বাংলাদেশ
ঈদে ১৭শ টাকার শাড়ি ১৭ হাজার!
ঈদের বাজারে ১৬’শ থেকে ১৭’শ টাকা দামের শাড়ি বিক্রি করা হচ্ছে ১৭ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায়। গোপন এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মিরপুরের বেনারসি পল্লীতে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বেনারসি পল্লীতে পৌঁছায় ভোক্তা অধিকারের টিম। গোপন সূত্রে পাওয়া অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে প্রথমেই ‘মিতু কাতান শাড়ী ঘর’ নামের দোকানে যান ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এসময় দোকানে আমদানি করা শাড়ি এবং দেশি শাড়ির দাম জানতে চাওয়া হয়। শাড়ির প্রকৃত দাম জানতে ক্রয়ের রশিদ এবং বিক্রয়ের রশিদ চাওয়া হয়।
দোকানে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা এসব কোনো কিছুই দেখাতে পারেননি। বরং দোকানের মালিক বা ম্যানেজার নেই বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। তারা বলেন, দোকানের কেনা-বেচার হিসেব ম্যানেজার বলতে পারবেন। তিনি (ম্যানেজার) আরও ১ ঘণ্টা পর দোকানে আসবেন। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
দোকানীদের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, ম্যানেজার না আসা পর্যন্ত দোকান সাময়িক বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেন এবং বলে আসেন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।
পরে পাশের দোকান ‘তাওছিফ বেনারশী ফ্যাশনে’ যান ভোক্তা কর্মকর্তারা। সেখানে একটি ইন্ডিয়ান এবং দেশি শাড়ি দেখে প্রকৃত দাম জানতে ক্রয়ের রশিদ এবং বিক্রয়ের রশিদ চাওয়া হয়। এখানেও নেই কোন ক্রয়ের রশিদ, এবং ক্রেতাদের কাছে বিক্রির সময় দেয়া হয় না রশিদ। শাড়িতে দেয়া স্টিকারে এসএল নাম্বার কোড দেয়া থাকলেও নেই কোন মূল্য। দোকানী কর্তৃক দেয়া এসএল অনুযায়ী বালাম বই চেক করে দেখা যায় ইচ্ছেমত নিজেরা একটা ক্রয় মূল্য লিখে রেখেছে। ক্রয় মূল্যের স্বপক্ষে নেই কোনো কাগজপত্র।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অধিদপ্তরের ৩৭ এবং ৪৫ ধারায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানানো হয়।
এদিকে অল্প সময়ের মধ্যেই ভোক্তা অধিকারের অভিযানের তথ্য ছড়িয়ে পড়ে পুরো বেনারসি পল্লীতে। মহুর্তেই মিরপুর বেনারসি পল্লীর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কাসেমের নেতৃত্বে প্রায় ২০০ জনের অধিক ব্যবসায়ী এবং দোকানের কর্মচারীরা স্লোগান দিতে দিতে চলে আসেন ‘তাওছিফ বেনারশী ফ্যাশনের’ ভেতরে। যেখানে পূর্বে থেকেই অবস্থান করছিলেন ভোক্তা কর্মকর্তারা। মুহুর্তের মধ্যেই বদলে যায় দৃশ্যপট। অনেকটা আক্রমণাত্তক ভঙ্গিতে সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে স্লোগান দিয়ে এগিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা।
এসময় ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপ-পরিচালক, ঢাকা জেলা প্রধান মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল এবং সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান ব্যবসায়ীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন- ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্যবসায়ীদের শত্রু নয়, তারা যাতে আইন মেনে ব্যবসা করতে পারেন এবং ভোক্তাদের অধিকার সমুন্নত থাকে সে লক্ষ্যেই কাজ করছে ভোক্তা অধিকার।
এসময় ব্যবসায়ীদের নেতাকে সামনে রেখে শাহরিয়ার বলেন, সকল ব্যবসায়ীকে সরকারের আইন মেনে ব্যবসা করতে হবে। ভোক্তা যেন প্রতারিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পণ্য কেনার সময় পাকা রশিদ সংগ্রহ করতে হবে। পণ্য বিক্রির সময় ভোক্তাদের মূল্য সহ রশিদ দিতে হবে। কোন ভাবেই এই আইনে বত্যয় ঘটানো যাবে না। যারা আইন মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসময় ব্যবসায়ী নেতা মো. কাসেম বলেন, ভোক্তা অধিকারের পাকা রশিদের আইন আমরা জানতাম না। এখন থেকে যেহেতু জেনেছি মেনে চলার চেষ্টা করবো।
পরে ব্যবসায়ী নেতার অনুরোধের প্রেক্ষিতে দুই দোকানকে ২০ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এবং আর কোনো দোকানে অভিযান না চালিয়ে সেখান থেকে অভিযান শেষ করেন ভোক্তা অধিকারের টিম।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ