আন্তর্জাতিক
সপ্তাহে ৪ দিন কাজ, ৩ দিন ছুটি, কমবে না বেতন!
কম কাজ, একই বেতন, আগের চেয়ে সুখী এবং উৎপাদনশীল কর্মী। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে জার্মানির ৪৫টি কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে ৪ কার্যদিবসের সপ্তাহ চালু করছে। পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে হিমশিম খাচ্ছে জার্মানি, তার মধ্যেই কয়েক ডজন কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে কর্মীদের কাজ সময় কমিয়ে দিচ্ছে। ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির ৪৫টি কোম্পানি ও সংস্থা ছয় মাসের জন্য চার কার্যদিবসের সপ্তাহ চালু করছে।
তবে এ সময় কাজ কম করলেও কর্মীরা পুরো বেতনই পাবেন। অলাভজনক সংস্থা ফোর ডে উইক গ্লোবালের (৪ডিডব্লিউজি) সঙ্গে যৌথভাবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইন্ট্রাপ্রেনর-এর নেতৃত্ব এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জার্মানিতে।
তারা বলছে, সপ্তাহে চার কার্যদিবস চালু হলে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়বে। ফলে দেশটির দক্ষ কর্মী সংকটের উপশম হবে। জার্মানি দীর্ঘদিন ধরেই পরিশ্রম ও দক্ষতার জন্য বিখ্যাত। তারপরও গত কয়েক বছরে দেশটিতে উৎপাদনশীলতা কমে গেছে।
চার কার্যদিবস চালু করার পক্ষের কর্মীরা বলছেন, সপ্তাহে পাঁচ দিনের বদলে চার কাজ করা কর্মীরা বেশি উদ্যমী ও চনমনে থাকেন। সে কারণে তারা বেশি উৎপাদনশীল হন। এছাড়া যারা সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করতে আগ্রহী নন, এমন অনেক লোককে শ্রমশক্তিতে যুক্ত হতে আগ্রহী করবে এই মডেল। এতে কর্মী সংকটও অনেকটাই কমবে।
সপ্তাহে চার কার্যদিবসের ধারণা নিয়ে আগেও কাজ হয়েছে। ৪ডিডব্লিউজি ২০১৯ সাল থেকে যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রে পাইলট কর্মসূচি চালিয়েছে। ৫০০-র বেশি কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে চার কার্যদিবসের সপ্তাহ চালু করেছে। আর প্রাথমিকভাবে ছুটি বাড়িয়ে ও কার্যদিবস কমিয়ে ভালো ফল পাওয়া গেছে।
এছাড়া কাজের সময় কমানোর ফলে অসুস্থতাজনিত ছুটিও কমেছে দুই-তৃতীয়াংশ। জার্মান স্বাস্থ্যবিমা কোম্পানি ডিএকের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, গত বছর দেশটিতে কর্মীরা গড়ে ২০ দিন অসুস্থতাজনিত ছুটি নিয়েছেন। অর্থাৎ ২০২৩ সালে জার্মানিতে চাকরিতে অসুস্থতাজনিত অনুপস্থিতির কারণে প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার প্রকৃত আয় হারিয়েছে বলে জানিয়েছে জার্মান অ্যাসোসিয়েশন অভ রিসার্চ-বেজড ফার্মাসিউটিক্যালস (ভিএফএ)।
আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, যুক্তরাজ্যের পরীক্ষায় গবেষকরা আরও দেখেছেন, অংশগ্রহণকারী ৬১টি কোম্পানির মধ্যে ৫৬টি কোম্পানির আয় প্রায় ১.৪ শতাংশ বেড়েছে। অধিকাংশ কোম্পানিই জানিয়েছে, পরীক্ষামূলক পর্যায়ের পরও তারা চার কার্যদিবসের সপ্তাহ চালু রাখতে আগ্রহী।
তবে কিছু বিশেষজ্ঞ জার্মানিতে এই মডেলের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান। তারা বলছেন, যেসব কোম্পানির সঙ্গে চার কার্যদিবসের সপ্তাহ সামঞ্জস্যপূর্ণ, কেবল ওই কোম্পানিগুলোই এই মডেল থেকে উপকৃত হবে।
গবেষক হোলগার শেফার গণামাধ্যমে বলেন, কর্মঘণ্টা ২০ শতাংশ কমিয়ে উৎপাদনশীলতা ২৫ শতাংশ বাড়ানোর আশা করাটা অলীক চিন্তা।
অর্থনীতিবিদ বার্ন্ড ফিটজেনবার্গ বলেন, নার্সিং, সিকিউরিটি পরিষেবা কিংবা পরিবহনের মতো খাতগুলোতে চার কার্যদিবসের সপ্তাহ বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। তবে বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও চার কার্যদিবসের সপ্তাহ মনোযোগ কাড়তে পেরেছে। বেশ কিছু বড় প্রতিষ্ঠানও এখন সপ্তাহে চার দিন কাজ করার কথা বলছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩ হাজার কর্মীকে নিয়ে চার কার্যদিবসের পরীক্ষা চালিয়েছিলেন কেমব্রিজ ও বোস্টনের গবেষকরা। তারা দেখেছেন, ৪০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী এ পরীক্ষার পর চাপ কম অনুভব করার কথা জানিয়েছেন। আর কর্মীদের চাকরি ছাড়া কমেছে ৫৭ শতাংশ।
এএম/
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//