বাংলাদেশ
গরমের খাদ্যাভ্যাস
শীত চলে গিয়ে প্রকৃতিতে আগমন ঘটেছে গ্রীষ্মের। আমাদের ষড়ঋতুর এদেশে এখন আর আগের মতো ঋতু বৈচিত্র দেখা যায় না। আর যা অনুভব করা যায় তা হলো গরমের তীব্র দাবদাহ। দিনে প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল জনজীবন। সন্ধ্যার পর হঠাৎই হয়তো শীতল বাতাসে জুড়িয়ে যাচ্ছে প্রাণ। আর দিনে সূর্য়ের তীব্রতা যেন পুড়িয়ে দিচ্ছে শরীরকে। আর এই হঠাৎ ঠাণ্ডা আর গরমের কারণেই দেখা দিতে পারে নানা অসুখ। তাই এ আবহাওয়াতে খাবারের তালিকায় সামান্য পরিববর্তন কিন্তু সুস্থতাকেই দাওয়াত দেয়। সেইসঙ্গে সতেজ রাখতে পারবেন নিজেকে।
এ সময় খাদ্য তালিকায় শাকসবজি, তাজা খাবার, ফলের রস, মাছ, সালাদ ও মৌসুমি ফল রাখা উচিত। লক্ষ্য রাখতে হবে, তরকারি ও শাকসবজিতে মসলা এবং ঝালের পরিমাণ যতটা সম্ভব কম রাখা যায়। ঝাল ও অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খেলে পেটে গ্যাসসহ বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দেয়। এছাড়া বাসি ও বাইরের খোলা খাবার এড়িয়ে চলাও শরীরের জন্য ভালো।
এ সময়ের জন্য একটা নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা তৈরি করে মেনে চলাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সকালের নাস্তা: নাস্তা হিসেবে দই-চিড়া, ছোলা ভেজানো, ছাতু, রুটি, পাউরুটি, ভাত, ডাল বা তরকারি। এর সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে যে কোনও ফল।
মধ্যাহ্ন ভোজন: দুপুরে যারা ভারি খাবার গ্রহণ করেন তাদের জন্য ভাত, প্রচুর শাকসবজি, ছোট-বড় মাছের হালকা রান্না, ডালসহ গোশত, ডিম অভ্যাস মতো খেতে পারেন। যাই খাওয়া হোক না কেন সালাদ কিন্তু থাকবেই।
সন্ধ্যার খাবার : সন্ধ্যায় শরবত বা চা-কফির পাশাপাশি রসালো ফল— তরমুজ, জামরুল, শসা খেতে পারেন। সে সময় দুধের তৈরি পরিমাণ মতো মিষ্টিও খেতে পারেন।
নৈশভোজ : গরমের সময় রাতের খাবার হবে খুবই সাধারন। ভাত বা রুটি, সঙ্গে মাছ, সবজি, ডাল বা দুধ-আম খাওয়া যেতে পারে অল্প পরিমাণে।
শোয়ার আগে : এ সময় এক গ্লাস পানি বা হালকা শরবত বা অভ্যাস থাকলে এক গ্লাস দুধ শরীরের জন্য বেশ উপকার দিবে।
এছাড়াও কিছু টিপস মনে রাখা জরুরি-
একজন স্বাভাবিক পূর্ণ বয়সের মানুষের গরমকালে কমপক্ষে তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার পানীয় পানের প্রয়োজন। পানি ছাড়াও ঘরে তৈরি ফলের শরবত বা জুসও খাওয়া যেতে পারে। লেবুর শরবত ও ডাবের পানি সকলের স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী। এ ছাড়া ওরস্যালাইন বা গ্লুকোজও খাওয়া যেতে পারে। এগুলো দেহ ঠাণ্ডা রাখবে। গরমে ঘামের সঙ্গে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়, যার জন্য দেহ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এ ঘাটতি পূরণে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। শুধু পিপাসা পেলেই পানি পান করবেন, এমনটা নয়। একটু পরপর এমনিতেই পানি পান করুন।
গরমে এমন খাবার খেতে হবে যা শরীরের ভিতর থেকে রাখবে ঠাণ্ডা। যেমন বিভিন্ন রকমের রসালো ফল, দই।
সালাদ গরমের জন্য একটি উপাদেয় খাবার। দই, শসা, টমেটো, গাজর, কাঁচা পেঁপে, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, পেঁয়াজ, লেবু, পেয়ারা ইত্যাদি দিয়ে সালাদ তৈরি করে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যাবে।
গ্রীষ্মকালের সবজি মোটামুটি সবগুলোই ভালো। এ গরমে বেশি করে সবজি খেতে হবে।
শরীরকে ঠান্ডা রাখতেই যেন প্রকৃতিতে এ সময় পাওয়া যায় প্রচুর রসালো ফল। পেঁপে, তরমুজ, আম,জাম,কাঁঠাল, পেয়ারা, লিচু, ফুটি, বাঙি এ ফলগুলো খেলে শরীর ত্বক উভয়ই ভালো থাকবে।
যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন এ সময়:
গরমে অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার এবং ফাস্টফুড এড়িয়ে চলাই ভালো এ ধরনের খাবার সহজে হজম হতে চায় না।
শুকনা ফল শরীরকে ডিহাইড্রেটেড করে দেয় তাই এ সময় এগুলো পরিহার করাই শ্রেয়।
ক্যাফেইনজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমানে চিনি থাকে যা এ গরমে শরীরকে অসুস্থ করে ফেলতে পারে।
অনন্যা চৈতী
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ