অর্থনীতি
হঠাৎই পেঁয়াজের দামে সেঞ্চুরি!
বাজারে নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়ে আসছিলো সপ্তাহ জুড়ে। তবে রোববার (২৮ জানুয়ারি) থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। খুচরা বাজারে দাম বাড়তে বাড়তে ফের সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে পেঁয়াজ।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দাম বৃদ্ধির এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারের বেশিরভাগ দোকানেই নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে।
রাজধানীর মিরপুর শেওড়াপাড়া বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত ৪-৫ দিন আগে পেঁয়াজ কিনলাম ৮০ টাকায় আর আজ কিনতে এসে দেখি দাম হয়ে গেছে ১০০ টাকা। ২-১ দিনের মধ্যে হঠাৎ কিভাবে দাম ২০ টাকা বেড়ে যায়? দেশে বাজার মনিটরিং বলে কী কিছু আছে? যারা অসাধু ব্যবসায়ী তারা হঠাৎ সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের জিম্মি করে ফেলে।
রাজধানীর গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারে দীর্ঘদিন ধরে পেঁয়াজ বিক্রি করে আসছেন সিরাজুল ইসলাম নামের একজন বিক্রেতা। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি মূলত পাবনা থেকে পেঁয়াজ কিনে এনে এখানে আমার দোকানে খুচরা বিক্রি করি। এছাড়া মাঝে মাঝে ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ পাইকারি বাজারগুলো থেকে পেঁয়াজ আনি। পাবনাতে এখন প্রতি মণ পেঁয়াজ কেনা পড়ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। পরিবহনসহ নানান খরচ মিলিয়ে ঢাকার খুচরা বাজারে সেই পেঁয়াজ আজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। আমার যে ব্যবসায়ীরা পাবনাতে আছে তারা আমাকে গতকাল জানিয়েছে সেখানে প্রতি মণ ৩২০০ থেকে ৩৪০০ টাকা কেনা পড়ছে। মূলত গতকাল থেকেই এমন দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, মূলত নতুন বা মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলা শেষের দিকে। প্রায় দেড় মাস আগে এই পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছিল, এখন কৃষকের সেই পেঁয়াজ শেষের দিকে। ফলে সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ না থাকায় হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এখন কৃষকের মূল পেঁয়াজ যেটা বছর জুড়ে পাওয়া যায় সেই পেঁয়াজ উঠতে কিছুদিন সময় লাগবে। সে পর্যন্ত এমন বাড়তি দাম থাকতে পারে।
রাজধানীর মালিবাগ বাজারে বাজার করতে আসা গার্মেন্টস কর্মী রেজাউল করিম বলেন, পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে জানলাম পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা তাই আধা কেজি পেঁয়াজ কিনলাম। সব জিনিসের দাম বাজারে অতিরিক্ত বেশি, এরমধ্যে আবার বাড়লে পেঁয়াজের দাম। সব কিছুর দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের সংসার পরিচালনা করাই কঠিন।
পেঁয়াজ পাইকারি কেনা দামই বেশি পড়ছে, তাই খুচরা বাজারেও দাম বেড়েছে জানিয়ে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার এক মুদির দোকানি রহমান মিয়া বলেন, আজ সকালে দোকানে বিক্রির জন্য কয়েক পাল্লা পেঁয়াজ কিনে এনেছি। সেখানে প্রতি পাল্লা (৫ কেজিতে এক পাল্লা) দাম পড়েছে ৪৭০ টাকা, মানে প্রতি কেজি পড়েছে ৯৪ টাকা। এরপর আছে রিকশায় করে আনার খরচ। সব মিলিয়ে আজ খুচরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১০০ টাকায়। তিন দিন আগেই পাইকারি পেঁয়াজ কিনেছি ৭০ টাকায় তখন বিক্রি করেছি ৮০ টাকা কেজি। কিন্তু গতকাল থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে কেনা বেশি তাই খুচরা বাজারেও পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী গতকাল রাজধানীতে প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।
টিসিবির সহকারী পরিচালক (বাজার তথ্য) নাসির উদ্দিন তালুকদার জানান, গতকাল নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, ঠিক এক দিন আগে এটার দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। সেই সঙ্গে গত মাসে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে গিয়েছিল তাই সে সময়ও নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। তবে গত বছর এই সময় নতুন পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে আইএমএফ
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে আইএমএফ ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘প্রাণহানি ও মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায়’ আইএমএফ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশ ও দেশটির মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সংস্থাটি পাশে থাকবে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। ইতোমধ্যেই তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। আর ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে সংস্থাটির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমতুল্য। সুতরাং, তাদের সমর্থন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এসি//
অর্থনীতি
আজ ব্যাংক থেকে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যাবে না
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আজ (০৮ আগস্ট)। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে এ সিদ্ধান্ত শুধু আজকের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বুধবার (০৭ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের এক জরুরি বার্তায় এ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করা যাবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজকের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে শাখায় টাকা দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়েছে। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে কোনো সরকার নেই এবং আজ নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। এই সময়ে কেউ যাতে নগদ টাকা নিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
এসি//
অর্থনীতি
এনবিআর চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্তের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আর বিক্ষোভের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জন চলছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই এনবিআর এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এনবিআরের কর্মচারীরা জানান, তারা দীর্ঘ দিন থেকে তাদের নানা দাবি ও অসুবিধা এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এসব দাবি তিনি পূরণ করেন নাই। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআর কর্মচারীদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মত করে চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়।
এসময়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তা প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।
২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।
৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।
৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ব বান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।
৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।
৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।
৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।
৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।
আই/এ