অপরাধ
একই পরিবারের তিনজনকে গলাকেটে হত্যার রহস্য উন্মোচন
রহস্য উন্মোচন হয়েছে ঢাকার আশুলিয়ার একই পরিবারের তিনজনকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দম্পতিকে গ্রেপ্তারের পর এ হত্যাকাণ্ডের জট খুলে র্যাব। কবিরাজির জন্য চুক্তিকৃত টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ওই পরিবারের তিনজনকে এই দম্পতি গলাকেটে হত্যা করে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, অভিযুক্তরা হলেন- সাগর আলী ও তার স্ত্রী ইশিতা বেগম। গতকাল সোমবার (২ অক্টোবর) রাতে তাদের গাজীপুরের শফিপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪। তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে।
গেলো ৩০ সেপ্টেম্বর সাভারের আশুলিয়া জামগড়া এলাকায় বহুতল ভবনের চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে ভবনের অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেন। পরে সেই ফ্ল্যাট থেকে স্বামী, স্ত্রী ও তাদের ১২ বছরের সন্তানের অর্ধগলিত গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, গেলো ২৮ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার সাগর সাভার বারইপাড়া এলাকায় যান। সেখানে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হত্যার শিকার মোক্তারকে দেখতে পান- তিনি এক কবিরাজের কাছে ভেষজ ওষুধ কেনার ব্যাপারে কথা বলছেন। এরপর সাগর মোক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন- মোক্তার সেই দোকানে শারীরিক চিকিৎসা করিয়ে কোনো ফল পাননি। উল্টো তার ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নষ্ট হয়েছে। এসব শুনে সাগর মোক্তারকে জানান, তার স্ত্রী খুব ভালো একজন কবিরাজ এবং এসব কাজে দক্ষ। এজন্য তাকে ৯০ হাজার টাকা দিতে হবে।
মোক্তার এতে সম্মত হন এবং ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে ওষুধসহ তার বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর সাগর তার বাসায় গিয়ে স্ত্রীকে বিষয়টি জানান এবং তার স্ত্রী নগদ বিপুল অংকের টাকার কথা শুনে রাজি হন। তারা পরিকল্পনা মতো মোক্তারের বাসায় যান। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী টাকা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরিবারের তিনজনকে গলাকেটে হত্যা করেন।
খন্দকার আল মঈন কিভাবে ওই তিনজনকে হত্যা করা হয় তার বিবরণী দেন।
যেভাবে হত্যা করা হয়, সাগর ও তার স্ত্রী প্রথমে তাদের ইসবগুলের শরবতের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসার ওষুধ বলে খাওয়ান। হত্যার শিকার মোক্তার, তার স্ত্রী ও তার ছেলে ওষুধের প্রভাবে ঘুমিয়ে পড়লে সাগর ও তার স্ত্রী মিলে প্রথমে মোক্তারের কক্ষে গিয়ে তার হাত ও পা বাঁধেন। পরে তারা মোক্তারের স্ত্রীর হাত-পা বাঁধেন। এরপর তারা বাসা তল্লাশি করে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা পান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এই দম্পতি বটি দিয়ে প্রথমে মোক্তারের গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করেন। এরপর অন্য কক্ষে গিয়ে তার স্ত্রী ও ছেলেকে একইভাবে হত্যা করেন।
যাওয়ার সময় তারা মোক্তারের হাতে থাকা আংটিটি নিয়ে যান। সেই বাসা থেকে বের হয়ে তারা উভয়ে ভিন্নপথে রিকশাযোগে গাজীপুরের মৌচাকে তার শ্বশুরবাড়ি (ভাড়া বাসায়) যান। সেখানেই অবস্থান করতে থাকেন। হত্যার ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রচার হলে তারা দুজন একসঙ্গে আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপনে থাকাকালে গাজীপুরের শফিপুর এলাকা থেকে র্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার সাগর মাদকাসক্ত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন পেশার আড়ালে চুরি ও ছিনতাই করতেন। এর আগে ২০২০ সালে টাঙ্গাইলের মধুপুরে ২০০ টাকার জন্য একই পরিবারের চারজনকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে একই কায়দায় গলাকেটে হত্যা করেন সাগর। সেই হত্যার ঘটনায় তিনি গ্রেপ্তারও হন। কিন্তু প্রায় সাড়ে তিন বছর কারাভোগ করে ২০২৩ সালের জুন মাসে জামিন পেয়ে গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় তার শ্বশুরের ভাড়া বাসায় কিছু দিন অবস্থান নেন।
দীর্ঘদিন জেলহাজতে থাকায় তার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তিনি রাজমিস্ত্রি, কৃষি শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে ঢাকা, সিলেট ও টাঙ্গাইলে অবস্থান করেন। সুযোগ বুঝে চুরি ও ছিনতাই করতেন। তিনি একটি জেলায় বেশি দিন অবস্থান করতেন না।
টিআর/
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ