জাতীয়
ছয় বছরের ব্যবধানে মানুষের গড় আয় দ্বিগুণ
দেশে একজন মানুষের মাসিক গড় আয় এখন ৭ হাজার ৬১৪ টাকা। ছয় বছরের ব্যবধানে এই আয় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৬ সালে একজন মানুষের মাসিক গড় আয় ছিল ৩ হাজার ৯৪০ টাকা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২ সালের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
বিবিএসের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরের মানুষের আয় অনেক বেশি। শহরের একজন মানুষের মাসিক গড় আয় ১০ হাজার ৯৫১ টাকা। আর গ্রামের মানুষের আয় অর্ধেকের কাছাকাছি, ৬ হাজার ৯১ টাকা। একটি পরিবারের সবাই আয় করেন না এবং এমন শিশু-বৃদ্ধ ও নারী আছেন, যারা বাস্তব কারণে কাজ করতে পারেন না। তবে একটি পরিবারে এক বা একাধিক উপার্জনকারী থাকতে পারেন। এসব উপার্জনকারীর গড় আয়ের হিসাবও জরিপে দেওয়া হয়েছে। উপার্জনকারীদের গড় আয় ২৫ হাজার ৭০৭ টাকা। ৬ বছর আগে এর পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৬৪৬ টাকা। এই হিসাব শুধুমাত্র উপার্জনকারীর আয়ের ভিত্তিতে করা।
একটি পরিবারের মাসিক আয় কত, ব্যয় কত, তা–ও খানা আয় ও ব্যয় জরিপে বলা হয়েছে। বিবিএস বলছে, বাংলাদেশে একটি খানা বা পরিবারের গড় সদস্যসংখ্যা ৪ দশমিক ২৬। ওই পরিবারের মাসিক আয় ৩২ হাজার ৪২২ টাকা। মাসে খরচ হয় গড়ে সাড়ে ৩১ হাজার টাকা। খাবারের পেছনে প্রতি মাসে গড়ে ১৪ হাজার ৩ টাকা খরচ করে একটি পরিবার।
এ বিষয়ে বিবিএসের উপপরিচালক এবং খানা আয় ও ব্যয় জরিপ প্রকল্পের পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রাথমিক যে ফলাফল এসেছিল, মূল প্রতিবেদনেও তা–ই এসেছে। এবার শুধু একটু বিস্তারিত বলা হয়েছে। গত ছয় বছরে আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হওয়ায় আয়-ব্যয়ে পরিবর্তন এসেছে।’
এদিকে ধনীদের কাছে সম্পদ আরও পুঞ্জীভূত হওয়ার চিত্র উঠে এসেছে। আয়বৈষম্য আরও প্রকট হওয়ার চিত্রও উঠে এসেছে। দেখা গেছে, দেশের মোট আয়ের প্রায় ৪১ শতাংশ করে থাকেন দেশের সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ মানুষ। ২০১৬ সালে আয়ের এই হার ছিল ৩৯। তবে সবচেয়ে গরিব ১০ শতাংশ মানুষের আয়ের অংশীদারত্ব কিছুটা বেড়েছে। এখন দেশের মোট আয়ের ১ দশমিক ৩১ শতাংশ তাদের হাতে। ছয় বছর আগে এই হার ছিল ১ দশমিক শূন্য ২।
এখন সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। ৬ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৬ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪ দশমিক ৩। দেশে অতি দারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ তাংশ। ৬ বছর আগে এই হার ছিল ১২ দশমিক ৯।
এত দিন একটি সাধারণ ধারণা ছিল, দারিদ্র্য বেশি উত্তরবঙ্গে। কিন্তু বিবিএস বলছে, সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্য বরিশাল বিভাগে। এই বিভাগে দারিদ্র্যের হার ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম পার্শ্ববর্তী খুলনা বিভাগে। এই বিভাগে দারিদ্র্যের হার ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এ ছাড়া দারিদ্র্যের হার ঢাকায় ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৮, রাজশাহীতে ১৬ দশমিক ৭, সিলেটে ১৭ দশমিক ৪, রংপুরে ২৪ দশমিক ৮ এবং ময়মনসিংহে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ।
এএম/
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ