জাতীয়
নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘকে দেয়া চিঠিতে যা লিখলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
‘একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ’ সরকার বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বিরোধী দল ও তাদের মিত্ররা বিক্ষোভের নামে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি পোড়ানো এবং মানুষের জীবন পোড়ানো সহ্য করবেন না বলেও জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯ নভেম্বর চিঠিটি লেখা হয় এবং ২০ নভেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন তা পাঠায়। চিঠিতে নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ বিভিন্ন মহল থেকে ‘অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত’ চাপের মুখোমুখি হচ্ছে উল্লেখ করে, রাজনৈতিক উন্নয়নে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘের প্রতি আহবানও জানিয়েছে ঢাকা।
নির্বাচন ঘিরে জাতিসংঘ সচিবালয়, এর বিভিন্ন সংস্থা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তরের গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা চেয়ে সংস্থার মহাসচিবের দপ্তরে এ চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গেলো মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের নির্বাহী দপ্তরের শেফ দ্য কেবিনেট আর্ল কুর্টনি রেটরের কাছে এই চিঠি পাঠান।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতিসংঘের মহাসচিবের দপ্তরে এমন সময়ে এই চিঠি পাঠানো হলো, যখন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছে পশ্চিমের অনেক দেশ ও জোট। জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে প্রশ্নোত্তরের সময়ও একই আহ্বান জানানো হচ্ছে।
জানা গেছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাঠানো ওই চিঠির বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের ভূমিকা এবং ভবিষ্যতে জাতিসংঘের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সহযোগিতার অভিপ্রায়।
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি নেতৃত্বদানকারী দেশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেটি এই অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করতে ৩০ লাখ প্রাণ দিয়েছে।
আব্দুল মোমেন বলেন, এরপরও বাংলাদেশ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘অযথা, অযৌক্তিক, স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক চাপের’ মুখোমুখি হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা যে জাতিসংঘ সচিবালয়, এর বিভিন্ন সংস্থা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তরসহ জাতিসংঘের সমগ্র প্রক্রিয়া বাংলাদেশকে তার উন্নয়নের গতিপথে অবিচল থাকতে সহায়তার লক্ষ্যে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা রাখবে।’
চিঠিতে ড. মোমেন লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের একজন নির্ভীক কর্মী এবং তিনি ভোটাধিকার, খাদ্যের অধিকার এবং একটি উন্নত জীবনের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক কষ্ট করছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের শাসনামলে উপনির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আঞ্চলিক নির্বাচন, মেয়র নির্বাচনসহ হাজার হাজার নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। এসব নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সবই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, জাতিসংঘের ব্যবস্থা জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে সবার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সংগত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাবে।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা আশা করি, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সম্মান বজায় রাখার জন্য নিরপেক্ষতা, সততা এবং বস্তুনিষ্ঠতার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখবেন। যদি তাঁদের প্রতিবেদনগুলো মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে এবং বস্তুনিষ্ঠতা ছাড়া হয় এবং যদি সত্যভিত্তিক না হয়, তবে তাঁরা তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারেন, যা জাতিসংঘপ্রক্রিয়ার জন্য অশুভ লক্ষণ।’
তবে চিঠির বিষয়ে গণমাধ্যমকে ড. মোমেন বলেন, ‘এটা দুঃখজনক যে একটা প্রাইভেট লেটার ছাপাইয়া দিয়েছেন। এই হলো বাংলাদেশ, এদের দেশ মাতৃকা কোন ধরণের, দেশের প্রতি মমত্ববোধ নাই।’ তবে এটি গণমাধ্যমে চলে আসাটা দুঃখজনক।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ