সিলেট
আগুনে দু’টি মিল পুড়ে ছাই, প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ বাজারে দুটি মিল পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি। উপজেলা ফায়ার সার্ভিসে বার বার ফোন দিয়ে খোঁজ না পেয়ে ৯৯৯ ফোন দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনদের আনা হয়। এর আগে স্থানীয়দের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
স্থানীয়রা জানায়, রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে রানীগঞ্জ বাজারের ফেরী ঘাটের পাশে আওয়াল মিয়ার মালিকাধিন কয়লা ও চালের মিলে আগুন ধরে যায়। আগুনের শিখা দেখে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। বাজার মসজিদসহ আশে পাশের কয়েকটি মসজিদে ঘোষনা হওয়া পর বাজার ব্যবসায়ীসহ আশে পাশের গ্রামের লোকজন মিলে প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। এর আগে আগুন লাগার সাথে সাথে স্থানীয় মেম্বার ফায়ার সার্ভিসের মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে নাম্বার টি বন্ধ পাওয়া যায় পরে ৯৯৯ ফোন করে বার বার চেষ্টা করে দায়িত্বে থাকা লোকদের পাওয়া যায়। আসছি আসছি বলে প্রায় ১ ঘন্টা পর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসে এর আগে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। আগুন লাগার পর বাজারে থাকা প্রায় ৩০টি আগুন নিভানো বোতল নিয়ে আসলে এই বোতল গুলোর ভিতরে মালামাল না থাকায় আগুন নেভানো কাজে ব্যবহার করা যায় নাই। এ নিয়ে বাজার ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে।
আগুন নোভানো কাজে থাকা বাজারের ব্যবসায়ী শাহেদ তালুকদার, নুরুল ইসলাম নাহিদ সহ আরো অনেকে জানান, বাজারে আগুন লাগার পর আমরা বার বার ফোন দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকে পাই নাই। ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নাই। যোগাযোগ হওয়ার পর আসছি আসছি বলে প্রায় ১ ঘন্টা চলে যায়। কিন্তু জগন্নাথপুর ফায়ার স্টেশন থেকে রানীগঞ্জ বাজারে আসতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগে। আমরা আগুন নেভানোর পর তারা আসে। আমাদের যে বোতল গুলো দিয়েছে সবটি মধ্যে মাল না থাকায় এ কাজে ব্যবহার করা যায় নাই।
মিলের মালিক আওয়াল মিয়া জানান, প্রতি দিনের মত কাজ শেষ করে আমার স্টাফসহ সকলেই বাড়িতে চলে যাই। রাত ২টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে এখানে এসে দেখি মিলের মেশিন ঘড়, যন্ত্রপাতি, চালসহ প্রায় ৬০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের সুনামগঞ্জের উপসহকারী পরিচালক মো. তারেক হাসান ভূইয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শুনেছি জগন্নাথপুরে একটি বাজারে আগুন লেগেছে। আমার টিম আগুন নেভানোর জন্য গিয়েছে। কয়টা লোকের কাছে ফায়ার সার্ভিসের নাম্বার আছে। আমাদের নিয়ম হল একটা স্থানে আগুন লাগার সাথে সাথে ৩০ সেকেন্টের মধ্যে স্টেশন আউট করতে হয়। স্টেশন থেকে আপনাদের এলাকার দুরত্ব কতটুকু তা জানতে হবে আর শিতের রাত কুয়াশা থাকতে পারে এটাও বুঝতে হবে।
সিলেট
সুনামগঞ্জে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছে শিক্ষার্থীরা
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কার্যক্রম শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ট্রাফিকের দায়িত্বও পালন করেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিস্কারে নামেন সাদা টি শার্ট পরিহিত একটি টিম। গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল ওয়াহিদ, হেক্সাস গোবিন্দগঞ্জের শিক্ষক রেদ্বওয়ান আহমদসহ অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে ওই টিমে।
মহাসড়কের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করতে আসা শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কারসহ এক দফা দাবিতে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী যেভাবে সড়কে নেমে এসেছিল, তেমনি শিক্ষর্থীরা মহাসড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণে সড়কে নেমে এসেছেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ঝাড়ু দিয়ে মহাসড়ক পরিষ্কার করে ময়লা-আবর্জনা বস্তায় ভরে নির্দিষ্ট ডাম্পিং এরিয়ায় নিয়ে যান। আর তাদের পানি ও শুকনো খাবার দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মহাসড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশের মতো কাজ করছে। সত্যিই এ দৃশ্য অনেক সুন্দর। আমাদের সবাইকে তাদের সাপোর্ট করা উচিৎ। এছাড়াও তারা গতরাতে মন্দির পাহারা দিয়েছে।
এএম/
সিলেট
হবিগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, ১ জনের মৃত্যু, আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন
হবিগঞ্জে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তিনি শ্রমিক বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল তিনটার দিকে হবিগঞ্জ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে।
মারুফ হোসেন (যিনি মোস্তাকের সঙ্গে কাজ করেন) বলেন, মোস্তাক এখানে জুতা কিনতে এসেছিল। এসে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিজিবি) ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতেন। তার বাড়ি সিলেটের টুকের বাজার এলাকায়।
এক পর্যায়ে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মঈন উদ্দীন চৌধুরী বলেন, মোস্তাকের হাতে বড় ধরনের আঘাত ছিল। সেটা গুলি কি না, পরে জানানো যাবে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
এরআগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’–এর অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর হবিগঞ্জে শহরের বোর্ড মসজিদের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় পূর্ব টাউন হল এলাকায় অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন জেলা ছাত্রদল ও অন্য দলের নেতা-কর্মীরা।
এরপর মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে টাউন হল এলাকায় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে সেখানে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু জাহিরের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।এ সময় তার বাসার সামনে থাকা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়।
পরে পুলিশ সেখানে পৌঁছালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সহস্রাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোস্তাক মিয়ার মৃত্যু হয়।
পরে বায়তুল আমান জামে মসজিদের সামনে কয়েকটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেয়া হয়। এ সময় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেএইচ
সিলেট
বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন। আহতরা ঘটনায় সময় সীমান্তে মহিষ চরাচ্ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুর ১টায় কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের শিকড়িয়া সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন আহত হন বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাকির হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, সীমান্তবর্তী এক হাজার ৮৪৬ নম্বর সীমানা পিলারের কাছে টহলরত বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে আহত হন কামরুল ইসলাম ও চান্দ আলী। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে কুলাউড়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জানান, গুলিবিদ্ধ কামরুল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার বাম হাতে চারটি গুলির ক্ষত রয়েছে।
এ বিষয়ে আলীনগর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার হরি জীবন বলেন, সরকারি কাজে অন্যত্র থাকায় সীমান্তে কী ঘটেছে সেটি তার জানা নেই।
আই/এ