খুলনা
বীমার টাকার জন্য নিজের দোকানে আগুনের অভিযোগ
বীমা কোম্পানীর কাছ থেকে টাকা পেতে গাংনী বাজারের জিয়া ইসলাম বাবু নামের এক বেডিং ব্যাবসায়ীর বিরুদ্ধে নিজের দোকানে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। দোকানে বেশ কিছু কাপড় একত্রিত করে আগুন দেবার সময় বাহির থেকে ধুয়া দেখে জিয়াকে ধাওয়া করলে পালিয়ে যায় সে।
সোমবার দুপুর ১টার দিকে এঘটনা ঘটে। এঘটনায় গাংনীর ব্যাবসায়ীদের মধ্যে বিরাজ করছে আগুন আতংক।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, গাংনী বাজারের জিয়া বেডিং এর মালিক জিয়া ইসলাম ইসল্যান্ড ইন্সুরেন্স কোম্পানী নামক একটি ইন্সুরেন্স কোম্পানীর কাছে বীমা করেছিলেন। উক্ত বীমা কোম্পানীর কাছ থেকে সুবিধা নিতে নিজের দোকানে আগুন দিলে বাহিরের ব্যবসায়ীরা ধোঁয়া দেখে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এসময় ওয়েল্ডিং ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন দেখতে পেয়ে তাকে ধাওয়া করলে জিয়া পালিয়ে যায়।
পার্শ্ববর্তী কসমেটিক্স ব্যবসায়ী আকমল হোসেন ও বাবু জানান, ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে। এখানকার তিন ব্যাবসায়ীকে আইনের আওতায় আনা হলে অগ্নিকান্ডের সত্যতা উদঘাটন হবে। আজকের ঘটনায় জিয়া তার ব্যক্তিগত স্বার্থে আগুন ধরিয়েছে বলে মন্তব্য অনেকের।
বাজারের আরেকজন ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, জিয়া কিছু কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমন ঘটনা আমি দেখে তাকে ধাওয়া করলে সে পালিয়ে যায়।
ব্যবসায়ী জিয়া ইসলামের বড় ভাই আরিফুল ইসলাম বলেন, পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ীরা যে কথা বলছেন তারা নিশ্চয় মিথ্যা বলছেন না। তবে যদি এমন ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় তাকে আইনের আওতায় আনা উচিৎ। জিয়াউল ইসলাম পলাতক থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম সপন বলেন, গত ৭ তারিখে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৫টি দোকান পুড়ে অনেক টাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এটি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বেদনাদায়ক ঘটনা। তারপরেও জিয়া বেডিং এর মালিক জিয়া আজ নিজের দোকানে নিজেই আগুন দেয়ার কথা আমরা শুনেছি। তবে সে পলাতক রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা সন্দেহজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। আইনগত সহায়তা পেতে বাজার কমিটির পক্ষ থেকে সকল সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান বলেন, একটি ঘটনার বেদনা ভুলতে না ভুলতেই জিয়া নামের একজন ব্যাবসায়ী নিজের দোকানে অগ্নিসংযোগ করে ব্যক্তি সুবিধা নেবার চেষ্টা করেছে। তার বিরুদ্ধে দতন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, রোববার দুপুরে গাংনী পৌর শহর বাসস্টান্ডে ৫টি দোকানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অন্ততঃ অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দোকান মালিকেরা। কি কারণে এ অগ্নিকান্ডের সুত্রপাত তা অনুসন্ধান করছে ফায়ার সার্ভিস। সোহাগ বস্ত্রালয় নামের একটি লেপ তোশকের গুদামে আগুনের সুত্রপাত ঘটে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে পাশের আকমল স্টোর, মনিরুল বস্ত্রালয় জিয়া বেডিং ও ঢাকা বেডিংসহ কয়েকটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। সংবাদ পেয়ে গাংনী ও মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘন্টাব্যাপি চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এস
খুলনা
কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালাল অর্ধশতাধিক আসামি
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক আসামি পালিয়েছে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনার পর সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা গণমাধ্যমে বলছেন, ১২-১৩ জনের মতো আসামি পালিয়েছেন। পলাতকদের তালিকা করার পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জামিন পান। দুপুর আড়াইটার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে বের হতে হট্টগোল শুরু করেন কারাবন্দীরা। এ সময় কারারক্ষীরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালান। তবে এর আগেই অর্ধশত আসামি পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কারাগারের জেলার আবু মুসা গণমাধ্যমে জানান, কারাগার থেকে ঠিক কত জন কয়েদি পালিয়ে গেছে তা সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
এএম/
খুলনা
মাগুরায় ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ১০
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্যসহ ১০ জন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করলে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী নিহত হন।
জেলা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আমর প্রশাদ বিশ্বাস জানান, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেডএস/
খুলনা
কনস্টেবল সুমন হত্যায় মামলা, অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি ১২০০
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামী হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার নেই বলে জানান লবণচরা থানার ওসি মমতাজুল হক।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শুক্রবার বিকেলে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত সুমন ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় পিটুনিতে নিহত হন তিনি। সমুনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তাদের ৬ বছর বয়সি স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয় পুলিশ জানায়, বিকেলে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরে আবার সোনাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন গুরুতর আহত হন। পরে রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৩০ সদস্য।
এসি//