বাংলাদেশ
খেলোয়াড়দের চেয়ে সংগঠকদের আধিক্যে প্রশ্নবিদ্ধ জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার
আজ বুধবার (১১ মে) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ৮৫ জন খেলোয়াড় ও সংগঠকের প্রদান করা হবে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে উপস্থিত থেকে পুরস্কার দেবেন। এরই মধ্যে গতকাল (বুধবার) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারপ্রাপ্ত খেলোয়াড় ও সংগঠকের নাম ঘোষণা করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
৮৫ জনের মধ্যে পাঁচজন মরণোত্তর পুরস্কার পাচ্ছেন। এছাড়া প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়দেরও দেওয়া হচ্ছে ক্রীড়াক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় এই পুরস্কারটি। তবে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারে সাত-আটজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে এক বা দুজন সংগঠক থাকেন-এমনটাই হয়ে আসছে প্রতিবার। কিন্তু এবার আট বছরের যে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে তাতে রেকর্ডসংখ্যক সংগঠকের নাম! ৮৫ জনে ৩৩ জন, প্রায় ৪০ শতাংশ। যেখানে আগের ১২ বছরে ১৩২ জন পুরস্কারপ্রাপ্তর মধ্যে সংগঠক ছিলেন ২১ জন, অর্থাৎ ১৫ শতাংশ।
যেমন কুস্তি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান পালোয়ান। ১৯৭৮ সাল থেকে পালোয়ান এই ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। এত বছর দায়িত্বে থেকে কুস্তিতে তাঁর বলার মতো অর্জন নেই। আজ পর্যন্ত এসএ গেমসে সোনা জেতার মতো একজন কুস্তিগীর তৈরি হয়নি। সারা দেশেও খেলাটার কোনো জনপ্রিয়তা নেই। পালোয়ান তাই যেন শুধু চেয়ার আঁকড়ে থাকারই পুরস্কার পাচ্ছেন।
আরেকজন রোইং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। ১৯৮৪ সালে প্রথম ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তিনি। এরপর বিভিন্ন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ টানা দুই মেয়াদে এই চেয়ারে আছেন তিনি। খোরশেদ আলমের বয়স প্রায় ৯০। এত দিন ধরে রোইংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকলেও দেশে খেলাটির কোনো প্রসার নেই।
আর এখন তিনিই পাচ্ছেন ক্রীড়া পুরস্কার।
হ্যান্ডবলের দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কোহিনুরও পাচ্ছেন পুরস্কার। ঘরোয়াভাবে খেলাটির ব্যস্ততা আছে। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে কোনো ছাপ রাখতে না পারায় কোহিনুরের এত দিনের সাংগঠনিক দক্ষতাও প্রশ্নবিদ্ধ।
তালিকায় আছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিব শামসুল হক চৌধুরী। তিনি ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতেও এই ক্লাবকে বিতর্কিত করেছেন। উদ্ধার করা হয়েছিলো জুয়ার সামগ্রী। ফুটবলে গত কয়েক বছরে চট্টগ্রামের এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি আলোচনায় এসেছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট করে। যদিও এই টুর্নামেন্টের উদ্যোক্তা ও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তরফদার রুহুল আমিনকেই সবাই চেনে। চট্টগ্রাম আবাহনীর বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন আছে। দলটি নিয়মিত প্রিমিয়ার লিগে খেললেও চট্টগ্রামেই তাদের কোনো ভেন্যু নেই দীর্ঘদিন।
বাস্কেটবলে খেলোয়াড় হিসেবে এ কে সরকার (ভায়া) বড় নাম, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি এবার পুরস্কার পাচ্ছেন সংগঠক হিসেবে। সেখানে অবশ্য তিনি সমালোচিত। বাস্কেটবলে গত ১০ বছরে জাতীয় প্রতিযোগিতাই হয়েছে যেমন মাত্র চারবার, তার মধ্যে দুবারই হয়েছে বাংলাদেশ গেমসে। অনিয়মিত প্রিমিয়ার লিগও। খেলাটির ভালো একটি ভেন্যুও নেই দীর্ঘদিন।
ধানমণ্ডির ভাঙা উডেন ফ্লোরে চোটের ঝুঁকি নিয়েই খেলতে হয় খেলোয়াড়দের। এ ছাড়া এ তালিকায় যোগ হয়েছেন তায়কোয়ান্দোর মাহমুদুল ইসলাম রানা, ক্যারম ফেডারেশনের ড. শেখ আব্দুস সালাম, হ্যান্ডবলের প্রয়াত কাজী মাহতাবউদ্দিন আহমেদ, শ্যুটিংয়ের ইন্তেখাবুল হামিদ, অ্যাথলেটিক্সে ফরিদা আক্তার বেগম।
এবারের ক্রীড়া পুরস্কারে উল্লেখযোগ্য নাম শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল। খেলোয়াড় ও সংগঠক দুই ক্যাটাগরিতেই তাঁকে মরণোত্তর জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আছেন মরহুম আফজালুর রহমান সিনহা, তানভীর মাজহার ইসলাম তান্না, শামসুল বারী, এনায়েত হোসেন সিরাজ, ফজলুর রহমান বাবুল, সৈয়দ শাহেদ রেজা, মোজাফফর হোসেন পল্টু, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মইনুল ইসলাম, কাজী নাবিল আহমেদ, শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর, আওলাদ হোসেন, শেখ বশির আহমেদ (মামুন), মরহুম এ টি এম শামসুল আলম, জালাল ইউনুস, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম।
খেলোয়াড় তালিকায় বিতর্ক কম নয়। ক্রীড়া পুরস্কার দেওয়ার ঠিক আগের দিন ভারোত্তোলনের কাজল দত্তের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। ভারোত্তোলন, তায়কোয়ান্দো ও জুডো খেলোয়াড় হিসেবে পুরস্কার পেতে যাওয়া জেসমিন আক্তারের পরিচয়ও বেশির ভাগের অজানা। হকিতে অনেক কৃতী খেলোয়াড়ের আগে মাহবুবুল এহসানের নাম আসায় প্রশ্ন উঠেছে। তবে এই দীর্ঘ তালিকাও আলোকিত অনেকের নামে, যেমন-কাজী আনোয়ার, মোহাম্মদ মহসীন, আবু ইউসুফ, ইমতিয়াজ সুলতান জনি, জুয়েল রানা, খাজা রহমতউল্লাহ, মাহবুব হারুন, দিপু রায় চৌধুরী, খালেদ মাহমুদ, হাবিবুল বাশার, মিউরেল গোমেজ, শাহজাহান মিজি, আব্দুল্লাহ আল রাকিব।
হাসিব মোহাম্মদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ