বাংলাদেশ
নৌকার মনোনয়ন পেলেন না মাহি-রুবেলসহ ৬ চিত্রতারকা
আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। এতে ঢালিউডের আলোচিত চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও সিমলাসহ ৬ চিত্রতারকা আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি। কুষ্টিয়া-২ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি আওয়ামী লীগ।
রোববার(২৬ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়েজিত সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ২৯৮ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
অভিনেত্রী সিমলা: এবারের নির্বাচনে লড়তে ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মনোনয়ন কিনেছিলেন ‘ম্যাডাম ফুলি’ খ্যাত চিত্রনায়িকা সামসুন্নাহার সিমলা। তবে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাই। গত ২১ নভেম্বর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন সিমলা।
ওইসময় তিনি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধা পরিবারের সন্তান। দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে আগে কখনো সরাসরি রাজনীতির মাঠে কাজ করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য তরুণদের নিয়ে কাজ করতে চান। সে কারণেই নির্বাচনে আগ্রহী হয়েছি।’
মাহিয়া মাহি: শুধু সিমলাই নন আলোচনায় থেকেও নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি ঢাকাই চলচ্চিত্রের আরেক অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি।
চিত্রনায়িকা মাহি গত কয়েক বছর ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। সম্প্রতি অভিনয় ছেড়ে পুরোদমে রাজনীতির মাঠে নামেন। গত ১৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শারমিন আক্তার নিপা (মাহিয়া) নামে ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। ওই সময় মাহি বলেছিলেন, তৃণমূলের মতামত নেওয়া হলে দল আমাকে মনোনয়ন দেবে, ইনশাআল্লাহ।’
তবে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি মাহি। এই আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা শাখা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান।
সিদ্দিকুর রহমান: ছোট পর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেতার নৌকার মাঝি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না। ঢাকা ১৭ আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাতকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে, টাঙ্গাইল-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক।
ছোটপর্দার নায়ক সিদ্দিকুর রহমান নাটকে অভিনয় করে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছেন বেশ আগেই। অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাণেও দেখা গেছে তাকে। এছাড়া রাজনীতির মাঠেও বেশ সক্রিয়। এর আগে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকার পরও ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি।
চিত্রনায়ক রুবেল: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বরিশাল-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন চিত্রনায়ক মাসুম পারভেজ রুবেল। তবে এ আসন থেকে দলটির মনোনয়ন পাননি তিনি। তার জায়গায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সরদার মো. খালেদ হোসেন।
গত ২০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নির্ধারিত বুথ থেকে ফরম সংগ্রহ করেন রুবেল। ওইসময় ঢালিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় এই অভিনেতা বলেছিলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকেই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে আসছি। অভিনয় জগতের অন্যদের মতো আমি নতুন করে রাজনীতিতে আসিনি। আমার শেকড়ই আওয়ামী লীগের।’
শাকিল খান: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ঢালিউডের একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক শাকিল খান।
গত ১৮ নভেম্বর বিকেলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার পরের দিন শাকিল খান গণমাধ্যমকে বলেন,‘আমি শতভাগ আশাবাদী। আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেবেন। আর মনোনয়ন পেলে রামপাল-মোংলা আসন থেকে আমি নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।’
তবে শাকিলের এই ইচ্ছে এবার পূরণ হলো না। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী হাবীবুন নাহার।
রোকেয়া প্রাচী: আসছে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লড়তে নৌকার মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন অভিনয়শিল্পী, সংগঠক ও রাজনীতিবিদ রোকেয়া প্রাচী। তবে তিনিও মনোনয়ন পাননি। নৌকার মাঝি হয়েছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা) সভাপতি মো.আবুল বাশার।
গত ২০ নভেম্বর ফেনী-৩ আসনের জন্য মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন রোকেয়া প্রাচী। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক চর্চায় মনে করি যে রাজনীতি যাঁরা সক্রিয়ভাবে করেন, তাঁদেরই নির্বাচনে আসা উচিত। যারা রাজনৈতিক কর্মী, তাদের তো স্বপ্নই থাকে সংসদে যাওয়ার। আমি আমার এলাকার জন্য আরও বেশি করে দায়িত্ব নিয়ে কিছু করতে চাই। কেউ যদি কিছুর বাস্তবায়ন করতে চায়, তাহলে অবশ্যই সংসদ সদস্য হলে সুযোগটা থাকে বেশি।’
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ