খুলনা
৭২ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার: ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২ ভারতীয়র যাবজ্জীবন
যশোর জেলার শার্শা সীমান্ত থেকে ৭২ কেজি ৪০০ গ্রাম স্বর্ন উদ্ধার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিনজননের মৃত্যুদণ্ড এবং দুই ভারতীয় নাগরিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মা্মলায় অপর চার আসামির প্রত্যেককে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার(১৬ নভেম্বর)যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিতদের মধ্যে ৬ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
য়শোর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের এপিপি মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, ‘যশোর অঞ্চলের এই যাবতকালের সবচেয়ে বড় সোনা চালানের মামলায় দৃষ্টান্তমূলক রায় হয়েছে। এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।’
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী আরিফুল ইসলাম শান্তি গণমাধ্যমকে বলেন,‘সরকার যে দ্রুত বিচার ব্যবস্থা কার্যকর করেছে, এতে বিচারকরা সঠিকভাবে মামলা তদন্ত করতে পারছে না। ফলে আসামিপক্ষ প্রকৃত রায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা এই রায়ের বিপক্ষে আপিল করব।’
যারা মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন তারা হলেন- যশোরের শার্শার শিকারপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার তোফাজ্জেল হোসেন তরফদারের ছেলে মহিউদ্দিন তরফদার, জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেরে মুজিবুর রহমান।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া দুই ভারতীয় নাগরিক হলেন-পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বাগদা থানার গাংগুলিয়া গ্রামের নুর জালাল মণ্ডল এবং একই জেলার গোকর্ণী গ্রামের মাঝের পাড়ার আলী হোসেন সরদারের ছেলে মাসুদ রানা।
১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্তরা হলেন-শার্শার আব্দুল মোমিনের ছেলে ইমরান হোসেন, আব্দুল কাদেরের ছেলে রুবেল হোসেন, রামচন্দ্রপুর গ্রামের নওসাদ আলীর ছেলে কবির হোসেন ও ওরফে মেছের আলীর ছেলে এবং যশোরের শার্শার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল মণ্ডল ওরফে মোল্যা ওরফে লিদু।
মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট রাতে শার্শার শিকারপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্য হাবিলদার মুকুল হোসেন নিয়মিত টহলের সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন একদল চোরাকারবারী সোনা নিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাবে। এরপর তারা নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের সীমান্ত পিলারের পাশে অবস্থান নেন। রাত ১০টার দিকে কয়েকজন লোক নারিকেলবাড়িয়া মাঠের মধ্য দিয়ে ভারতের দিকে যাওয়ার সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করে বিজিবি।
এ সময় মহিউদ্দিন নামে একজনকে আটক ও দুজন ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায়। মহিউদ্দিনের কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ২২৪ পিস সোনার বার ও ফেলে যাওয়া দুইটি ব্যাগ থেকে ৪০০ পিস সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৭২ কেজি সাড়ে ৪০০ গ্রাম। পরদিন শিকারপুর বিওপির বিজিবির হাবিলদার মুকুল হোসেন বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে চোরাচালান দমন আইনে শার্শা থানায় মামলা করেন।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে সিআইডি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়। এ মামলার তদন্তকালে আটক আসামিদের দেওয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকায় ওই ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে দণ্ড ঘোষণার পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
খুলনা
কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালাল অর্ধশতাধিক আসামি
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক আসামি পালিয়েছে গেছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কারারক্ষীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এই ঘটনার পর সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।
তবে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা গণমাধ্যমে বলছেন, ১২-১৩ জনের মতো আসামি পালিয়েছেন। পলাতকদের তালিকা করার পর বিস্তারিত জানানো যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী জামিন পান। দুপুর আড়াইটার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। তাদের সঙ্গে বের হতে হট্টগোল শুরু করেন কারাবন্দীরা। এ সময় কারারক্ষীরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালান। তবে এর আগেই অর্ধশত আসামি পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া কারাগারের জেলার আবু মুসা গণমাধ্যমে জানান, কারাগার থেকে ঠিক কত জন কয়েদি পালিয়ে গেছে তা সঠিক হিসাব জানা যায়নি।
এএম/
খুলনা
মাগুরায় ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ১০
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্যসহ ১০ জন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এ সংঘর্ষে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকা থেকে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে গেলে পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। ঘটনাস্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করলে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদেী হাসান রাব্বী নিহত হন।
জেলা শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাব্বি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আমর প্রশাদ বিশ্বাস জানান, আহত তিন পুলিশ সদস্যসহ ১০ জনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেডএস/
খুলনা
কনস্টেবল সুমন হত্যায় মামলা, অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি ১২০০
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় খুলনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন ঘরামী হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
লবণচরা থানার এসআই মোস্তফা সাকলাইন বাদী হয়ে শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে লবণচরা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার নেই বলে জানান লবণচরা থানার ওসি মমতাজুল হক।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শুক্রবার বিকেলে ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছে।
নিহত সুমন ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায়। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরীর বয়রা এলাকায়। তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় পিটুনিতে নিহত হন তিনি। সমুনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তাদের ৬ বছর বয়সি স্নিগ্ধা নামে এক মেয়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত্তি দিয় পুলিশ জানায়, বিকেলে খুলনায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরে আবার সোনাডাঙ্গা এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষের এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সুমন গুরুতর আহত হন। পরে রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জানা গেছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের আরও ৩০ সদস্য।
এসি//