বাংলাদেশ
তারকা আত্মহত্যার মিছিলে আরেক নাম
অভিনেত্রী পল্লবী দে-র অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর এবার এক মডেলের রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। গেলো বুধবার (২৫ মে) কলকাতার নাগেরবাজারের রামগড় কলোনির বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হল বিদিশা দে মজুমদারের দেহ। ২১ বছর বয়সি মডেল বিদিশা আত্মহত্যা করেছেন না কি তার মৃ্ত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে নাগেরবাজার থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দেয়া অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে বিদিশার দেহ। ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। বিদিশার দেহের পাশ থেকে মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী প্রায়শয়ই বন্ধুদের কাছে আক্ষেপের সুরে বলতেন, ‘ওকে ছাড়া বাঁচব না। নিজেকে শেষ করে দেব।’ ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে যে শেষ পর্যন্ত সত্যি নিজের জীবন কেড়ে নেবেন, এই কথা গুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি কেউ। এদিকে এই ঘটনার পর বিদিশার বয়ফ্রেন্ড অনুভব বেরার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে পরিবারের তরফে। জানা গিয়েছে, অনুভব একটি জিমে ট্রেনার হিসেবে কাজ করতেন। বিদিশার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি অন্য অনেক মেয়েদের সঙ্গেই নাকি সম্পর্কে জড়ায় অনুভব। আর এ নিয়েই হতাশায় ভুগছিলেন বিদিশা।
এমনি হাসিখুশি মেজাজের বিদিশার বাড়ি কাঁকিনাড়ায়। সেখানেই পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তবে গত দেড় মাস ধরে নাগেরবাজারের রামগড় এলাকায় একটি ফ্ল্যাট শেয়ারে ভাড়া নেন তিনি। জানা গিয়েছে, মৃতদেহের পাশ থেকেই একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই চিঠিতে অনুভব বেরার উল্লেখ রয়েছে কি না, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি। তবে পুলিশ সম্পর্কের কথা মেনে নিয়েছে।
মডেল বিদিশা দে মজুমদারের রহস্যমৃত্যুতে তার নিকটজনেদের মুখে বারবার উঠে আসছে একটাই নাম, অনুভব বেরা। মেদিনীপুরের বাসিন্দা শরীরচর্চার এ প্রশিক্ষকের প্রতিই নাকি ছিল তার চরম দূর্বলতা। তার সঙ্গে থাকতে চেয়ে মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়াও করতেন। রাগের মাথায় নৈহাটির বাড়ি ছেড়েছিলেন মাঝরাতে। তখন থেকেই কলকাতার বাসিন্দা আধা মফস্সলের মেয়েটি। প্রথমে দুই বন্ধুর বাড়িতে অস্থায়ী ঠিকানা। তারপর নাগেরবাজারের রামগড় কলোনিতে ভাড়া বাড়িতে মাথা গোঁজার ঠাঁই। নাম গোপন রাখার শর্তে এ কথা ভারতীয় একটি পত্রিকার অনলাইনকে জানিয়েছেন মৃতার ঘনিষ্ঠতম বন্ধু।
কিন্তু এত করেও নাকি কোনও দিনই প্রেমিকের মন পাননি বিদিশা। পুরোটাই ছিল তার একতরফা প্রেম। এটা তার বন্ধুরা বুঝলেও বিদিশা নাকি বুঝেও বুঝতে চাইতেন না। সারা ক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতেন, প্রেমিক তাকে ছেড়ে চলে যাবেন না তো! অকালপ্রয়াত মডেলের বন্ধুর দাবি, মৃত্যুর কয়েক দিন আগেও ফোনে ভেঙে পড়েছিলেন বিদিশা। হাহাকার করে বলেছিলেন, ‘‘ও শেষ পর্যন্ত আমার হবে তো? ওকে আমি আমার করে পাব তো?’’
এ ঘটনা এক দিনের নয়, শেষের দিকে প্রায়ই নাকি ফোনে বন্ধুদের কাছে কাঁদতেন। তারা বোঝাতেন তাকে। সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়ে আসার পরামর্শও দিতেন। কারণ, বন্ধুদের দাবি— অনুভব নাকি আরও নারীসঙ্গে লিপ্ত ছিলেন। এ কথা বিদিশাও জানতেন। তবু তিনি আকর্ষণ এড়াতে পারতেন না। বিদিশার মৃত্যুর খবরে তাদের ক্ষোভ, ‘‘এ লোকটার জন্য বিদিশা মা-বাবাকে ভুল বুঝেছিল। অভিমান করে বলত, আমায় ও ভালবাসে না। জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিল। এদিকে, বিদিশার মৃত্যুর খবর পেয়ে সেই মানুষের প্রতিক্রিয়া, ঘটনাটা কি আদৌ সত্যি?’’
কিছুদিন আগে পল্লবীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ফেসবুকে তা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন বিদিশা। গেলা বুধবার (২৫ মে) তার রহস্যমৃত্যুর পর চর্চায় উঠে এল অভিনেত্রীর সেই ফেবসবুক পোস্ট। ফেসবুক পোস্টে বিদিশা লিখেছিলেন, ‘মানে কী এ সব’। ফেসবুকে পল্লবীর ছবি শেয়ার করে পোস্ট করেছিলেন বিদিশা। তাতে তিনি এ-ও লিখেছিলেন, ‘মেনে নিতে পারলাম না’। ওই ঘটনার ১০ দিনের মধ্যেই নাগেরবাজারের ফ্ল্যাট থেকে বিদিশার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল।
পল্লবী দে আর বিদিশা দে মজুমদার যেন মুদ্রার এ পিঠ-ও পিঠ। দু’জনেই প্রেমিক অন্তপ্রাণ, গ্ল্যামার দুনিয়ার বাসিন্দা।এমনকি দু’জনেই শহরতলির মেয়ে। পেশা এবং প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছিলেন দু’জনেই। দুই মেয়ের পরিবার প্রেমিকের কথা জানতেন। কতটা ঘনিষ্ঠতা প্রেমিকের সাথে? টেরই নাকি পাননি! পল্লবী-বিদিশা ছিলেন একে অপরের বন্ধুও। অত্যন্ত পেশাদার। দু’জনেরই তুমুল ঝগড়া প্রেমিকের সঙ্গে। আবার সেই প্রেমিক ভালবেসে দু-চারটে ভাল কথা বললেই তারা গলে জল! তারপরেও দু’জনেই শেষ পর্যন্ত কেবল ‘প্রেম পেলেন না’, এ অভিমানে কত অনায়াসে ফুরিয়ে গেলেন! নিয়তিও যেন একই সুতোয় মিলিয়ে দিয়ে গেল এ দুই বন্ধুকে!
অনন্যা চৈতী
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ