ফুটবল
জার্মান কিংবদন্তি বেকেনবাওয়ার আর নেই
জার্মান কিংবদন্তি ফুটবলার ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর বয়স।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) তার পরিবার এক বিবৃতিতে বেকেনবাওয়ারের মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে।
কোচ ও ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপ জেতাদের মধ্যে অন্যতম ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার। প্রথম হিসেবে এই কীর্তি গড়া ব্রাজিলিয়ান মারিও জাগালো পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছিলেন কিছুদিন আগেই। বেঁচে আছেন কেবল ফ্রান্সের দিদিয়ের দেশম।
বেশ অনেকদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন জার্মানির ‘দের কাইজার’। সোমবার তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এলে ফুটবল বিশ্বে।
এক বিবৃতিতে বেকেনবাওয়ারের পরিবার লেখে, গভীর দুঃখের সঙ্গে আমরা ঘোষণা করছি যে, আমার স্বামী ও আমাদের বাবা ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার রোববার ঘুমের মধ্যে শান্তিতে মারা গেছেন। আমরা চাই যে, আমাদের যেন কোনো প্রশ্নের মাধ্যমে বিরক্ত না করা হয় এবং নীরবে যেন শোক পালন করতে পারি।
জার্মান ফুটবলের অন্যতম আইকন বেকেনবাওয়ার। কেউ কেউ তাকে দেশটির ইতিহাসের সেরা ফুটবলার হিসেবেও মনে করেন। কী নেই তার ঝুলিতে! সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার তো বটেই অন্যতম সেরা কোচও তিনি। অধিনায়ক হিসেবে ১৯৭৪ বিশ্বকাপে জার্মানিকে (তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি) চ্যাম্পিয়ন করার পর কোচ হিসেবে ১৯৯০ বিশ্বকাপ জেতেন বেকেনবাওয়ার। বিশ্বকাপ জয়ের আগে ১৯৭২ সালে জার্মানিকে করে তোলেন ইউরোর সেরা। ক্লাব ফুটবলে বায়ার্ন মিউনিখ তার অধীনে জেতে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নস লিগ। ৬ বার উঁচিয়ে ধরে বুন্দেসলিগার শিরোপা। বেকেনবাওয়ারের ব্যক্তিগত অর্জনও কম ছিল না। দুইবার জেতেন ব্যালন ডি অর। জার্মানির বর্ষসেরা ফুটবলার হয়েছেন চারবার। ডিফেন্ডার হিসেবে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে জায়গা করে নেন বিশ্বকাপের স্বপ্নের একাদশে।
১৯৪৫ সালে মিউনিখে জন্ম হলেও বেকেনবাওয়ারের বেড়ে ওঠা গিনিজ শহরে। বোমার শব্দে তখন নিয়মিতই কেঁপে উঠত শহরের বিল্ডিংগুলো। সেখানেই ফুটবল পায়ে মেতে থাকতেন তিনি। শৈশবে স্ট্রাইকার, ক্যারিয়ারের শুরুতে মিডফিল্ডার হিসেবে খেললেও সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবেই বেশি পরিচিত এই কিংবদন্তি। বিশেষ করে লিবারো বা সুইপার পজিশনে। যেখানে থেকে রক্ষণের পাশাপাশি আক্রমণেও উঠে যেতেন তিনি। আধুনিক যুগে তা নিয়মিতই দেখা যায়।
অনেকের মতে, এই পজিশনের জন্মদাতা বেকেনবাওয়ার। সেই দায়িত্বে বেকেনবাওয়ার এতোটাই দক্ষ হয়ে উঠেছিলেন যে জার্মানরা তাকে ভালোবেসে দের কাইজার (সম্রাট) ডাকতো। উজ্জ্বল ক্যারিয়ারে জার্মানির হয়ে ১০৩ ম্যাচ খেলে করেছেন ১৪ গোল। প্রায় ২০ বছরের ক্লাব ক্যারিয়ারে ১৩ বছরই কাটান বায়ার্ন মিউনিখে। যার ইতি টানেন নিউইয়র্ক কসমসে।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//