জাতীয়
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। আমি তাদের অবদান আন্তরিক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামীকাল ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, “জাতীয় উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের স্বীকৃতির পাশাপাশি তাদেরকে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে আরো সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এবছর থেকে ৩০ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে। ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৩’ এর প্রতিপাদ্য ‘প্রবাসীদের কল্যাণ, মর্যাদা-আমাদের অঙ্গীকার; স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় তারাও সমান অংশীদার’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ উদ্যাপনের এ শুভ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী এবং কর্মরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশী এবং তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাংলাদেশীরা অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন, বৈদেশিক সহায়তা এবং কূটনৈতিক কার্যক্রম জোরদার করতে প্রবাসীদের সক্রিয় সহযোগিতা ও অবদান অনস্বীকার্য। বর্তমানে বিশ্বের ১৭০টিরও বেশি দেশে বিপুল সংখ্যক অনাবাসী বাংলাদেশী এবং শ্রম অভিবাসনের আওতায় বাংলাদেশী কর্মী অবস্থান করছেন।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রবাসী ভাইবোনেরা প্রতিবছরে গড়ে প্রায় ১৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিলো ২১.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রণোদনা প্রদানের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকার সেবা প্রদান ডিজিটাল ও সহজতর করেছে। সুষ্ঠু, নিরাপদ, নিয়মিত ও দায়িত্বশীল শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রবাসীদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ড প্রবাসী বাংলাদেশী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। ২০০৯ সাল থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সরকার প্রবাসী ও প্রবাস ফেরত কর্মীদের সার্বিক কল্যাণে ২০১০ সালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, গ্রীস, বাহরাইন এবং সৌদি আরবে বাংলাদেশের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী স্কুল পরিচালনায় ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও রেমিট্যান্স প্রেরণ, শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও দেশীয় পণ্য আমদানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সাল থেকে আমাদের সরকার প্রতিবছর অনিবাসী বাংলাদেশীদের বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) সম্মাননা প্রদান করছে।”
তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাদের বিশেষায়িত নেটওয়ার্ক, বিনিয়োগ ও দক্ষতার সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নে যেন আরো বহুমাত্রিক ভূমিকা রাখতে পারেন সেলক্ষ্যে ইতোমধ্যে আমরা ‘জাতীয় ডায়াসপোরা নীতি, ২০২৩’ প্রণয়নের কার্যক্রম শুরু করেছি। দেশের সঙ্গে প্রবাসীদের আরো নিবিড় ও অর্থবহ সংযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি আশা করি, আমাদের সরকারের এই উদ্যোগে প্রবাসী বাংলাদেশীরা নিজেদের আরো বেশি সম্মানিত বোধ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী, ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ