জাতীয়
দেশ স্বাধীনের পর দ্বিতীয় নির্বাচন কেমন ছিল
১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশের শাসন ব্যবস্থা সামরিক বাহিনীর অধীনে চলে যায়। ওই বছরের ৩ নভেম্বর ১৫ আগস্টের অভ্যূত্থানকারীদের বিরুদ্ধে একটি সেনা অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফ। রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করা হয় খন্দকার মোশতাক আহমদকে। আর সেই দিনই ঘোষিত হয় ২২ সদস্যের মন্ত্রিসভা।
কিন্তু খালেদ মোশাররফও মাত্র ৩ দিন স্থায়ী হতে পেরেছিলেন। ৭ নভেম্বর পাল্টা অভ্যুত্থানে প্রাণ হারান তিনি। ওই ধারাবাহিকতায় ক্ষমতায় আসেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনি বিচারপতি আবু সাদাত সায়েমকে সামনে রেখে ক্ষমতা সুসংহত করতে নানা উদ্যোগ নেন।
জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক শাসন পরিচালনা করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি তার বৈধতার সংকট অতিক্রমের জন্য নির্বাচন, দল গঠনসহ নানা কর্মকাণ্ড করেন।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যভিত্তিক একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দেন জিয়াউর রহমান। ক্ষমতায় থেকে গঠন করা দলটির নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দল গঠনের পরেই ১৭ নভেম্বর রাজনৈতিক কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়া হয়। ওই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৯ সালের ২৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। তবে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধী দলগুলোর চাপের মুখে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ পুনঃনির্ধারিত হয়।
সামরিক শাসকের ছত্রছায়া ওই নির্বাচনে ২৯টি রাজনৈতিক দল ও উপদল অংশ গ্রহণ করে। জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনে ২১শ’১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ৪১.১৭ শতাংশ হারে ৭৯,৩৪,২৩৬ টি ভোট পেয়ে ২০৭টি আসনে জয়ী হয়। এই নির্বাচনে আব্দুল মালেক উকিল এর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ পায় ৩৯টি আসন। সেবার আওয়ামী লীগ সর্বমোট ভোট পেয়েছিলো ৪৭ লাখ, ৩৪ হাজার ২৭৭ টি। এই হার ছিল প্রদানকৃত মোট ভোটের ২৪.৫৬ শতাংশ। ওই নির্বাচনে মুসলিম ডেমোক্রেটিক লীগ ২০টি, জাসদ ৮টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৬ টি আসনে জয়ী হয়েছিলো। এছাড়া সংরক্ষিত আসনের ৩০টি আসনই বিএনপি পায়। পাশাপাশি বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিএনপিতে যোগদান করেন। ৪টি আসনে উপনির্বাচন হয়। যার মধ্যে ৩টি আসনে বিএনপি প্রার্থী এবং ১টি আসনে মুসলিম লীগ প্রার্থী জয়ী হয়।
এ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৬৩ হাজার ৮শ৫৮ জন। ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলো ১ কোটি ৯৬ লাখ ৭৬ হাজার ১২৪ জন। মোট ভোট পড়েছিল ৫১.২৮ শতাংশ।
এই নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হন শাহ আজিজুর রহমান। সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন আসাদুজ্জামান খান। প্রধান বিচারপতি হিসেবে ছিলেন কামালউদ্দিন হোসেন।
এএম/
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ