বাংলাদেশ
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান
মাথার ওপর পলেস্তারা আর ঢালাই খন্ড ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা। স্যাঁত স্যাঁতে আর জরাজীর্ণ ভবনে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। ভবনের ওপর পলিথিন দেওয়ার পরেও সামান্য বৃষ্টিতেই ঢালাই ধ্বসে পানি পড়ছে শ্রেণী কক্ষে। প্রচন্ড গরম কিংবা মেঘলা আকাশে নেই ফ্যান-লাইট চালানোরও সুবিধা। উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে করুণ চিত্র।
যে কোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনার শঙ্কা আর নানা ভোগান্তি নিয়ে স্কুলটিতে সাত দশকের পুরনো ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। নানা আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা তো বটেই, শিক্ষকরাও পাঠদানে মনোযোগী হতে পারছেন না।
১৯৩৪ সালে সহ শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে প্রতিষ্ঠিত প্রচীনতম বিদ্যালয়টি ২০১৮ সালে সরকারি করণ হয়। ৮৫০ জন শিক্ষার্থী ও ৩৩ জন শিক্ষক কর্মচারী জীবনের ঝুঁকি নিয়েই স্কুলটিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পাশাপাশি এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র স্কুলটি। কিন্তু নিরাপদ ভবন সংকটে যে কোনও মহূর্তে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫৪ সালে স্কুলটিতে একটি পাকা ভবন এবং পরে আরও একটি সেমি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কয়েক দশক পেরিয়ে যাওয়ায় দুটি ভবনই এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। পাকা ভবনটির পলেস্তারা ও ছাদের ঢালাই খসে খসে পড়ছে। ঢালাই খসে গিয়ে ভেতরের রড বেরিয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি চুয়ে পড়ছে। ভবনে নেই কোনও বৈদ্যুতিক সংযোগ। একই অবস্থা সেমিপাকা ভবনের। সেখানে টিনের চাল ফুটো, স্থানে স্থানে মটকা নেই। চালের আড়া ভেঙে গেছে। স্যাঁত স্যাঁতে দেওয়ালে নেই পলেস্তারা। এমন পরিস্থিতিতে ভবন গুলিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার জন্য উপজেলা কমিটির কাছে আবেদন দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শ্রতি রায় ও সোমাইয়া আক্তার জানায়, আমাদের বিদ্যালয়টি অনেক পুরাতন। শিক্ষার্থীর তুলনায় শ্রেণী কক্ষ অনেক কম। তাই আমাদের পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজির্ণ ভবণে ক্লাস করতে হচ্ছে। ক্লাস করার সময় পলেস্তারা খসে আমাদের গায়ে ও মাথায় পড়ে। এতে অনেকেই আহত হয়েছে। এই ভবনে ক্লাস করলে যে কোনও সময় আমাদের বড় ধরণের দুরঘর্টনা ঘটতে পারে। তাই জরুরী ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করে দিলে আমাদের ক্লাস করতে সুবিধা হবে। একই কথাই জানান ঐ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাধব কুমার জিৎ।
সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান,জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালটি কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যে একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রাচীন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলো ১৯৬০ সালে নির্মান করা হয়েছে। ইতিপূর্বেই ব্যবহারের অনু-উপযোগী। তারপরেও শ্রেণী কক্ষের অভাবে বাধ্য হয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসমস্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছেন এবং যেন সময় বড় ধরণের দুঘর্টনার আশংকা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখার জন্য আহবান জানানো হচ্ছে।
সহকারি শিক্ষক হোসনে আরা বেবি বলেন, ভবনগুলো দেখতে পাচ্ছেন এগুলো অনেক পুরানো। যেটা পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে ক্লাস নিতে হচ্ছে। যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে দৃষ্টি আকর্ষন করছি যেন এই ভবনগুলো দ্রæত ভাল ভবনের আত্তায় নিয়ে আসা।
এ বিষয়ে জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার জানান, এটি প্রাচীনতম একটি বিদ্যাপীঠ। এই বিদ্যালয়ে অনেক অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। সে তুলনায় আমাদের শ্রেণীকক্ষ সংকট। তাই পুরাতন জরাজীর্ণ আর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চলছে । পুরানো ভবনের নিচে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান করি এবং অত্যান্ত ঝুঁকির মধ্যে থাকি। কর্তৃপক্ষ যদি বিদ্যালয়ে নতুন করে ভবন নির্মান করে দেয় তাহেলে আমাদের এই সমস্যা সমাধান হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আব্দুল হাই জানান, বিদ্যালয়টির ভবনগুলো খুব ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই ক্লাস করছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে দ্রুত জানানো হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস জানান, জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের থেকে একটি আবেদন ইতিমধ্যে পেয়েছি। যা সংশ্লিষ্ট কাারগরি দপ্তরে মূল্যায়ণের জন্য প্রেরণ করা হয়ছে। তাছাড়াও কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মহাদয় ও অত্র অ লের মাননীয় সংসদ সদস্য পুরাতন ভবনটি পরিদর্শন করে কিছু নিদের্শনা দিয়ে গেছেন। সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এসআই/
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ