অপরাধ
অপহরণের নাটক সাজিয়ে বাবার কাছ থেকে ছেলের টাকা আদায়
নিজে অপহরণের নাটক কলেজপড়ুয়া এক শিক্ষার্থী সাজিয়ে বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীতে। সাজানো অপহরণের ৮ দিন পর ওই শিক্ষার্থীকে সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হুগলীপাড়া থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই শিক্ষার্থীর নাম হুমায়ুন কবির বাবু (২২)। তিনি অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ছিলেন বলে জানা যায়। গেলো বৃহস্পতিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) সৈয়দপুর থানায় এক ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) কল্লোল কুমার দত্ত এসব তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হুগলীপাড়ার তহিদুল ইসলাম ও হামিদা বেগম দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে হুমায়ুর কবির বাবু সবার ছোট। চার বছর আগে হুমায়ুর কবির বাবুর বাবার সঙ্গে তার মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তার মা হামিদা বেগম প্রায় দুই বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে স্বামীর সঙ্গে ঢাকার আশুলিয়ায় থাকেন। আর বাবুর বাবা তহিদুল ইসলাম কাতার প্রবাসী।
বর্তমানে হুমায়ুর কবির রংপুর কারমাইকেল কলেজে উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। বেশ কিছু দিন ধরে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। এতে অনেক ঋণগ্রস্ত হয়ে যান। ঋণ থেকে মুক্তি পেতে তিনি নিজেকে অপহরণের নাটক সাজানোর ফন্দি আটেন। গেলো ২৩ জানুয়ারি সৎ মা স্বপ্না বেগম এবং চাচি মালেকা বেগমকে নিয়ে সৈয়দপুর প্লাজায় যান তিনি। এরপর সেখানে তাদের বসিয়ে রেখে গা ঢাকা দেন।
বাবুর স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, হুমায়ুন কবির বাবু সৎ মা ও চাচিকে সৈয়দপুর প্লাজায় বসিয়ে রেখে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা করে নীলফামারীতে চলে যান। সেখানে হাবিবুর রহমান নামে একজনের সঙ্গে তার চুক্তি হয় অপহরণ নাটক সাজিয়ে যে টাকা আসবে তা তারা দু’জনে সমান ভাগে ভাগ করে নেবে। এরপর হাবিবুর হুমায়ুন কবির বাবুকে তার নীলফামারী সদরের চাঁদের হাট এলাকার বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে তাকে বন্ধু হিসেবে পরিচয় নিয়ে থাকার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে হুমায়ুন কবির বাবু তার কাতার প্রবাসী বাবাকে কল করে জানান, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে তাকে ছেড়ে দেবে অপহরণকারীরা। বাবার বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য স্থানীয় একটি স্কুল ঘরের মধ্যে বাবু নিজের হাত-পা বেঁধে বাবাকে ইমোতে দেখান।
অন্যদিকে, বাবুর মা হামিদা বেগম ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে থানায় একটি জিডি করেন। পরবর্তীতে বাবুর বাবার কাছ থেকে তাকে অপহরণের বিষয়ে জানতে পেরে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। বাবুর বাবা তার ছেলেকে পেতে অপহরণকারীদের জন্য ৫০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দেন।
থানায় মামলা দায়ের হলে সৈয়দপুর থানা পুলিশ ঘটনাটি নিয়ে তদন্তে নামেন। আর পুলিশি তৎপরতা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অপহরণ নাটকের হোতা হুমায়ুন কবির বাবু বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে ফিরে আসার খবর পেয়ে পুলিশ বাবুকে থানায় নিয়ে আসে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নাটকের বিষয়টি ধরা পড়ে।
বাবুকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির দেয়ার পর তাকে তার বাবা-মায়ের জিম্মায় দিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সৈয়দপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ