জাতীয়
ক্ষমতার অপব্যবহার করে মেয়েকে ছাড়িয়ে নিলেন এমপির স্ত্রী: টিআইবি
বগুড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটক হওয়া মেয়েকে প্রভাব খাটিয়ে বগুড়া-৫ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্যের স্ত্রীর ছাড়িয়ে নেয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিবৃতিতে এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়ে টিআইবি ঘটনাটিকে জনপ্রতিনিধি এবং তাদের স্বজনদের ক্ষমতার অপব্যবহারকে স্বাভাবিকীকরণের নিয়মিত উদাহরণ হিসেবে দাবি করেছে।
গেলো শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে বগুড়ার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ১৯ জনকে পরীক্ষায় প্রতারণার অভিযোগে আটকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। এ সময় বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্যের স্ত্রী ডিবি কার্যালয়ে যান এবং ক্ষমতা খাটিয়ে তার মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
বিষয়টিকে ক্ষমতার অপব্যবহারের চরম হতাশাজনক দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। ক্ষমতাকাঠামোর সর্বস্তরে জনপ্রতিনিধি ও তাদের আত্মীয় স্বজনরা ক্ষমতার অপব্যবহারকে স্বাভাবিকতায় পরিণত করে তোলার যে চেষ্টা করছেন- এটি তারই উদহারণ। আইন সবার জন্য সমান হওয়ার কথা থাকলেও, এ ঘটনা প্রমাণ করে দেশে ক্ষমতাশালীরা চাইলেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে পারেন; কেননা একই মামলায় আটক অন্য অভিযুক্তদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
ড. জামান বলেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি প্রথম অপরাধ। এরপর অভিযুক্তকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করে অভিযুক্ত মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংসদ সদস্যের স্ত্রী একদিকে যেমন পরীক্ষায় জালিয়াতি করাকে অন্যায় সমর্থন যুগিয়েছেন তেমনি প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করায় সমানভাবে অপরাধী।’
অন্যদিকে, সংসদ সদস্যের স্ত্রীর হস্তক্ষেপ মেনে নিয়ে আইন বহির্ভূতভাবে প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেয়ার সঙ্গে জড়িতরাও একই মাত্রায় আইন লঙ্ঘন করেছেন। তাই এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
জনপ্রতিনিধি ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে “সংসদ সদস্য আচরণ আইন” প্রণয়ণের দাবি জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সংসদের অভ্যন্তরে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে কার্যপ্রণালি বিধিতে সুস্পষ্ট বিধি বিধান থাকলেও সংসদের বাইরে তাদের সংযত আচরণ নিশ্চিত ও ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে কোনো আইন নেই। ২০১০ সালের ১৪ জানুয়ারি নবম জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ১৫টি ধারা সম্বলিত একটি বেসরকারি বিল সংসদে উত্থাপন করেছিলেন। নাগরিক সমাজ থেকে বারবার আহ্বান জানানো হলেও, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিলটি পাসের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট অংশীজনের পরামর্শ ও পর্যালোচনার মাধ্যমে সংসদ সদস্য আচরণ বিলটি অবিলম্বে জাতীয় সংসদে পুনরায় উত্থাপন ও আইন হিসেবে পাস করার দাবি জানাচ্ছে টিআইবি।’
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ