টলিউড
বয়সের পার্থক্য ২৭, তবু যেভাবে শুরু হয়েছিল কাঞ্চন-শ্রীময়ীর প্রেম
অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজের সঙ্গে জীবনের তৃতীয় ইনিংস শুরু করলেন অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। জানুয়ারি মাসেই দ্বিতীয় স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আইনত বিচ্ছেদ হয়েছে অভিনেতার। তার ২৩ দিনের মাথায় দীর্ঘ দিনের বন্ধু শ্রীময়ী চট্টরাজের সঙ্গে নতুন জীবনে পা দিলেন তিনি। ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেম দিবসেই সইসাবুদ করে শ্রীময়ীর সঙ্গে বিয়েটা সেরে নেন অভিনেতা।
আগামী ৬ মার্চ ২০২৪ তাদের সামাজিক বিয়ে। তাদের প্রেমের যাত্রাপথ যে খুব সহজ ছিল, তেমনটা নয়। কিন্তু যত বাধা এসেছে, ততই একে অপরের আরও কাছাকাছি আসেন তারা। কীভাবে শুরু কাঞ্চন-শ্রীময়ীর প্রেমের? সহ-অভিনেতা থেকে এক সময় গুরু-শিষ্যার সম্পর্ক। সেখান থেকে স্বামী-স্ত্রী! লম্বা সফর পার করে শুভ পরিণয় কাঞ্চন-শ্রীময়ীর।
তৃণমূলের বিধায়ক অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিকের বয়স ৫৩। অন্য দিকে এখনও ত্রিশের গণ্ডি পার করেননি শ্রীময়ী। খুব ছোট বয়স থেকেই অভিনয় জগতে পা রাখেন শ্রীময়ী। ‘বাবুসোনা’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে আলাপ তাদের। সেই সময় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শ্রীময়ী। ততদিনে কাঞ্চন টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা।
শ্রীময়ীর থেকে প্রায় ২৭ বছরের বড় কাঞ্চন। প্রায় ১২ বছর ধরে একে অপরকে চেনেন তারা। এক সময় শ্রীময়ী বলেন, ‘‘কাঞ্চনদা অভিনয় শিখিয়েছেন আমায়। কী করে ক্যামেরা ফেস করতে হয়, দেখিয়ে দিয়েছেন। আমার শিক্ষাগুরু। ওর সঙ্গে প্রেম অসম্ভব।’’ সেটা ২০২১ সাল। তখন কাঞ্চন ও পিঙ্কি বিবাহিত, এক সন্তান রয়েছে তাদের। কোভিডের সময় থেকে কানাঘুষো— শ্রীময়ীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়েছেন অভিনেতা। তবে গোটাটাই জানাজানি হয় যখন কাঞ্চনের প্রাক্তন স্ত্রী তার নামে বিস্ফোরক সব অভিযোগ আনেন। সেই সময় পিঙ্কি সরাসরি শ্রীময়ীকে দায়ী করেন। কাঞ্চনের সঙ্গে পিঙ্কির বিবাদের জল গড়ায় থানাপুলিশ পর্যন্ত।
অভিনেতার স্ত্রী পিঙ্কির দাবি ছিল, বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই নাকি খুল্লামখুল্লা প্রেম করতে শুরু করেন তারা। যখন নির্বাচনে দাঁড়ান অভিনেতা, সেই সময় তার হয়ে ভোট প্রচার থেকে ত্রাণ বিতরণ, সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন শ্রীময়ী। এই ঘটনার পর থেকেই উড়ো খবর ছিল, কাঞ্চন-শ্রীময়ী নাকি একত্রবাস শুরু করেছেন। যদিও এই সব কিছুই বার বার গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শ্রীময়ী। বরং কাঞ্চনকে ‘দাদা’ বলেই সম্বোধন করে এসেছেন। তাদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে গিয়েছেন।
অন্য দিকে, দ্বিতীয় স্ত্রী পিঙ্কির সঙ্গে তত দিনে আলগা হয়েছে অভিনেতার সম্পর্ক। স্ত্রী-সন্তানকে ছাড়াই থাকা শুরু করেন। ধীরে ধীরে কাঞ্চনের বাড়ির পুজো থেকে তার ছবির প্রিমিয়ারে কিংবা বিদেশে শুটিংয়ে, সব জায়গায় অভিনেতার সঙ্গে দেখা যেতে শুরু করে শ্রীময়ীকেই। গত বছর থেকে আগল ভাঙতে শুরু করেন তারা। সমাজমাধ্যমে ছবি দেন জুটিতে। তবে সম্পর্ক রয়েছেন কি না, সেই ধোঁয়াশা বজায় রাখেন। টলিপাড়ার অন্দরে কানাঘুষো চলছিল, বিয়ে করবেন এই যুগল। শেষমেশ সব জল্পনাকে সত্যি করে ঘর বাঁধলেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী।
টলিউড
কাধে ঝোলা ব্যাগ নিয়ে লন্ডনে ঘুরছে স্বস্তিকা মুখার্জি
পরনে লাল রঙের শাড়ি,গায়ে হাতাকাটা আকাশি রঙের ব্লাউজ, মাথায় হ্যাট। কাধে ঝোলা ব্যাগ, চোখে-মুখে লেগে আছে অমলিন হাসি। দুই হাতে জুতো নিয়ে ফেসবুকে এমনই একটি ছবি পোস্ট করেছেন ওপার বাঙলার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি। ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করার পর নেটিজেনরা তার সৌন্দর্যের প্রশংসা করছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, জুতা হাতে কেন দাঁড়িয়ে আছেন স্বস্তিকা?
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি । সাম্প্রতি তার মেয়ে অন্বেষা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। মেয়ের সমবর্তন উপলক্ষ্যে স্বস্তিকা মুখার্জি মেয়ে অন্বেষার সঙ্গে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। এর এক ফাঁকে জুতা হাতে ক্যামেরাবন্দি হন এই অভিনেত্রী।
স্বস্তিকা মুখার্জি ফেইসবুক পোস্টে লিখেন, ‘মায়েরা যেটা সব থেকে ভালো পারে সেটাই করছি। সব পোশাকের সঙ্গেই বোঁচকা ব্যাগ নিয়ে চলছি। হাতে স্যান্ডেল নিয়ে ঘুরছি যাতে ইভেন্টের পর মেয়ে পরতে পারে। হিল সাময়িক ব্যবহার করার জন্যই। আর এই ব্যাগে নিজের গোটা সংসার নিয়ে ঘুরছি।’
জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সাগর সেনের ছেলে প্রমিত সেনকে ১৯৯৮ সালে বিয়ে করেন স্বস্তিকা মুখার্জি। বাবা-মায়ের পছন্দেই এ বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু সংসার জীবনে ছন্দপতন ঘটে কয়েক বছরের মধ্যে । দুধের সন্তানকে কোলে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন স্বস্তিকা। তারপর থেকেই সিঙ্গেল মাদার হিসেবে একমাত্র কন্যা অন্বেষাকে বড় করেন এই নায়িকা।
জেডএস/
টলিউড
মমতার হস্তক্ষেপে দ্বন্দ্বের অবসান টলিউডে, শুটিং শুরু
বেশ কিছুদিন ধরেই কোন্দল চলছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের টলিউডে। মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন পরিচালক-অভিনয়শিল্পী ও টেকনিশিয়ানরা। যা নিয়ে দেনদরবারও কম হয়নি। বন্ধ ছিল শুটিং।
তবে সবার অপেক্ষা ছিল কোন্দল মেটাতে প্রয়োজন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। হলোও তাই। অবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে স্বস্তি ফিরল টলিপাড়ায়। বুধবার (৩১ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে শুটিং। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় ও টেকনিশিয়ানদের মধ্যকার সমস্যা মেটাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ, দেব ও পরিচালক গৌতম ঘোষ। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। এর পরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘দেখা হলো, কথা হলো, ভালো লাগল।’
তবে যাকে ঘিরে এতো বির্তক সেই রাহুল মুখোপাধ্যায় শুটিং শুরু করবেন আরো সাত দিন পর। পাশাপাশি ফেডারেশনের নিয়মকানুন নতুন করে খতিয়ে দেখতে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তিন মাসের মধ্যে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে গঠিত রিভিউ কমিটির কাছে নতুন নিয়মকানুন জমা দিতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বৈঠকে বসেন পরিচালকরা। তারপর বিকেলে টালিগঞ্জের টেকনিশিয়ানস স্টুডিওয় সাংবাদিক বৈঠক করে ফেডারেশন। সন্ধ্যায় সেখানেই পাল্টা বৈঠকে বসে ডিরেক্টরস গিল্ড। পরিচালকদের পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অঞ্জন দত্ত, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, রাজ চক্রবর্তীসহ অনেকেই।
প্রসঙ্গত, সমস্যাটা শুরু হয় বাংলাদেশে একটি সিরিজের শুটিং করা নিয়ে। কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় এসে শুটিং করায় কলকাতার নির্মাতা রাহুল মুখোপাধ্যায়কে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল টলিউড নির্মাতাদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’। পরে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সংগঠনটি। নিষেধাজ্ঞা তোলায় আপত্তি জানায় ফেডারেশন। ফলে ফেডারেশন পক্ষের টেকনিশিয়ানরা রাহুলের উপস্থিতিতে কাজ করতে অস্বীকার করেন।
এসআই/
টলিউড
টলিউডে চলমান স্থবিরতা নিরসনে যা বললেন প্রসেনজিৎসহ অন্যরা
পশ্চিমবঙ্গের টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নেমে এসেছে স্থবিরতা। পরিচালক রাহুল মুখার্জিকে ঘিরে শুরু হওয়া বিতর্ক ধীরে ধীরে বহুদূর বিস্তার লাভ করে বেশ বড় ঘটনায় পরিণত হয়েছে। শুটিংয়ে পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন না রাহুল মুখার্জি, টেকনিশিয়ানদের এই দাবির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন পরিচালক থেকে কলাকুশলীরা। যার রেশ ধরে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ আছে সব ধরণের শুটিং। এতে স্থবির হয়ে গেছে গোটা টলিউড।
শুরুতে কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় এসে শুটিং করা কলকাতার নির্মাতা রাহুল মুখোপাধ্যায়কে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল টালিউড নির্মাতাদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’। পরে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সংগঠনটি।
নিষেধাজ্ঞা তোলায় আপত্তি জানায় ফেডারেশন। ফলে ফেডারেশন পক্ষের টেকনিশিয়ানরা রাহুলের উপস্থিতিতে কাজ করতে অস্বীকার করেন। কয়েক দিন ধরেই এক বিরল ঘটনার সাক্ষী টালিউড ইন্ডাস্ট্রি। ফেডারেশন বনাম পরিচালক ও প্রযোজক দ্বন্দ্বে বন্ধ সব শুটিং।
বিষয়টি সমাধানে সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে এক বৈঠক ডাকা হয় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। সেখানে ছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা, রাজ চক্রবর্তী, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষ, বিরসা দাশগুপ্ত, সুদেষ্ণা রায়, অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী, সুব্রত সেনসহ আরো অনেকে। বৈঠক শেষে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘আমরা একটি পরিবারের মতো। আমরা সারা জীবন টেকনিশিয়ানদের জন্য লড়াই করেছি। এটা মান-সম্মানের লড়াই। একটা পরিবারে অভাব-অভিযোগ থাকবে। তাই বলে পরিবার ভেঙে যায় না। আমরা চাই, কাজটা চলুক।’
তিনি আরো বলেন, ‘একটা ছবির পেছনে প্রচুর মাথা কাজ করে। তাদের সব পরিশ্রম বন্ধ হয়ে গেল। আমি এখনো বুঝতে পারছি না বিরোধিতা কোথায়। আমি এক দিনে অনেকটা খেয়ে পেট খারাপ করব নাকি অল্প অল্প করে খাব, সেটা ভাবতে হবে। আমাদের টেকনিশিয়ানদের দক্ষতা দেশের অন্য জায়গার তুলনায় অনেক ভালো। সুজিত সরকার, সুজয় ঘোষের মতো পরিচালকরা পোস্ট প্রডাকশনের কাজ করেন কলকাতায়। অথচ আমরা নিজেদের অগ্রগতির দিকে নজর দিই না। একজন পরিচালক সেটে এলে আমরা উঠে দাঁড়াই। পরিচালকদের সম্মান দেওয়া আমাদের কাজ। পরিচালকের আসনটা খুব সম্মানের। আমরা সবাই আবেগতাড়িত তবে ঘটনাটা এক দিনের নয়। অনেক দিন ধরে এটা জমতে জমতে এই আকার ধারণ করেছে। প্রত্যেকের যোগ্য সম্মান চাই। আমরা এখানে সদার্থক আলোচনা করছি।’
পরিচালক গৌতম ঘোষ বললেন, ‘একটা অচলাবস্থা চলছে। আমরা সেটা কাটিয়ে উঠতে চাই। আমরা যেন সবাই মিলেমিশে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আন্তর্জাতিক জায়গায় নিয়ে যাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটাই চেয়েছেন। এই অচলাবস্থা থেকে বেরোতে গেলে সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। দুই পক্ষকেই ভাবতে হবে। কেন এই অচলাবস্থা? তা মেটাতে চাই। কোনো কলহ নয়, বরং পারস্পরিক সৌহার্দ্য। আমরা বিভাজনে বিশ্বাস করি না। আমাদের ছোট একটা ইন্ডাস্ট্রি। এখানে কোনো পক্ষ নেই। সবাই আমরা এক।’
রাজ চক্রবর্তী শেষে বলেন, ‘আমি সবার কাছে হাতজোড় করে বলছি আপনারা ভাবুন, আমরা যাতে কাল থেকে কাজ শুরু করতে পারি। আমরা আশা করছি, একটা সদর্থক কিছু বেরোবে।’
এই সংকট কাটিয়ে উঠতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নির্মাতারা।
এসআই/