বাংলাদেশ
সোমবার ইমাম সম্মেলন, উদ্বোধন হচ্ছে আরও ৫০ মডেল মসজিদ
রাজধানীর পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলা মাঠে লাখো ইমামের সম্মেলন ঘটাতে যাচ্ছে সরকার। এ সম্মেলনে সশরীরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে সেখানে ষষ্ঠ দফায় আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার (৩০ নভেম্বর) এ সম্মেলন হবে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর ) ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানায়। জানা যায়, জাতীয় ইমাম সম্মেলনে সারাদেশ থেকে প্রায় এক লাখ ইমামকে আনা হচ্ছে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি থাকবেন মসজিদে নববির ইমাম শায়খ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল বুয়াইজান। সম্মেলনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের পুরস্কৃত করা হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জানা গেছে, দেশে ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৮০ হাজার আলেম-ওলামা। সরকার তাদের প্রতি মাসে সাড়ে ৫ হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত সম্মানী ভাতা দিয়ে থাকে। এই শিক্ষকেরা ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এর বাইরেও কয়েক হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমাম আছেন। সেই ইমামদের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, ‘৩০ অক্টোবর (সোমবার) ইমাম সম্মেলন হবে। সেখান মসজিদে নববির ইমাম আসবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। আমরা আশা করছি এক লাখের মতো ইমাম সম্মেলনে আসবেন।
ওই অনুষ্ঠানে ষষ্ঠ দফায় আরও ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে সচিব বলেন, পূর্বাচল ভেন্যু থেকে আমরা দুটি মডেল মসজিদে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবো। একটি মডেল মসজিদ পাবনায় ও আরেকটি কুড়িগ্রামে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মডেল মসজিদ দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় স্থাপন করতে নয় হাজার ৪৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ২০১৭ সালে গ্রহণ করে সরকার। ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক (২য় সংশোধিত) প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। গণপূর্ত অধিদপ্তর মসজিদগুলো নির্মাণ করছে।
এরই মধ্যে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম পর্যায়ে, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে, ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ তৃতীয় পর্যায়ে, গত ১৭ এপ্রিল চতুর্থ পর্যায়ে এবং গত ৩০ জুলাই পঞ্চম পর্যায়ে ৫০টি করে মোট ২৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়ে মোট ৩০০টি মডেল মসজিদ চালু হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, প্রতিটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ৪৩ শতাংশ জমির ওপর তিন ক্যাটাগরিতে নির্মিত হচ্ছে। এরমধ্যে জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে চারতলা, উপজেলা পর্যায়ে তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এ-ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহর ও ৩টি সিটি করপোরেশনে ৫টিসহ মোট ৬৯টি চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। বি-ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৯টি (নবগঠিত ৪টি উপজেলাসহ) এবং সি-ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় চারতলা বিশিষ্ট (নিচতলা ফাঁকা থাকবে) ১৬টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।
চারতলাবিশিষ্ট প্রতিটি মসজিদে একসঙ্গে এক হাজার ২০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। অন্যদিকে, তিনতলাবিশিষ্ট মডেল মসজিদগুলোয় একত্রে ৯০০ জন মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
মসজিদগুলোতে নারী ও পুরুষদের জন্য পৃথক অজু ও নামাজ কক্ষ, ইমাম প্রশিক্ষণকেন্দ্র, হেফজখানা, গণশিক্ষা কেন্দ্র, গবেষণাকেন্দ্র, পাঠাগার, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, জানাজার ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন, লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, ই-কর্নার, বিদেশি পর্যটকদের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের থাকার ব্যবস্থাসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মডেল মসজিদ উদ্বোধন হবে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন, গোপালগঞ্জ সদর, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল, মাদারীপুরের শিবচর, নরসিংদীর শিবপুর, মুন্সিগঞ্জ সদর, শরীয়তপুরের জাজিরা, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, জয়পুরহাট সদর, বগুড়ার দুপচাচিয়া ও গাবতলী, পাবনার সাথিয়া সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রাজশাহীর বাঘা, কুড়িগ্রাম সদর ও রৌমারি, দিনাজপুর সদর, ঠাকুরগাঁও সদর, নীলফামারী সদর, ডোমার, কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুর, বরিশালের বাকেরগঞ্জ ও মেহেন্দিগঞ্জ, বরগুনার তালতলী, ভোলার মনপুরা ও পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলায়।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ