আন্তর্জাতিক
অবৈধ অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের রক্ত বিষাক্ত করছে: ট্রাম্প
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার তিনি বলেছেন, তার দেশের রক্ত বিষাক্ত করছে এসব অবৈধ অভিবাসীরা। গতকাল শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) নিউ হ্যাম্পশায়ারে একটি প্রচারণা অনুষ্ঠানের সময় এসব কথা বলেন ট্রাম্প।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনথিভুক্ত অভিবাসীরা ‘আমাদের দেশের রক্ত বিষাক্ত’ করছে বলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং আগামী বছরের নির্বাচনে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার বলেছেন। যদিও তার এমন মন্তব্যকে জেনোফোবিক (বিদেশি বা বিদেশি বংশোদ্ভূত লোকদের প্রতি ভীতি) এবং নাৎসি বক্তৃতার প্রতিধ্বনি বলে আগেই সমালোচনা করা হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, স্থানীয় সময় শনিবার নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যে প্রচারাভিযানের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ভাষণ দেয়ার সময় ট্রাম্প এ মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীদের অবৈধভাবে মার্কিন সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন।
এছাড়া দ্বিতীয় মেয়াদে চার বছরের জন্য নির্বাচিত হলে অবৈধ অভিবাসন রোধ এবং বৈধ অভিবাসন সীমিত করার প্রতিশ্রুতি ইতোমধ্যেই দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প।
নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের ডারহাম শহরে কয়েক হাজার সমর্থকের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা (অভিবাসীরা) আমাদের দেশের রক্ত বিষাক্ত করছে’। তিনি বলেন, দক্ষিণ আমেরিকা ছাড়াও এশিয়া এবং আফ্রিকা থেকে অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন। সারা বিশ্ব থেকে তারা আমাদের দেশে এসে হাজির হচ্ছে।
দ্য ন্যাশনাল পালস নামে একটি ডান-পন্থি ওয়েবসাইটে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প একইভাবে ‘রক্তে বিষ প্রয়োগ’ ভাষাটি ব্যবহার করেছিলেন। গেলো সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হওয়ার পর এটি অ্যান্টি-ডিফেমেশন লীগ থেকে সমালোচনা ও তিরস্কারের শিকার হয়।
অ্যান্টি-ডিফেমেশন লীগের নেতা জোনাথন গ্রিনব্ল্যাট সেসমই ট্রাম্পের এই মন্তব্যটিকে ‘বর্ণবাদী, জেনোফোবিক এবং ঘৃণ্য’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
ইয়েলের অধ্যাপক এবং ফ্যাসিবাদ বিষয়ে বইয়ের লেখক জেসন স্ট্যানলি বলেছেন, ট্রাম্পের বারবার এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করা বিপজ্জনক। তিনি বলেন, ট্রাম্পের কথায় নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়। কারণ হিটলারও তার রাজনৈতিক গ্রন্থ ‘মেইন ক্যাম্প’-এ ইহুদিদের মাধ্যমে জার্মান রক্তে বিষ প্রয়োগের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন।
স্ট্যানলি বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) এখন এ শব্দভান্ডারকে সভা-সমাবেশে পুনরাবৃত্তিমূলক ভাবে ব্যবহার করছেন। বিপজ্জনক বক্তৃতা পুনরাবৃত্তিমূলক ভাবে ব্যবহার করা হলে তা স্বাভাবিক হয়ে যায় এবং এটি অনুশীলনের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তোলে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের নিরাপত্তার জন্য খুবই উদ্বেগজনক আলোচনা।’
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//