বাংলাদেশ
জাপানি দুই শিশু: বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে মায়ের আবেদন
জাপানি দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনের পর এবার বাচ্চাদের নিয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন মা জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো।
আজ মঙ্গলবার (১৭ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী শিশির মনির।
আবেদনে বলা হয়েছে, দুই মেয়ে শিশুকে নিয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো বাংলাদেশে অনেক দিন কাটিয়েছেন। তারা অবকাশ কাটাতে দেশের বাইরে বেড়ানোর জন্য যেতে চান। সেটা হতে পারে জাপানেও।
এর আগে গেলো সোমবার (১৬ মে) জাপান থেকে আসা দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনার সঙ্গে দেখা করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অনুসরণ না করার অভিযোগ তুলে শিশুদের বাবা বাংলাদেশি নাগরিক ইমরান শরীফের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে আবেদন করেছেন মা নাকানো এরিকো। এরপরেই আবার এ আবেদন করেন তিনি।
এ বিষয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হতে পারে, জানান আবেদনকারী আইনজীবী।
এর আগে ঢাকার পারিবারিক আদালতে করা মামলাটির (শিশুদের বাবার) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপান থেকে আসা দুই শিশু তাদের মা জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকোর হেফাজতে থাকবে বলে আদেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আর পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট আদালতকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
জাপান থেকে আসা দুই শিশু নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে তাদের মা নাকানো এরিকো করা আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে গেলো ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ভার্চুয়াল আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে শিশুদের মায়ের করা আবেদনের ওপর এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ১৩ ফেব্রুয়ারি আদেশের জন্য দিন রাখেন। তারই ধারাবাহিকতায় ওইদিন বিষয়টি আদেশ দেন আদালত।
দুই শিশুকে তাদের বাবার হেফাজতে আটক রাখা বে-আইনি ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এর আগের আদেশের পর দুই শিশু কূটনৈতিকপাড়ায় অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলে তাদের মায়ের সঙ্গে আছে। এখন ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিশুরা আগের মতোই মায়ের কাছে থাকবে বলে জানান মামলায় মায়ের পক্ষে থাকা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম।
ঘোষিত আদেশে আদালত বলেন, মামলার পারিপার্শ্বিকতা ও শিশুদের স্বার্থ বিবেচনায় শিশুদের এই আদালতের এখতিয়ারের বাইরে (দেশের বাইরে) নেয়া যাবে না। ঢাকার পারিবারিক আদালতে ২০২১ সালে করা মামলাটি (শিশুদের বাবার) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের হেফাজতে থাকবে।
আরও বলা হয়, আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পারিবারিক আদালতকে মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয়া হলো। হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বাতিল করা হলো। শিশুদের বাবা তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন।
আদালতে ওইদিন শিশুদের বাবার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল, ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক। শিশুদের মায়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও মোহাম্মদ শিশির মনির।
জাপানের নাগরিক নাকানো এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান শরীফের ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিয়ে হয়। তাদের তিন মেয়ে রয়েছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। এরপর গেলো বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে রয়েছে। তবে ইমরানের কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়েকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে ১৯ আগস্ট রিট করেন তার স্ত্রী নাকানো এরিকো। এতে দুই মেয়েকে বে-আইনিভাবে আটক রাখা হয়নি, তা নিশ্চিতে তাদের আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। অন্যদিকে, ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে আরেকটি রিট করেন ইমরান।
নাকানো এরিকো ও ইমরানের পৃথক রিটের ওপর শুনানি নিয়ে দুই শিশু তাদের বাবা ইমরানের হেফাজতে থাকবে বলে গেলো ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এরিকো, যা চেম্বার জজ আদালত হয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।
পরে আপিল বিভাগ দুই শিশুকে তাদের মায়ের কাছে রাখার আদেশ দেন। বাবা শিশুদের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ে দেখা করতে পারবেন বলেও আদেশে বলা হয়। পাশাপাশি আবেদনকারীপক্ষকে (শিশুদের মা) নিয়মিত লিভ টু আপিলও দায়ের করতে বলা হয়। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশের পর শিশুদের মা গেলো ২ ফেব্রুয়ারি নিয়মিত লিভ টু আপিল করেন। এর ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়া হয়।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, ‘ দুই শিশুকে তাদের বাবার হেফাজতে আটক রাখা বেআইনি ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এর আগের আদেশের পর দুই শিশু কূটনৈতিকপাড়ায় অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলে তাদের মায়ের সঙ্গে আছে। এখন ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিশুরা আগের মতোই মায়ের কাছে থাকবে।’
অনন্যা চৈতী
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ