ফুটবল
শক্তিশালী লেবাননকে রুখে দিলো বাংলাদেশ
প্রথমার্ধে গোল মিসের মহড়ায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধেও একই ধারায় মনে হচ্ছিল গোলের দেখা আর পাবে না লাল-সবুজের দল। এরই মধ্যে রক্ষণের ভুলে গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। এতে টানা দ্বিতীয় হারের শঙ্কা জাগছিল তখন সমর্থকদের মনে। কিন্তু দলের বিপর্যয়ে ত্রাতা হয়ে এলেন দলে ফেরা শেখ মোরসালিন। তার দুর্দান্ত গোলে শক্তিশালী লেবাননকে রুখে দিয়েছে জামাল ভূঁইয়ারা।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বসুন্ধরার কিংস অ্যারেনায় ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে ৭৯ ধাপ এগিয়ে থাকা লেবাননের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। দারুণ খেলতে থাকা বাংলাদেশ ৬৭ মিনিটে মাজেদ ওসমানের গোলে পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু ৭২ মিনিটে শেখ মোরসালিন দুর্দান্ত এক গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। এরপর আর কোনো গোল না হলে এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ঠ থাকতে হয় হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যরা।
এদিন কার্ড সমস্যায় বাংলাদেশ দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় রাকিব হোসেন ও সাদ উদ্দিনকে ছাড়াই খেলতে নেমেছে। ফলে ম্যাচের প্রথম দিকে কিছুটা চাপে ছিল স্বাগতিকরা। লেবানন বল পজিশন ও আক্রমণে এগিয়ে ছিল। লেবানিজদের উচ্চতায় বাংলাদেশের ফুটবলাররা খানিকটা খাবি খেয়েছে।
তবে ম্যাচের সময় যত গড়িয়েছে ততই বাংলাদেশ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। মদকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা থেকে পুনরায় একাদশে ফেরা শেখ মোরসালিন আজ ভালো পারফরম্যান্সই করেছেন প্রথমার্ধে। ফাহিম-মোরসালিনের সমন্বয়ে বাংলাদেশ বাংলাদেশ কয়েকটি সুন্দর আক্রমণ রচনা করে।
মোরসালিন নিজে গোল যোগানের চেষ্টা করেছেন আবার নিজও সুযোগ পেয়েছিলেন। যদিও তিনি দুই দফায় মিস করেছেন। প্রথমার্ধে নবম মিনিটে বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠে বক্সে ফাহিমের উদ্দেশে ক্রস নেন মোরসালিন। তবে সেটি দখলে নিতে পারেননি এ ফরোয়ার্ড। বলের নাগাল পেলে গোলের সহজ সুযোগ তৈরি হতো তার সামনে।
১৬ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে সোহেল রানার নেয়া জোরালো শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বেরিয়ে যায়। সাত মিনিট পর কর্নার থেকে জামালের ক্রস গোলমুখে জোরালো হেড নিয়েছিলেন বিশ্বনাথ। তবে সেটি গ্লাভসবন্দী করে নেন লেবাননের গোলরক্ষক।
পরের মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের। বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠে বক্সে সোহেলকে পাস দেন মোরসালিন। কিন্তু এ মিডফিল্ডার গোলের উদ্দেশে শট নেয়ার আগেই প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডারের বাধা পড়ে যান। বাংলাদেশ গোলের আরেকটি দারুণ সুযোগ মিস করে ৩৩ মিনিটে।
ডান প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠে ফাহিম বক্সে ক্রস নেন মোরসালিনের উদ্দেশে। তবে এ মিডফিল্ডার বল দখলে নিতে ব্যর্থ হন। ৪২ মিনিটে সতীর্থের ক্রস মোরসালিন বক্সে দখলে নিলেও পড়েন অফসাইডের ফাঁদে।
দুই মিনিট পর আবারো ব্যর্থ মোরসালিন। ডান প্রান্ত থেকে ফাহিমের পাস ঠিক গোল বারের সামনে পেলেও বারের উপরে উড়িয়ে মারেন তিনি। অথচ আলতো ছোঁয়াতেই বল জালে জড়াতে পারতেন তিনি। তার সামনে গোলরক্ষক ছাড়া ছিল না আর কোনো বাধা। তাতে হতাশা নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণ আর গোলরক্ষক শ্রাবণের ভুলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৬৭ মিনিটে লেবাননকে এগিয়ে দেন মাজেদ উসমান। তবে সে গোল শোধ করতে খুব একটা সময় নেয়নি বাংলাদেশ। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া দুর্দান্ত এক শটে ৭২ মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান মোরসালিন।
তবে ৮৯ মিনিটে বক্সে পাওয়া দারুণ সুযোগটি তিনি মিস না করলে হয়তো জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারতো লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। স্বাগতিক শিবিরে আক্ষেপ বাড়িয়েছেন বদলি নামা গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণও।
এএম/
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//