ফুটবল
ঘটনাবহুল ম্যাচে ব্রাজিলকে হারালো আর্জেন্টিনা
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার চরম উত্তেজনাকর লড়াই। খেলা শুরুর আগেই গ্যালারিতে দুইদলের সমর্থকদের হাতিহাতির কারণে খেলা যথাসময়ে শুরু হয়নি। যে কারণে, ম্যাচটি মাঠে গড়াবে কিনা, সেটি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত ভক্তসমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণে মাঠে নেমেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলতে নেমে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। দক্ষিণ আমেরিকা কোয়ালিফায়ারে এটি ব্রাজিলের টানা তৃতীয় হার। অপরদিকে ১ ম্যাচে হারের আবার জয়ে ফিরেছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
ঘরের মাঠে মেসির আর্জেন্টিনা বিপক্ষে মাঠে নামে ব্রাজিল। শুরু থেকেই মাঠে দেখা যায় উত্তেজনা। আক্রমনাত্মক খেলা শুরু করে দুই দল। প্রথমার্ধে হাড্ডিহাড্ডি লড়াইয়ের পরও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি কোনো দল। তবে বেশকিছু সুযোগ তৈরি করেও ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ৩৯তম মিনিটে দারুন সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিলের ডিফেন্ডার মারকুইনিস। রাফিনহার ক্রস থেতে তার করা দুর্দান্ত হেডটি গোলপোস্টের বাঁপাশ দিয়ে চলে যায়।
এর ৫মিনিট পর আবারও গোলের সুযোগ পায় সেলেসাওরা। এবার গোল মিস করেন গাব্রিয়েল মার্টিনেলি। গোলপোস্টের বাঁপাশ ফাঁকা পেয়েও তিনি শটটি করেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজের হাতে।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে দুইপক্ষের খেলোয়াড়রা আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে। অতিরিক্ত ৫ মিনিটের মধ্যে ৪টি ফাইল করে দুইদল। অবশেষে গোলশূন্য থেকেই বিরতিতে যায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমেও বেশকিছু ফাউল দেখা যায়। কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে অবশেষে জয়সূচক একমাত্র গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর করা কর্নার শট থেকে দুর্দান্ত হেডে ব্রাজিলের জালে বল জড়িয়ে দেন আল বিসেলেস্তা ডিফেন্ডার নিকোলাস ওটামেন্ডি। এতেই ব্রাজিলের হতাশ করে আল বিসেলিস্তারা।
ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণ করে দলকে সমতায় ফেরাতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিলের মিডফিল্ডার ব্রুনো গুমারায়েস। এর ছয় মিনিট পর গোল মিসের মহড়ায় হতাশার মধ্যে বড় দুঃসংবাদ পায় ব্রাজিল। উগ্র আচরণের কারণে লালকার্ড দেখেন বদলি খেলোয়াড় জুয়েলিন্টন। ম্যাচের বাকি ১৬ মিনিট ১০ দলের দল নিয়ে খেলতে হয়েছে ফার্নান্দো দিনিজের শিষ্যদের।
ইনজুরি সময়েও আক্রমণের পর আক্রমণ করে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই হয় ব্রাজিল। অবশেষে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে হারতে হযেছে সেলেসাওদের। ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার নেইমার জুনিয়র। শেষ মুহূর্তে দলকে গিয়েছিলেন উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দক্ষিণ আমেরিকা কোয়ালিফায়ারে (কনমেবল) ৬ ম্যাচ খেলে ৫ জয় আর ১ হারে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে আর্জেন্টিনা। অপরদিকে সমান ম্যাচ খেলে ২ জয়, ৩ হার আর ১ ড্রতে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ব্রাজিল।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//