আন্তর্জাতিক
ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র: পেন্টাগন
জর্ডানে ড্রোন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তিন সেনা নিহত হয়েছেন আর আহত হয়েছেন ৪০ জনেরও বেশি। দেশটির সিরিয়া সীমান্তবর্তী একটি সামরিক ঘাঁটিতে হওয়া এই ড্রোন হামলা ও হতাহতের জেরে সামনে আসছে যুদ্ধের শঙ্কা।
তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চাইছে না যুক্তরাষ্ট্র। যদিও যুক্তরাষ্ট্র তার সৈন্যদের রক্ষা করার জন্য ‘সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠীর জর্ডানে প্রাণঘাতী ড্রোন হামলার পরে যুক্তরাষ্ট্র তার সৈন্যদের রক্ষা করার জন্য ‘সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ নেবে বলে সোমবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। যদিও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন জোর দিয়ে বলছে, তারা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চাইছে না।
গেলো রোববার (২৮ জানুয়ারি) ওই হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত এবং ৪০ জনেরও বেশি সেনা আহত হয়। গেলো বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটিই ছিল মার্কিন সৈন্যদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রাণঘাতী কোনও হামলা। এছাড়া গেলো বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং গাজায় ইসরায়েলের বিধ্বংসী প্রতিশোধমূলক হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল, এই হামলা সেই উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দেবে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
হামলার পরদিন সোমবার (২৯ জানুয়ারি) মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, ‘জর্ডানে তিন সাহসী মার্কিন সেনার মৃত্যু এবং আহত অন্যান্য সৈন্যদের জন্য আমার ক্ষোভ এবং দুঃখ দিয়ে (কথা) শুরু করা যাক।’
পেন্টাগনে ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে অস্টিন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট (জো বাইডেন) ও আমি মার্কিন বাহিনীর ওপর কোনও ধরনের হামলা সহ্য করব না এবং আমরা যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের সৈন্যদের রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেব।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেমন গতকাল বলেছেন, আমরা (হামলার) প্রতিক্রিয়া জানাব এবং সেই প্রতিক্রিয়া বহু-স্তরীয় হতে পারে, পর্যায়ক্রমে আসতে পারে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চলতে পারে।’
তবে বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, তারা উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতি আরও বাড়াতে চান না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানও যুদ্ধ চায় না বলে ইঙ্গিত দিয়েছে পেন্টাগন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অবশ্যই যুদ্ধ চাই না এবং সত্যি বলতে আমরা দেখতে পাচ্ছি না যে, ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চায়।’
তিনি আরও বলেন, পেন্টাগন বিশ্বাস করে ইরান নিজেও যুদ্ধ চায় না।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তার মুখপাত্র জন কিরবি বলছেন, ‘আমরা সামরিক উপায়ে (ইরানের সরকারের) সাথে সংঘাত চাইছি না।’
তিনি আরও বলেন, হামলার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে সেসব বিকল্প নিয়ে কাজ করছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
রয়টার্স বলছে, গেলো বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকান বাহিনীকে ইরাক, সিরিয়া, জর্ডান এবং ইয়েমেনের উপকূল থেকে ইরান-সমর্থিত বাহিনী ১৬০ বারেরও বেশিবার আক্রমণ করেছে।
তবে সিরিয়ার জর্ডানের উত্তর-পূর্ব সীমান্তের কাছে টাওয়ার ২২ নামে পরিচিত একটি দূরবর্তী চৌকিতে রোববারের হামলার আগ পর্যন্ত আগের কোনো হামলাতেই মার্কিন সৈন্য নিহত বা এত বেশি সংখ্যক সেনা আহত হয়নি। হামলার শিকার এই ঘাঁটিতে প্রায় ৩৫০ মার্কিন সেনা ছিলেন।
রোববারের হামলার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার প্রতিক্রিয়া জানাবে। তবে এ বিষয়ে আর বিশদ কোনো বিবরণ তিনি দেননি।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//