আন্তর্জাতিক
যেকারণে ৯০ ব্যক্তির ওপর যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য ও কানাডার নিষেধাজ্ঞা
এবার বিভিন্ন দেশের ৯০ ব্যক্তির ওপর সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা। মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের সার্বজনীন ঘোষণার প্লাটিনাম জয়ন্তী সামনে রেখে ওই তিন দেশের নাগরিকদের উপর নিষেধাজ্ঞার খড়গ নামানো হলো।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) এই সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে উৎসাহিত করতে গেলো মে মাসে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে মার্কিন প্রশাসন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টিকারীরা ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে জানিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকার নতুন ভিসা নীতিতে বলা হয় সরকারের পাশাপাশি বিরোধীদের কেউ যদি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা দিলে তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার পর থেকেই মার্কিন সাংশন ও ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে সুযোগ মনে করে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠ গরম করার চেষ্টা করে বিএনপি-জামায়াত জোট। এসব দল এবং সুশীল সমাজের অনেকেই প্রচারণা চালায় ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ঘিরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বাহিনীর ও আওয়ামী লীগের অনেক কর্মকর্তা ও ব্যক্তির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসছে। তবে নতুন স্যাংশন ও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় বাংলাদেশের কারো নাম নেই।
শুক্রবার ১৩ দেশের ৩৭ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটসের এক বিবৃতিতে বলা হয়,পররাষ্ট্র দপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এসব ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করে। যেসব দেশগুলোর নাগরিকরা এসব নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতির কবলে পড়েছে সেগুলো হলো, আফগানিস্তান,কঙ্গো, হাইতি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, লাইবেরিয়া, সিরিয়া, উগান্ডা, চীন, রাশিয়া, সুদান, দক্ষিণ সুদান ও জিম্বাবুয়ে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যাক্তিরা তাদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ ভোগদখল করতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যাংকে থাকা অর্থ তুলতে পারবেন না। পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সঙ্গে কোনো ব্যবসা ও লেনদেন করতে পারবে না।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের দুজন আফগানিস্তান সরকারের মন্ত্রী। তাঁরা দেশটিতে মেয়েদের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ বন্ধ করার মাধ্যমে নারী নিপীড়নে জড়িত রয়েছেন। বোলছে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটস।
ইরানের দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মার্কিন প্রশাসন বলছে, তাঁরা দেশের বাইরে ইরানের সরকার বিরোধীদের ওপর সহিংসতার পরিকল্পনা করেছিলেন। চীনের জিনজিয়ানে উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতনের কারনে চাইনীজ দুই কর্মকর্তাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাজ্য সরকার নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ৪৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর।এই নিষেধাজ্ঞার কারনে সম্পদ জব্দ ও ভ্রমণে বিধি নিষেধ থাকবে। বেলারুশের ১৭ বিচারক, আইনজীবী ও তদন্তকারীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ঋষি সুনাক প্রশাসন। এমন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইরানের পাঁচ আইনজীবী ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা, সিরিয়ার আসাদ সরকারের ৮ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
অন্যদিকে,মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যৌথ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ৭ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কানাডা সরকার।কানাডার তালিকায় চেচনিয়ায় এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ৪ রুশ নাগরিক, মিয়ানমারে গণতন্ত্রপন্থীদের ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগে জান্তা প্রধানও রয়েছেন। এছাড়া,ইরানি বংশো্দ্ভূত কানাডিয়ান ফটো সংবাদিক জাহরা কাজেমিকে নির্যাতন ও হত্যায় ইরানের ২ নাগরিকের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কানাডা সরকার।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//