এশিয়া
ইমরান খানকে কারাগারে রেখেই পাকিস্তানে চলছে ভোট
নানা অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা শঙ্কা কাটিয়ে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হচ্ছে আজ। তবে এই নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় সম্ভবত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অনুপস্থিতি। বেশ কয়েকটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি এখন কারাগারে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা (বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা) থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র পৃথক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান সহিংসতা এবং কারচুপির অভিযোগের মধ্যেই নতুন সরকার গঠনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার কোটি কোটি পাকিস্তানি নাগরিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন।
ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রায় দুই বছর পর এই নির্বাচন হচ্ছে। ক্ষমতাচ্যুত করার পর ইমরান খানকে দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে পাঠানো হয় এবং তাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধাও দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ নির্বাচনের লড়াইয়ে আছেন। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে কম বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হতে চলেছে। প্রার্থী, প্রচারণা এবং মতামত জরিপ সম্পর্কে কী বলা যেতে পারে সেগুলোসহ নির্বাচনের খবর কভারেজ সম্পর্কে কঠোর নিয়ম ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত বহাল থাকবে। ফলাফল দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। পাকিস্তানের এবারের নির্বাচনে প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ ভোটার তাদের ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন। যার প্রায় অর্ধেক ৩৫ বছরের কম বয়সী। তারা ৫ হাজারেরও বেশি প্রার্থীর মধ্য থেকে নতুন আইনপ্রণেতা নির্বাচন করবে। এসব প্রার্থীদের মধ্যে মাত্র ৩১৩ জন নারী।
পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) (পিএমএল-এন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) -এই দুটি প্রধান দলই ভোটের লড়াইয়ে আছে। তবে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টি থেকে প্রার্থী বাছাই করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে, কারণ দলটির ক্রিকেট ব্যাট প্রতীক ব্যবহার করা নিষিদ্ধ হয়েছে। ভোটের লড়াইয়ে নির্বাচনী প্রতীক কার্যত প্রধান ভূমিকা পালন করে, সেটিও আবার এমন একটি দেশে যেখানে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ পড়তে অক্ষম।
পিটিআই অভিযোগ করেছে, নির্বাচনী প্রতীক ছিনিয়ে নেওয়া ছাড়াও তাদের প্রার্থীদের জয়ী হওয়া ঠেকাতে অন্যান্য নানা কৌশলও ব্যবহার করা হয়েছে। যার মধ্যে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা, মিছিল-সমাবেশ করা নিষিদ্ধ করা এবং জোরপূর্বক লুকিয়ে থাকতে বাধ্য করার মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।
এছাড়া ইমরান খান কমপক্ষে ১৪ বছর কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করছেন। গত সপ্তাহে পাঁচ দিনের ব্যবধানে তিনটি পৃথক মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। তার আইনজীবীরা বলছেন, বিভিন্ন মামলায় তিনি এখনও প্রায় ১৭০টি অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। পিটিআই পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের অভিযোগ করেছে।
পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) প্রার্থীদের মধ্যে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দল গত জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল।
আর ইমরানের অনুপস্থিতিতে তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন)-এর নওয়াজ শরিফকে সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ৩৫ বছর বয়সী ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিও ভোটে জয়ের জন্য বেশ আক্রমণাত্মক প্রচারণাই চালিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে কে আসলে বিজয়ী হবেন তা স্পষ্ট না হলেও এটি নির্ধারণে পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাধর জেনারেলরা বেশ বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। স্বাধীনতার পর থেকে গেলো ৭৬ বছরে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশটিতে আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। তবে গত বেশ কয়েক বছর ধরে তারা দাবি করে, সামরিক বাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে না।
ইমরান খান বিশ্বাস করেন, তার দলকে অস্তিত্বহীন করার চেষ্টার জন্য চলমান ক্র্যাকডাউনের পেছনে সেনাবাহিনী আছে। অন্যদিকে বিশ্লেষক এবং বিরোধীরা বলছেন, সেনাবাহিনীর জেনারেলরা নওয়াজ শরিফকে সমর্থন করছেন।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। আর ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এর মধ্যে ৬০টি আসন নারীদের ও ১০টি আসন অমুসলিম প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। সরকার গঠন করতে কোনও দল বা জোটকে কমপক্ষে ১৬৯টি আসনে জয় নিশ্চিত করতে হবে।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/