এশিয়া
মোবাইলের আলোতে চলছে গাজার চিকিৎসা
ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে আমাদের গাজা উপত্যকা। বিশেষ করে আমাদের স্বাস্থ্যনীড়। ইসরাইলে বিবেকশূন্য হামলায় সৃষ্ট বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও জ্বালানির তীব্র ঘাটতিতে গাজার সব স্বাস্থ্য সুবিধা প্রায় বন্ধের পথে। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছেন শত শত রোগী। জ্বালানি সংরক্ষণে হাসপাতালের লাইটগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ কিছুটা বাঁচানো যায় কিনা সেই চেষ্টায় আছেন হাসপাতালের কর্মীরা।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের নাসের হাসপাতালের শুধু নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে এখনও আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের কিছু কিছু বিভাগে মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে চিকিৎসা কাজ চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা। জ্বালানি নেই, বিদ্যুতে নেই, ওষুধ নেই-এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই লাশের বহরে আরও বাড়বে আমাদের প্রিয়জনের মুখ!
শুধু বেসামরিক স্থাপনা বা হাসপাতালগুলো নয়-গুরুতর রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সগুলোকেও সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরাইল। গত ১৪ দিনের হামলায় ২৩টি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও দুঃখজনক হলো, ধ্বংস করে দিয়েছে হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তাগুলোও। যার কারণে অনেক আহতই হাসপাতালে পৌঁছাতে পর্যন্ত পারছেন না।
স্বাস্থ্যকর্মীদেরও ছাড় দিচ্ছে না ইসরাইল। ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৭০ জন। আমাদের হাতে আসা শেষ রিপোর্ট পর্যন্ত (বৃহস্পতিবার) ১৯টি স্বাস্থ্য সুবিধাকেন্দ্রকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে গাজা উপত্যকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক পরিচর্যা ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত ১৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। চরম বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও জ্বালানি সংকটের কারণে জাবালিয়ার ইয়েমেন আল-সাইদ হাসপাতালে প্রাথমিক পরিষেবাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বারবার হামলার শিকার হয়ে চারটি হাসপাতাল তাদের পরিষেবা বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। বেইট হনুন হাসপাতাল, ডোরা শিশু হাসপাতাল, কারামা হাসপাতাল ও আন্তর্জাতিক চক্ষু হাসপাতাল। আমাদের (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হলো স্থানাভাব বা শয্যা সংকট। বর্তমানে হাসপাতালগুলোর ১৫০ শতাংশের বেশি শয্যায় সক্ষমতার চেয়েও অতিরিক্ত রোগী। নিরুপায় হয়ে রোগীরা হাসপাতালের মেঝে বা ওয়ার্ড করিডরের গলিতেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এত বাঁধা-সংকট সত্ত্বেও ১৮টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক পরিচর্যা পরিষেবা প্রদান চালিয়ে যাওয়ার ওপর দৃষ্টি দিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যদিও এসব হাসপাতালে কোনো ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী অথবা জ্বালানির মজুত নেই।
আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সব চিকিৎসা ও মানবিক প্রতিষ্ঠানকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। এখনও জানাচ্ছি। পাশাপাশি ইসরাইল বাহিনীকে অবিলম্বে চিকিৎসাকর্মী, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্সের মতো বেসামরিক জায়গাগুলোতে হামলা বন্ধেরও আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। আন্তর্জাতিক আইন ও মৌলিক মানবিক বাধ্যবাধকতা যেন ইসরাইল মেনে চলে তা নিশ্চিত করতে দেশটির ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত ইসরাইলের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪ হাজার ১৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে ১ হাজার ৬৬১ জন শিশু। আহতের সংখ্যা ১৩ হাজার ২৬০ জন। আমি নিশ্চিত এ সংখ্য আরও বাড়বে। কিন্তু আমরা তা চাই না। প্রতিদিন এত লাশ আর দেখতে পারছি না আমরা। এত চিৎকার, হাহাকার আর শুনতে পারছি না।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/