা নিয়ে সরকার চিন্তিত নয়’
গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারী ব্যক্তিদের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ যেসব বাংলাদেশির নাম এসেছে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরকারকে জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটি থেকে বাংলাদেশ সরকারকে দেয়া ধারণা অনুযায়ী সংখ্যাটি বড় নয়। বলেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। ভিসা বিধিনিষেধ আসা নিয়ে সরকার চিন্তিত নয় বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ পদক্ষেপ শুরুর সিদ্ধান্তের ঘোষণার পর গুলশানে নিজ বাসভবনে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এখানে নতুন কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে কয়েকদিন আগে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের দুদিন আগ থেকে হেডসআপ দেয়া হয়েছে। আমাদের একটা সংখ্যার ধারণা দেয়া হয়েছে এটুকু বলতে পারি। তবে সংখ্যাটি বড় নয়, ছোট—এটুকু বলতে পারি।’
‘এ বিষয়ে আমরা শুরুতে যে প্রতিক্রিয়া দেয়েছিলাম, সেই পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই-আমরা দেখব প্রত্যাশা করব এটা যেন জুডিশিয়াসলি হয়, আরবিটরি যেন না হয়। এখানেও প্রত্যাশা যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে, সেটাও যতেষ্ঠ পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে সঠিক তথ্য-উপাত্তের ভীত্তিতে এটা তারা করছেন। তাদের কনসার্নের জায়গাগুলো আমরা এড্রেস করছি সেই র্যাবের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি কেউ যদি ভিসা নীতির আওতায় পড়েন, এটা যদি আমাদের কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে আমরা ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে নির্দষ্ট ইস্যু নিয়ে পার্টিকুলার ইনডিভিজুয়ালদের নিয়ে কথা বলব। ভিসা নীতি ঘোষণার ফলে যদি আমাদের কাযক্রমে কোনো সমস্যা হয়, কোনো ব্যক্তি বা তার পরিবারের সেগুলো আমরা জানলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলব।,
মার্কিন ভিসা নীতিতে বিএনপি-জায়ামাতের শঙ্কা বেশি থাকার কথা মন্তব্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা এখনও দেখছি, জনগণের ক্ষতি করে বিরোধী দল এক দফা দাবির কথা বলছেন। মার্কিন ভিসা নীতিতে বিএনপি-জায়ামাতের শঙ্কা বেশি থাকার কথা। কারণ তারা বলছেন, নির্বাচনই হতে দেবেন না। আমরা যেটা বলছি, নির্বাচন আইন অনুযায়ী হবে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যেন নির্বাচন কমিশন করতে পারে এ বিষয়ে সরকার সর্বচ্চ সার্বিক সহায়তা দিয়ে যাবে। আমাদের এ অবস্থান।’
নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভিসা নীতি আরোপের বিষয়টি কিভাবে দেখছে সরকার-এমন প্রশ্ন রাখা হয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, আমাদের আভ্যন্তরীন বিষয়ে কোনো রাষ্ট্র বা সংস্থার কোনো হস্তক্ষেপ আমরা দেখতে চাই না। এটা লাউড এন্ড ক্লিয়ার। কিন্তু তারা এটা ঘোষণা করেছে,আমরা ভালো স্পিরিট দেখতে পাচ্ছি।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অতীতের মতো বিএনপি-জ্বালাও পোড়াও করলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, যাদের অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস জ্বালাও-পোড়াওর সেক্ষত্রে আইন শূঙ্খলা বাহিনীকে তো বাড়তিসতর্কতা অবলম্বন করতেই হয়। তাদের নীতেতে আছে, কেউ যদি পুলিশের ওপর আক্রমন করে বোমাবাজি করে গাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে তারা প্রক্রিয়া দেবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার তারা ব্যবস্থা নেবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি না। নির্বাচনের আগে আর কোনো ধরণের বিবৃতিও আপনারা দেখতে পাবেন না। আমরা পরিস্কারভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, এ রকম সেনসেটিভ টাইমে কোনো পদক্ষেপ বা বিবৃতি হস্তক্ষেপ হিসেবে মনে হবে।
গণমাধ্যকে উদ্দেশ্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, আপনারও মনে করছেন, ফের নিষেধাজ্ঞা আসবে। গত দুই বছরে ফের নিষেধাজ্ঞা আসার কোনো কারণ ঘটেছে কি? র্যাবের নিষেধাজ্ঞার নতুন কিছু ঘটেছে যে ফের নতুন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এ ধরণের কথা বা ইন্ডিকেশন অভ্যন্তীর রাজনীতিতে আমরা না চাইলেও একটা প্রভাব ফেলতে পারে। এ বোঝাপড়া থেকে আমরা পরিস্কারভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, এ ধরণের কাযক্রম থেকে বিরত থাকতে এবং আমরা সে ধরণের কিছু আশ্বাসও পেয়েছি।
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের ব্যাপারে আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে ‘পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে যাচ্ছেন বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের সদস্যরা। যদিও এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় যারা পড়তে যাচ্ছেন তাদের নাম উল্লেখ করেনি পররাষ্ট্র দপ্তর।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ