আন্তর্জাতিক
গাজায় দুর্যোগপূর্ণ মানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে: জাতিসংঘ
গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য কাজ করা সাহায্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর বিকল্প আর কোনো কিছুই হতে পারে না। বলেছে জাতিসংঘ।
ইসরায়েলে হামাসের হামলার সময় সংস্থাটির সদস্যরা জড়িত ছিল, দেশটির এমন অভিযোগের পর গাজায় কর্মরত সংস্থাটির সমন্বয়ক এক প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন। গাজায় ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে ইসরায়েল।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অভিযোগের পর ইউএনআরডব্লিউএর জন্য অর্থ সাহায্য প্রদান স্থগিত করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও জাপান। তবে সহায়তা যেন বন্ধ করে না দেয়া হয় সে লক্ষ্যে দাতা দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘের অধিকার বিষয়ক সংস্থা, ইউনিসেফ ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধানরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি ইউএনআরডব্লিউএর জন্য অর্থ সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়, তবে গাজায় দুর্যোগপূর্ণ মানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
জাসিংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যে আন্তসমন্বয়ের জন্য গঠিত স্ট্যান্ডিং কমিটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউএনআরডব্লিউএর তহবিল প্রত্যাহার করে নিলে গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ভেঙে পড়বে। এতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডসহ গোটা অঞ্চলে মানবাধিকার ও মানবিক সহায়তার প্রশ্নে চরম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
গেলো মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ইসরায়েল আবারও অভিযোগ করেছে, হামাস ইসরায়েলে হামলা চালাতে ইউএনআরডব্লিউএর অবকাঠামো ব্যবহার করেছে। এই অভিযোগের পর বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আরও তুঙ্গে ওঠে। তবে সংস্থাটি অভিযোগের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ হিসেবে তাদের ১২ জন কর্মীকে চাকরিচ্যুত করে। পাশাপাশি এটাও জানায় দাতারা সাহায্য বন্ধ করে দিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা।
ইসরায়েল এর আগেও বলেছিল, গাজা যুদ্ধ থেমে যাবার পরে তারা ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে। ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র এইলোন লেভি এ বিষয়ে বলেন, সংস্থাটি ব্যাপক হারে ‘সন্ত্রাসীদের’ চাকরিতে নিয়োগ দিয়েছে, হামাসের সামরিক তৎপরতায় নিজেদের অবকাঠামো ব্যবহার করতে দিয়েছে এবং গাজা উপত্যকায় সাহায্য সামগ্রী বিতরণে হামাসের ওপর নির্ভর করেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা গত অক্টোবর থেকে ইউএনআরডব্লিউএকে এ পর্যন্ত ১৩১ মিলিয়ন ডলার প্রদান করেছে, যা সংস্থাটির কাজকে ভীষণ সহায়তা করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ইইএনআরডব্লিউএর মতো এত ব্যাপক মানবিক সহায়তার কাজ আর কেউ করতে পারছে না। সহায়তামূলক কাজ চলুক, এটাই আমরা চাই। তবে খারাপ কাজের সঙ্গে যে কেউ জড়িত হলে, তার তদন্ত করা দরকার। আমরা চাই, জাতিসংঘ এই বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।’
গেলো বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে হামাস এক হাজার ১৪০ জনকে হত্যা করেছে। এদের বেশির ভাগই ছিল নিরীহ বেসামারিক লোক। এ ছাড়া হামাস ২৫০ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে আসে, যাদের মধ্যে ১৩২ জন এখনও তাদের হাতে বন্দি রয়েছে।
হামাসের এই তৎপরতার পাল্টা জবাব হিসেবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণে এ পর্যন্ত গাজায় ২৬ হাজার ৭৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের বেশির ভাগই নিরীহ নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//