এশিয়া
রাখাইনে জান্তাদের বিরুদ্ধে বিজয়ের দাবি আরাকান আর্মির
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য দখলে নিয়ে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিজয় দাবি করেছে আরাকান জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র গ্রুপ আরাকান আর্মি।একটার পর একটা শহর বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাবার ধারাবাহিতায় এবার রাখাইন রাজ্যে নিজেদের আনুষ্ঠানিক বিজয় ঘোষণা করলো বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গত দেড় মাস ধরে তুমুল লড়াইয়ের পর আরাকান আর্মি এই উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেলো।
আরাকান আর্মির উদ্ধৃতি দিয়ে গত শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রকাশিত মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে সামরিক সরকারের ১৪২টি অবস্থান দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি।এর অর্থ হলো জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৫টিরই নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।পাশাপাশি,রাখাইনের প্রতিবেশি ও পশ্চিমাঞ্চলীয় চিন রাজ্যের পালেটা শহরও দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি।
বৃহস্পতিবার(১৪ ডিসেম্বর) আরাকান আর্মি দাবি করেছিল, গত ৪৫ দিন সংঘর্ষ চলাকালে রাখাইনের রাজধানী সিত্তের একটি ঘাঁটি এবং ১৪টি অন্যান্য শহরের সেনাচৌকি তাদের নিয়ন্ত্রণে আসে। পাশপাশি পালেতোয়াতের প্রায় ১৭টি সামরিক অবস্থানের নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি।
ইরাবতীর প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় ম্রাউক উ ও পাক্তাউ শহর এবং চিন রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলীয় পালেটা শহরে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তুমুল যুদ্ধ চলছে। এর আগে, ট্রনাইং ও হনবু শহর থেকে সেনাবাহিনীকে হটিয়ে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত মঙ্গলবার আরাকান আর্মি পালেটা থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের সিনলেটা শহরে হামলা চালায়। পালেটা শহরের একজন বাসিন্দা জানান,হামলার কারণে শহরের অধিবাসীরা জঙ্গলে পালিয়ে গেছেন।মোবা্ইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় তাদের খোঁজ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
চলতি বছরের ১৩ নভেম্বরের পর থেকে জান্তা সরকার রাখাইন রাজ্য থেকে ৩০০ জন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। আরাকান আর্মি জানিয়েছে, গত সোমবার ও মঙ্গলবার সিতুই, মিনবা, কিয়াকতাউ, ম্রাউক উ এবং পাক্তাউ শহর থেকে ৬০ জনকে আটক করা হয়েছে।আরাকান আর্মিকে সমর্থন করায় আটককৃতদেরকে দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয় এবং আটককৃতদের দীর্ঘদিন কারাগারে থাকতে হয়।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ক অফিসের হিসেব মতে, জান্তা সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণ ও বন্দুকযুদ্ধে গত ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩২ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯৬ জন।
জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই রাখাইন রাজ্যে বোমা হামলা বাড়িয়েছে জান্তা সরকার। জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়,মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হামলায় গত ১৩ নভেম্বর থেকে পাউকতাও, মিনবিয়া ও পোন্নাগিউন শহর থেকে এক লাখের বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
আরাকান আর্মি কারা?
রাখাইন রাজ্যটির একসময়ের নাম ছিল আরাকান। বর্তমানে এখানকার প্রধান জনগোষ্ঠী হলো আরাকানি। ধর্মে তারা থেরোবাদী বৌদ্ধ। তারা মিয়ানমারের মূল ভূখণ্ডের বৌদ্ধদের থেকে নিজেদের আলাদা বলে দাবি করে থাকেন।
আরাকান আর্মি গঠিত হয় ২০০৯ সালে। তারা হলো ইউনাইটেড লিগ অব আরাকানের (ইউএলএ) সশস্ত্র শাখা। বর্তমানে এর প্রধান মেজর জেনারেল তুন মিয়াত নাইং। তাদের লক্ষ্য আরাকানি জনগোষ্ঠীর স্বাতন্ত্রতা রক্ষা করা।
এই সশস্ত্র গ্রুপটি কচিন সঙ্ঘাতেও জড়িত রয়েছে। মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে কচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির (কেআইএ) সাথে লড়াই করছে। এএ’র বেশির ভাগ সৈন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছে কেআইএ মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে। অবশ্য রাখাইন রাজ্যেও তাদের আলাদা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। বর্তমানে তাদের সৈন্য সংখ্যা সাত হাজারের মতো বলে ধারণা করা হয়।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/