ছাত্র-শিক্ষক
রাবিতে ফোকলোর বিভাগে ১২ জনকে নিয়ে পরীক্ষা, সভাপতির কক্ষে তালা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফোকলোর বিভাগের মাস্টার্সের (২০১৭-১৮ সেশন) ফাইনাল পরীক্ষা মাত্র ১২ জনে নিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ায় একই সেশনের ৩১ জন ডিস-কলেজিয়েট শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে পরীক্ষা কক্ষের জানালা ভাঙচুর ও সভাপতির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেছে। পরবর্তীতে বিকেলে জরুরি অ্যাকাডেমিক সভায় পরবর্তী পরীক্ষা সমূহ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনে ফোকলোর বিভাগের সামনে তারা অবস্থান নেন। এরপর বিভাগ জরুরি অ্যাকাডেমিক সভায় বসেন।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্সের মোট ৪৪জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩১ জন শিক্ষার্থী ডিস-কলিজিয়েট হয়েছে। বাকি ১৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলনে যোগদান করে। বাকি ১২জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে আজ (২৪ সেপ্টেম্বর) মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়। এদিকে পরীক্ষা শুরু হলে বিভাগের ১২২ নং কক্ষে যেখানে মাস্টার্স পরীক্ষা চলছিলো সেই কক্ষে ভাংচুরসহ ফোকলোর বিভাগের গেটে তালা ঝুলিয়ে ফোকলোর বিভাগের সভাপতিকে সরকার বিরোধী আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে রবিবার সকাল থেকেই অবস্থান নেয় ২০১৭-১৮ সেশনের ৩১ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু সেসময় বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম এসে তাদের পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেন। তখন শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে উঠে যান। কিন্তু দুপুর ১২ টায় ওই সেশনের ১৩ জনকে নিয়ে পরীক্ষা শুরু করে বিভাগের শিক্ষকরা। এতে ওই ডিস-কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিভাগের সভাপতির কক্ষে ও পরীক্ষা কক্ষে তালা লাগিয়ে দরজার সামনে অবস্থান নেয় ও আন্দোলন শুরু করে। এসময় তারা পরীক্ষা কক্ষের জানালার কাঁচও ভাঙচুর করেন। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ ও প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক এসে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিলে তারা তলা খুলে দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তাদের ফর্ম ফিলাপের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল ১৭ তারিখ। সেখানে ২০ তারিখ পর্যন্ত জরিমানা ছাড়া শেষ তারিখ এবং জরিমানা সহ লাস্ট ডেট ছিল২১ তারিখ। কিন্তু ১৮ তারিখ দুপুরে বিভাগ থেকে নোটিশের মাধ্যমে জানানো হয় কে কলেজিয়েট আর কে ডিসকলিজিয়েট। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, অধিকাংশ শিক্ষক নির্দিষ্ট সময় ক্লাস নেন না। সকাল নয়টায় ক্লাস টাইম দিয়ে ক্লাস নেন দুপুরের পর। আবার অনেক কোর্সের একটা বা দুইটা ক্লাস নেওয়া হয়েছে। কয়েকটি কোর্সের উপস্থিতি যুক্ত করা হয় নি। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, তাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ফলে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে হয়রানির জন্য এমনটি করা হচ্ছে৷
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক অধ্যাপক বলেন, আমাদের শিক্ষকদের অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আবার অনেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। কিন্তু আমরা সকলেই তাদের পরীক্ষার বিষয়ে একমত হয়েছি। কারণ তারা ক্লাস করে নি। এমনও কিছু শিক্ষার্থী আছেন যারা একটি ক্লাস ও করে নি৷ তাই ছাত্রলীগ করে বলে, তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি, এ দাবিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ৭ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- মাস্টার্সের পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা স্থগিত করা, সকল শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে নতুন করে মাস্টার্স পরীক্ষা ঘোষণা করা, ক্লাসের জন্য নির্ধারিত সময়সূচির তোয়াক্কা না করে শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধা বিবেচনা না করে শিক্ষকদের খেয়ালখুশিমত ক্লাস নেয়ার অপসংস্কৃতি বন্ধ করাসহ ৭ টি দাবি তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিভাগের অ্যাকাডেমিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিস-কলেজিয়েট শিক্ষার্থীরা মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে পারবেন না।
ছাত্র-শিক্ষক
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করায় সরকারকে ঢাবি শিক্ষক সমিতির নেতাদের অভিনন্দন
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা এক যৌথ বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের সঙ্গে জামায়াতের সক্রিয় সম্পৃক্ততা ছিল। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করায় সরকারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অভিনন্দন জানাচ্ছে।
শিক্ষক নেতারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রির গণহত্যা ও ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী নিধনের নেতৃত্বদানকারী এবং ৩০ লাখ শহীদের রক্তে স্নাত, দুই থেকে ছয় লাখ নারীর সম্ভ্রম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিরোধিতাকারী সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির (তৎকালীন ছাত্র সংঘ)। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশেও তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও রাজপথে শিক্ষক-শিক্ষার্থী নির্যাতন ও হত্যার বহু ঘটনা ঘটিয়েছে।
তারা বলেন, এসব কারণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে মনে করে। তবে এটিই যথেষ্ট নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে।
জেএইচ
ছাত্র-শিক্ষক
শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি ঢাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকদের
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন ও গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকরা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন এবং সংলাপের মাধ্যমে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধান আসবে বলে আশা করেন তারা।
রোববার (২৮ জুলাই) বিকেল সোয়া ৩টায় বিভাগের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক জেরিন আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকরা সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানি, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন যে আমাদের ছাত্র মো. আবুল হাসনাত (হাসনাত আবদুল্লাহ), কোটাবিরোধী আন্দোলনের এক সমন্বয়ক গ্রেপ্তার হয়েছেন। আমরা তার এবং অন্য শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
এতে আরও বলা হয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সংযম প্রদর্শন এবং আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি এবং আশা করছি যে সংলাপের মাধ্যমে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধান আসবে।
এএম/
ছাত্র-শিক্ষক
শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের বৈঠক আজ
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছেন দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিষয়টি সুরাহার জন্য শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৩ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। পরে আজ বসার জন্য সময় দেন তিনি। তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলবে।
গেলো তিন দিন ধরে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের ফলে কার্যত অচল হয়ে আছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। গতকালও সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করে কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেন।
অন্যদিকে ‘কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। ফলে শিক্ষার্থীরা বিভাগ, হল, ইনস্টিটিউট ও প্রশাসনিক ভবনের কোথাও কোনো ধরনের সেবা পাচ্ছে না। প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে অনেক শিক্ষার্থী সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মঙ্গলবার শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘যারা প্রত্যয় স্কিম করেছেন, তারা হয়তো মন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েছেন। তিনি তার জায়গা থেকে কথা বলেছেন। আমরা যখন তাকে বোঝাতে পারব, তখন হয়তো তিনি আমাদের সঙ্গে একমত হবেন। তার বক্তব্যটি আমরা গ্রহণ করিনি।’
টিআর/