টুকিটাকি
শিম্পাঞ্জি শাবকের সঙ্গে বেড়ে উঠেছিল যে মানবশিশু
প্রায় এক শতাব্দী আগে একটি অভিনব চিন্তা মাথায় এসেছিলো যুক্তরাষ্ট্রের মনোবিদ উইনথ্রপ নাইলস কেলোগ ও তার স্ত্রীর। বন্য প্রাণীকে মানবশিশুর মতো বেড়ে ওঠার সুযোগ দিলে এর মধ্যে কী কী পরিবর্তন ঘটতে পারে তা পর্যবেক্ষণের কথা ভাবছিলেন তারা। যেই ভাবা সেই কাজ, নিজের সন্তান ডোনাল্ডের সঙ্গে লালন-পালনের জন্য একটি শিম্পাঞ্জি শাবককে ঘরে নিয়ে আসেন তারা।
সাইকোলজিক্যাল রেকর্ড সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে পরিবেশের প্রভাব যাচাই করার জন্য এ পরীক্ষা চালিয়েছিলেন তারা।
ছাত্রাবস্থা থেকেই কেলোগের এ ধরনের একটি পরীক্ষা করার ইচ্ছা ছিল। মানুষের সংস্পর্শ ছাড়া প্রকৃতিতে বন্যপশুর শাবকেরা কীভাবে বেড়ে ওঠে তা বোঝার জন্য বেশ কৌতূহলী ছিলেন কেলোগ। এটি জানার জন্য মানবশিশু বনে ছেড়ে দিলে আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন তাই, তিনি উল্টোটা করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি একটি বন্যপশুর শাবককেই বরং মানব সভ্যতার সংস্পর্শে আনেন।
১৯৩১ সালর ২৬ জুন নিজের শিশুসন্তান ডোনাল্ডের সঙ্গে একইভাবে লালন করার জন্য শিম্পাঞ্জি শাবক গুয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার অস্থায়ী বাড়িতে নিয়ে আসেন কেলোগ দম্পতি। ওই সময় ডোনাল্ডের বয়স ছিল ১০ মাস, আর গুয়ার বয়স ছিল ৭ মাস। প্রায় নয় মাস ধরে পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালান তাঁরা। তবে একপর্যায়ে হুট করেই পরীক্ষা বন্ধ করে দেন। সেখানে আসলে কী ঘটেছিল তা নিয়ে অনেক জল্পনা–কল্পনা রয়েছে।
এই নয় মাসের প্রত্যেকটি মুহূর্তেই তাঁরা ডোনাল্ড ও গুয়ার ওপর নানা পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালান এবং সেগুলোর রেকর্ড রাখেন। দুই শিশুকে তাঁরা একইভাবে লালন–পালন করছিলেন। এর মধ্যে তাঁরা নানা ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করেন, যেমন—রক্তচাপ, স্মৃতি, দৈহিক আকার, প্রতিক্রিয়া, সমস্যা সমাধানের ধরন, ভয়, কথা বলা, আঁকাআঁকি করা, চলাফেরা, দৈহিক শক্তি, দক্ষতা, খেলাধুলার ধরন, ভাষার ধরন, অন্যের প্রতি মনযোগ, বাধ্যতা ইত্যাদি।
কিছু সময় ধরে এ পরীক্ষাগুলোতে ডোনাল্ডের তুলনায় গুয়া ছিল দুর্দান্ত!
১৯৫১ সালে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের দ্য ফ্যামিলি ডক্টর নামের সাময়িকীতে লেখা এক প্রতিবেদনে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের সাবেক অধ্যাপক স্যার সিরিল বার্ট এ পরীক্ষার বর্ণনা দেন। ওই প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ‘গুয়াকে কোনো পোষাপ্রাণী নয় বরং পরিবারের সদস্যের মতো বড় করা হচ্ছিল। মানবশিশুর মতোই তাকে পোশাক পরানো হচ্ছিল, খাবার খাওয়ানো হচ্ছিল, প্রশংসা করা হচ্ছিল, শাসন করা হচ্ছিল এবং শাস্তি দেওয়া হচ্ছিল।’ তবে এক বছর পূর্ণ হওয়ার পরই ডোনাল্ড বড়দের মতোই শব্দের ব্যবহার শুরু করে এবং বড়দের অনুকরণ করা শুরু করে, যা কোনো প্রাণীর পক্ষে করা সম্ভব না।
শিম্পাঞ্জি শাবক গুয়ার ক্ষেত্রে একটা সময় পর জ্ঞানীয় সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। জিনগতভাবে শিম্পাঞ্জি হওয়ায় কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ বা শিক্ষণই এ বাধা দূর করতে পারেনি। অর্থাৎ এখানে সক্ষমতার একটি প্রাকৃতিক পার্থক্য ছিল।
স্মিথসোনিয়ান সাময়িকীতে র্যাচেল নিউয়ার লেখেন, হতে পারে, কেলোগ দম্পতি নয় মাসের বিরতিহীন লালন–পালন এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। অথবা সম্ভবত গুয়া ক্রমে দৈহিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছিল এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। কেলোগ দম্পতি হয়তো ভয়ে ছিলেন; গুয়া তার মানবভ্রাতা ডোনাল্ডের ক্ষতি করে ফেলতে পারে।
বৈজ্ঞানিক লেখকেরা পরে আরেকটি সম্ভাব্য কারণ উল্লেখ করেন, যদিও গুয়ার মধ্যে মানুষের ভাষা শেখার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি, তার ভাই ডোনাল্ড ঠিকই গুয়ার মতো শিম্পাঞ্জির আওয়াজ অনুকরণ করতে শুরু করেছিল। সংক্ষেপে বলা যেতে পারে, গুয়ার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে ডোনাল্ডের ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ায় এ পরীক্ষা বন্ধ করা হয়ে থাকতে পারে।
কোনো শিশুকে যদি শিম্পাঞ্জির সঙ্গে এমনভাবে বড় করা হয় যেন তারা একই প্রজাতির তাহলে, মানবশিশুর বিকাশই বাধাগ্রস্ত হয়। গুরুত্বপূর্ণ গঠনমূলক বয়সে মা–বাবা, ভাই–বোন এবং খেলার সঙ্গীদের কাছ থেকে ডোনাল্ডের কথা বলা শেখার কথা, কোনো বনমানুষ প্রজাতির কাছ থেকে নয়। কারণ শেষ পর্যন্ত শিম্পাঞ্জি কখনোই কথা বলবে না কিন্তু মানবশিশুর কথা শেখা ঠিকই বিলম্বিত হয়ে পড়বে।
কেলোগ দম্পতি ১৯৩৩ সালে এ পরীক্ষার ওপর একটি প্রতিবেদন ও একটি বই লেখেন।
‘দ্য এপ অ্যান্ড দ্য চাইল্ড’ শীর্ষক গবেষণাটি বৈজ্ঞানিক ঘটনার চেয়ে বেশি ঐতিহাসিক। গুয়া শারীরিকভাবে ডোনাল্ডের চেয়ে অনেক দ্রুত বিকশিত হয়েছিল। গুয়া বড়দের আচার–আচরণের অনুকরণ করছিল। মানুষের মতোই সে জুতা পরতো, হাতল ধরে দরজা খুলত, নিজেই গ্লাসে পানি ঢেলে খেত ও চামচ দিয়ে খাবার খেত। শারীরিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও শিম্পাঞ্জিটি মানবশিশুটিকে ছাড়িয়ে যায়।
পরে কেলোগ দম্পতি ইন্ডিয়ানায় ফেরত যান। গুয়াকে প্রাইমেট সেন্টারে ফেরত পাঠানো হয়। সেখানে এক বছর পরই নিউমোনিয়ায় মৃত্যু হয় গুয়ার। ১৯৭৩ সালে ৪৩ বছর বয়সে ডোনাল্ড কেলোগ আত্মহত্যা করেন।
টুকিটাকি
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২ বছর ধরে তরুণীকে ধর্ষণ
তরুণীকে একাধিক বার ধর্ষণের অভিযোগে রোববার মুম্বাইয়ের যোগেশ্বরী থেকে ২৮ বছরের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঠাণে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযুক্তের নাম রিয়াসাত ইলিয়াস কুরেশি। গেলো দু’বছর ধরে এক তরুণীকে লাগাতার ধর্ষণ করেছে সে।
অভিযুক্ত ও নির্যাতিতা দু’জনেই ঠাণের বাসিন্দা। ২০২১ সালে বছর ২৪-এর ওই তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতায় ইলিয়াস। কিছু দিনেই বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমে। এর পর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ওই তরুণীর সঙ্গে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক করে সে। একবার ওই তরুণীকে গর্ভপাত করাতেও বাধ্য করা হয়।
কিন্তু এ বছর তরুণী বিয়ের কথা তুলতেই বেঁকে বসে সে। এর পরেই ইলিয়াসের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক বার ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন ওই তরুণী।
রাবোড়ি থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত পেশায় এক জন দর্জি। নিজের দোকান রয়েছে তার। ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পর বিয়েতে রাজি না হওয়াতে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন এক মহিলা। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে রবিবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জেএইচ
টুকিটাকি
বরের বাবা পালিয়ে গেলেন কনের মাকে নিয়ে
যুগলের বিয়ের আগে বরের বাবা পালিয়ে গেলেন কনের মাকে নিয়ে। অনেক খুঁজেও তাদের হদিস মিলল না। অগত্যা পুলিশের দ্বারস্থ হয় পরিবার।
ঘটনাটি ভারতের উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্চ জেলার। অভিযোগ, মাস দুয়েক আগে যুগলের বাগ্দান পর্ব সারা হয়েছিল। বাকি ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। তারই তোড়জোড় চলছিল। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন আগে হঠাৎই উধাও হয়ে যান বরের বাবা। ওই একই সময় থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না কনের মায়েরও। দুই পরিবার এ নিয়ে বিভ্রান্ত হয়। নানা জায়গায় দু’জনের খোঁজ করা হয়। কী থেকে কী হয়েছে, কারও সে সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না।
প্রায় এক মাস ধরে দু’জনের খোঁজ করে পরিবার। এরপর বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন কনের বাবা। তার অভিযোগ, তার স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন তার হবু জামাইয়ের বাবা। অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করেছে পুলিশ। তাতে অভিযুক্তের নাম শাকিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তার নিজেরই ১০ সন্তান। এ ছাড়া, ওই মহিলার আরও ছয় সন্তান রয়েছে। মোট ১৬ সন্তান রেখে তারা পালিয়েছেন।
কনের বাবা থানায় জানিয়েছেন, গেলো ৩ জুন থেকে তার স্ত্রী নিখোঁজ। একই সময় থেকে পাওয়া যাচ্ছে না হবু জামাইয়ের বাবাকেও। তিনি মহিলাকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা অভিযোগকারীর।
তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, দু’জন স্বেচ্ছায় একে অপরের সঙ্গে বাড়ি ছেড়েছেন। তবে বিশদে জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশ মনে করছে, যুগলের বাগ্দানের পর থেকেই বরের বাবা এবং কনের মা নিজেদের মধ্যে কথা বলা শুরু করেন। গোপনে তারা একে অপরের সঙ্গে কথা বলতেন। ক্রমে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পরেই দু’জন পালানোর সিদ্ধান্ত নেন।
স্থানীয় স্টেশন হাউস অফিসার বিনোদ কুমার বলেছেন, ‘অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গেলো ১১ জুলাই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬ ধারা অনুযায়ী অপহরণের মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আমাদের অনুমান, মহিলা নিজের ইচ্ছাতেই পালিয়েছেন। তবু পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি স্বেচ্ছায় না হয়ে থাকলে ওঁকে ফিরিয়ে আনা হবে।’
জেএইচ
টুকিটাকি
স্বামীর গায়ের রং কালো, তাই বাপের বাড়ি চলে গেলেন স্ত্রী
স্বামীর গায়ের রং কালো হওয়ায় শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে গেলেন স্ত্রী! বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই স্ত্রী বাপের বাড়িতে চলে গেছেন বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন যুবক। তার অভিযোগ, সদ্যোজাত সন্তানকে ফেলে বাপের বাড়ি চলে গেছেন স্ত্রী। আর ফিরতে চাইছেন না। চলে যাওয়ার কারণ হিসাবে স্বামীর গায়ের রংকে দুষছেন তিনি। অন্যদিকে, অভিযুক্ত মহিলাও স্বামীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে পাল্টা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।
ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের। ২৪ বছর বয়সি যুবক পুলিশকে জানিয়েছেন, ১৪ মাস আগে তার বিয়ে হয়েছে। কিছু দিন আগে তার স্ত্রী এক কন্যা সন্তানের জন্মও দিয়েছেন। এর পরেই সন্তানকে ফেলে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন তিনি। কিছু দিন পর বাপের বাড়ি থেকে যুবক স্ত্রীকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মহিলা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, স্বামীর গায়ের রং কালো হওয়ায় তার সঙ্গে ঘর করতে চান না।
এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ আপাতত আগামী শনিবার দম্পতিকে থানায় তলব করেছে। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক ভাবে দু’জনের সঙ্গে কথা বলে আলোচনার মাধ্যমে গোলমাল মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে। তাতেও যদি মিটমাট না হয়, তবে অভিযোগ অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে পুলিশ।
গোয়ালিয়রের ভিকি ফ্যাক্টরি এলাকার বাসিন্দা ওই যুবক জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই তার গায়ের রং নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন স্ত্রী। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে একাধিক বার ঝামেলাও হয়েছিল। কিছু দিন আগে সন্তান জন্ম দওয়ার পরেই স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যান। যদিও মহিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় যে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তাতে বলা হয়েছে, স্বামী তার উপর অত্যাচার করেন। সেই কারণেই তিনি বাড়ি ছেড়েছেন।
জেএইচ