জাতীয়
বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার: চ্যানেলে বলার পর বিজ্ঞপ্তিতে যা জানালেন কৃষিমন্ত্রী
‘জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন করার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে সরকার। যারা সন্ত্রাস করছে, সন্ত্রাসের হুকুম দিচ্ছে, সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করছে, লন্ডনে বসে থেকে নির্দেশ দিচ্ছে, সরকার বাধ্য হয়েছে তাদের গ্রেফতার করতে।’ বললেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের বিষয়ে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। পরে মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আব্দুর রাজ্জাক বলেন,‘আমার বক্তব্য হলো এই যে আওয়ামী লীগ আন্তরিকভাবে চেয়েছে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। এটি বলতে গিয়ে সেদিন কিছু কথাবার্তা আমি চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে বলেছি।’
বিজ্ঞপ্তিতে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে এটাও বলেছি বিএনপি চায় নির্বাচন বানচাল হোক। তারেক রহমানের নামে মামলা রয়েছে। তার শাস্তি হয়েছে। সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তার মা (খালেদা জিয়া) অসুস্থ, তারও শাস্তি হয়েছে। তারা নির্বাচনে আসতে চায় না। আমাদের আওয়ামী লীগের বক্তব্য হলো, সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনোক্রমে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। পৃথিবীর কোনও দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই।’
নির্বাচন কমিশন বারবার বলেছে বিএনপি নির্বাচনে এলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে-উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যদি রাজি হয় নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। এই কথাটিই আমি বলেছি। নির্বাচন কমিশনে তো আইনের লোক অনেক আছে। একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আলাপ-আলোচনা করে অনেক কিছুই করা যায়। খুনের আসামিরও তো জামিন হয়। প্রথমে না হলেও আস্তে আস্তে একসময় জামিন হয়। ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কি জেলে রেখে নির্বাচন হবে? সেটা একটা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জামিনের ব্যবস্থা করা হতো। ফর্মালিটিজ করে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাদের ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হতো।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে আসতে রাজি হলে তারা হরতাল, অবরোধ, অগ্নিসন্ত্রাস ও সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড থেকে নিবৃত্ত হতো। তখন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের জামিন পাওয়া সহজ হতো।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রী বলেন,‘কীভাবে বিএনপি রেললাইন কেটেছে! দেশে কি কোনও মুক্তিযুদ্ধ চলছে? দেশে কি যুদ্ধাবস্থা? এগুলো তো যুদ্ধের সময় করে। এগুলো বন্ধ করতে হলে মানুষকে তো গ্রেফতার করতে হবে। বিএনপি নেতাদের হুকুম ছাড়া কোনও কর্মী কি বাসে আগুন দেবে? তার জেল-জুলুমের ভয় আছে না? আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের দায়িত্ব হলো মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। সেই পরিস্থিতিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গ্রেফতারের ফলে এবছর বিএনপির সহিংসতা অনেক কম। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তারা যেভাবে তাণ্ডব ও চারশ’র বেশি মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল, এবছর সেই পরিস্থিতি নেই।’
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চেয়েছে আগামী নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। বিএনপি একটি বড় দল এটা আমরা সবসময় বলি। কিন্তু বিএনপি সবসময় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার নানা রকম ফন্দি করেছে।’
চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে কী বলেছিলেন কৃষিমন্ত্রী? বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, দেশে সহিংসতা আটকাতে পরিকল্পিতভাবেই বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে জেলে রাখা হয়েছে। নির্বাচনে এলে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবেও রাজি হয়নি বিএনপি নেতাকর্মীরা।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আনার জন্য বিএনপি নেতাদের কারাগার থেকে মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে বিএনপি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। এটা দলের বক্তব্য নয় অবশ্যই, আমি ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছি। আমি মনে করি, আমার দল চায় সবাই অংশগ্রহণ (নির্বাচনে) করুক।
দলের ভেতরে ও বাইরে সমালোচনার ঝড়: কৃষিমন্ত্রীর এই বক্তব্য আওয়া্মী লীগ দলের মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, কৃষিমন্ত্রী যা বলেছেন, সেটি তার ব্যক্তিগত মত।
এদিন দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘’এ ধরনের কোনো প্রস্তাব আমাদের সরকারও দেয়নি, আমাদের দলও দেয়নি। আমরা দলীয়ভাবে এ ধরনের প্রস্তাব দেইনি। আর বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মী জেলে আছে এটাও তো আমরা স্বীকার করি না!
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘’তাদের জেলে আছে কত সে হিসাবটা আমি মির্জা ফখরুলের কাছে অনেকবার চেয়েছি। তাদের জেলে কত আছে সেই তালিকাটা তারা বের করুক। এ রকম উদ্ভট ২০ হাজার, একটা সংখ্যা বলে দিলো—সেটা সবাই বিশ্বাস করবে, এমন তো নয়! এটা বিশ্বাস করার তো কোনো কারণ নেই। এত লোক গ্রেপ্তারও হয়নি।’ মূলত দলের ভেতরে ও বাইরে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করলেন ড. আব্দুর রাজ্জাক।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ